রাজশাহীর যে স্থানটি পর্যটকদের সবচেয়ে বেশী আকৃষ্ট করবে সেটি নি:সন্দেহে পুঠিয়া। রাজা পিতাম্বর মূলত: পুঠিয়া রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি ষষ্ঠদশ শতাব্দীর শেষভাগে এবং সপ্তদশ শতাব্দীর প্রথম দিকে পুঠিয়ায় রাজধানী স্থাপন করেন। একাধিক সুদৃশ্য ইমারত নির্মাণসহ জলাশয় খনন করেন। রাণী ভূবনময়ী বিশাল একটি জলাশয়ের সম্মুখে ভূবনেশ্বর শিবমন্দির নির্মাণ করেন (১৮২৩-১৮৩০)। এটি পঞ্চরত্ন শিবমন্দির নামেও খ্যাত। বাংলাদেশে বিশালাকারের সুউচ্চ ও বহু গুচ্ছচূড়া বিশিষ্ট শিবমন্দিরগুলোর মধ্যে পুঠিয়ার পঞ্চরত্ন শিবমন্দিরটি স্থাপত্যশৈলীতে শ্রেষ্ঠত্বের দাবী রাখে। এটি বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান একটি স্থাপত্য নির্দশন। পুঠিয়ায় অন্যান্য নিদর্শনগুলোর মধ্যে রয়েছে চৌচালা গোবিন্দমন্দির, পঞ্চরত্ন গোবিন্দমন্দির, দোলমন্দির বা দোলমঞ্চ, দোচালা ছোট আহ্নিকমন্দির, জগদ্বাত্রীমন্দির, রথমন্দির ইত্যাদি। পুঠিয়ার জমিদারগণ অষ্টাদশ ও উনবিংশ শতাব্দীতে এই মন্দিরগুলি নির্মাণ করেছিলেন। বিশালাকারের একই চত্ত্বরে এরূপ মন্দির কমপ্লেক্সে একমাত্র পুঠিয়া ব্যতীত বাংলাদেশের আর কোথাও দেখা যায় না। একমাত্র পশ্চিম বাংলার (ভারত) বাঁকুড়া জেলাধীন বিষ্ণুপুরে এরূপ মন্দির কমপ্লেক্স রয়েছে। পুঠিয়া রাজবাড়ী, মন্দিরসমূহ, দীঘি ও জলাশয়সহ রাজবাড়ীর পুরা চত্ত্বরটি পর্যটকদের বেড়ানোর জন্য একটি আদর্শ ও আকর্ষণীয় স্থান। রাজশাহীর উল্লেখিত ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলো ব্যতীত এই জেলায় বেশ কিছু পুরাতাত্ত্বিক নির্দশন ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। সেন বংশীয় রাজা বিজয় সেন পাল রাজা মদনপাল দেবকে যুদ্ধে হারিয়ে রাজশাহী অঞ্চলে তাঁর প্রতিষ্ঠিত রাজ্যের প্রথম রাজশাহী স্থাপন করেছিলেন, যেটি বিজয়নগর বা বিজয়পুর বলে খ্যাত। প্রাচীন কবি ধোয়ীর “পবনদূত” নামক কাব্যে সেন রাজাদের রাজশাহী বিজয়পুর বলে উল্লেখ রয়েছে। খ্যাতনামা ঐতিহাসিক রমাপ্রসাদ চন্দের মতে বিজয়নগরই হচ্ছে কাব্যের বিজয়পুর। রাজশাহী শহর থেকে ০৮ হতে ১৩ কিলোমিটার পশ্চিমে এবং উত্তর পশ্চিমে দেওপাড়া, কুমারপুর ওবিজয়নগর। ০৪ থেকে ০৫ কিলোমিটার ব্যাপী এলাকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে প্রাচীন ইমারতের ধ্বংশাবশেষ ইট, পাথর এবং মৃৎপাত্রের ভগ্নাংশ। তানোর থানাধীন বিহারৈল, ধানোরা, পাড়িশোঁ রাজশাহী থেকে ৩২ কিলোমিটার উত্তর দিকে। এখানে রয়েছে পাল আমলের প্রাচীন বৌদ্ধ বিহারসহ রাজবাড়ী, দূর্গ, জলাশয় ইত্যাদি। এই এলাকায় ২০১১ সালের এপ্রিল মাসে আরও কিছু প্রাচীন স্থাপনা আবিস্কৃত হয়েছে। রাজশাহী জেলার দুর্গাপুর উপজেলাধীন কিসমতমারিয়া ও রাইপাড়া এবং মোহনপুর উপজেলার টাঙ্গনবরাইল গ্রামের মসজিদগুলোর স্থাপত্যশৈলীতে রয়েছে মুঘল রীতির প্রতিফলন। এগুলো সংস্কার করলে পর্যটকদের আকর্ষণ আরও বেড়ে পাবে। পুলিশ একাডেমী সারদাতে ওলন্দাজ বণিকদের তৈরি দুটি নীলকুঠি রয়েছে। এখানকার পদ্মা পাড়ের প্রাকৃতিক দৃশ্য, সবুজে ঘেরা মনোমুগ্ধকর পরিবেশ আকর্ষণ করার মতো। বিদেশী পর্যটকগণ অনুমতি সাপেক্ষে স্থানটি দেখার সুযোগ পেয়ে থাকেন। রাজশাহীর গোদাগাড়ী থানাধীন বাবু ডাইং এবং চারঘাট থানাধীন সলুয়া লেক নৈ:সর্গিক দৃশ্য উপভোগের জন্য আদর্শ স্থান।
Good post
tnx bro
Congratulations @mainul4! You have completed some achievement on Steemit and have been rewarded with new badge(s) :
Award for the number of posts published
Click on any badge to view your own Board of Honor on SteemitBoard.
For more information about SteemitBoard, click here
If you no longer want to receive notifications, reply to this comment with the word
STOP