আমাদের চিন্তা, আমাদের চেতনা, আমাদের শিক্ষা আমাদের যোগ্যতা ও সম্ভবনাকে বাড়িয়ে তোলে! যদিও বর্তমানে কৌতুহল হারিয়ে আমরা এমন একটা পর্যায়ে অবস্থান করছি যেখান থেকে আমরা শুধুমাত্র বিনোদনের জন্য মূল্যবান সময়কে অপচয় করছি অহেতুক আড্ডাবাজিতে কিংবা ইন্টারনেটে! স্বপ্নটাকে স্বপ্ন দেখার মত করে দেখছি ঠিক কিন্তু স্বপ্নের সিড়ি বেয়ে উপরে উঠার জন্য যা করা দরকার তার জন্য নেই কোন আকাংখা কিংবা কোন ধরনের কোন প্রচেষ্টাও! মাঝে মাঝে তো এটা ভেবেও অবাক হতে হয় যে, এত বড় বড় এক একটা স্বপ্ন নিয়ে কিভাবে অলস সময় পার করতে মানুষ!
বর্তমান সময়ের পরিপেক্ষিতে আমরা আসলেই খুব ব্যস্ত! সত্যি বলতে কি জানেন সবটা ব্যস্ততার অজুহাত! একটা মানুষের কাছে কোন একটি বিষয়ে কথা বলার মত দুই মিনিট সময় নেই এটা আসলে সত্য নয়। সবচেয়ে বড় লক্ষনীয় ব্যাপার যেটা, তা হলো আপনি তার প্রয়োরিটি লিষ্টে জায়গা করতে পারছেন কি না! আপনি কোন কিছু অর্জন করতে চান কিন্তু সেটার গুরুত্ব যখন বুঝেন না তখন কি ব্যস্ততার অজুহাত দেওয়াটা শ্রেষ্ঠ নয়! ও হ্যা জানার কৌতুহল তো সেই কবে হারিয়েছেন। যখন আপনি নতুন কিছু জানার জন্য চেষ্টা করেছেন তখন আপনার চারপাশ থেকে বলা হয়েছে ওতুমি বুঝবে না বাবু! বড় হও সময় হলে ঠিকই বুঝবে! বড় হয়েছেন সত্যি কিন্তু জানার আগ্রহ হারিয়েছেন সেই কবে!
প্রিয় পাঠক লেখাটা পড়ার আগ্রহ হারাবেন না! কারন লেখাটার বাস্তবতা শুরু পরের লাইন লাইন থেকে! স্বপ্ন কোটি কোটি টাকার ব্যবসা করা! পুঁজি নেই হাতে! যা আছে তা যৎসামান্য। ব্যবসায়ের আইডিয়াটা বাস্তবায়নের জন্য যে পরিমান পুঁজির দরকার তার হয়ত ছিটে ফোটাও নেই! আর ব্যাংক লোন? সেটাও ব্যাংক যোগ্য লোককে ছাড়া দেয়না! বিশেষ করে যারা মাথায় আইডিয়া নিয়ে ঘোরে তাদের জন্য তো নয়ই। এমনকি যাদের ব্যবসা ছোট তাদের জন্যও নয়। ছোট ব্যবসায়ীদের জন্য অবশ্য একটা বিশেষ ফান্ডিং সহজে মিলে যা দেউলিয়া হওয়ার জন্য খুব সহজ ফাঁদ। চড়া সুদে এনজিও ফান্ডিং, চোখে আঙ্গুল দিয়ে ডাকাতি সুদে দৈনিক কিস্তিতে পরিশোধ যোগ্য ফান্ডিং, সুদের বিনিময়ে সর্বহারা ব্যাক্তিগত ফান্ডিং! তাহলে কি কোটি কোটি টাকার ব্যবসার স্বপ্ন ৮০০০ টাকার চাকরীর কাছে বিক্রি করে দিবেন!
ধরুন আপনার হাতে আছে ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা! আর স্বপ্ন আছে গাড়ীর শোরুম কিংবা এক্সপোর্ট ইমপোর্ট এর ব্যবসা করা! নিশ্চয় এতক্ষনে ভেবে ফেলেছেন জীবনেও সম্ভব নয়। হ্যা পাঠক আমিও বলবো সম্ভব নয়। যতক্ষণ পর্যন্ত না এই টাকা আপনি বিনিয়োগ না করে নিজের কাছে রেখে দিচ্ছেন ততক্ষণ পর্যন্ত তো নয়ই। তাহলে উপায়! আপনার চিন্তাটাকে স্পষ্ট করুন। আপনার এই সামান্য টাকায় কি করা সম্ভব সেটা নিয়ে ভাবুন। আজ যদি এই অল্প টাকায় আপনার জন্য বাদাম, ঝালমুড়ি কিংবা ফুচকা বিক্রির ব্যবসা করতে হয় তবে আপনাকেও তাই করতে হবে। আর যাই হোক আপনিও আমার সাথে একমত হবেন যে ৮০০০ টাকা বেতনের চাকুরীজীবির থেকে একজন বাদাম কিংবা ফুচকা বিক্রেতার আয় কোন অংশে কম নয়। বেশতো স্বপ্নের পথে আপনি একধাপ এগিয়ে এবার!
আজীবনের জন্য আপনাকে বাদাম বিক্রেতা হওয়ার কথা বলছি না! হাতের পুঁজিটা বাড়ার সাথে সাথে আপনার চোখের স্বপ্নটাও স্পষ্ট হবে। যেমন পুঁজি আসতে থাকবে হাতে তেমন ব্যবসাও বাড়তে থাকবে! সাপের খোলস বদলে নেওয়ার মত শুধু একটু নিজেকে বদলে নিতে হবে সময়ের সাথে। আসতে থাকবে স্বপ্ন জয়ের পথে নতুন নতুন সফলতা! এক সময় চুরান্ত লক্ষে পৌছে যাবেন আপনি! তৈরী করে নিতে হবে নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ! মোকাবেলা করে যেতে হবে কিছু মানুষের কটু কথা! আর হাসতে হাসতে মনে মনে বলবেন ওরে তোরা কেন এতটা বোকা! সফলতার উদাহরন দিতে ইচ্ছে করে না! কারন আপনাদের যাদের দেখি তারা নিজেরাই এক একটা জ্বলন্ত উদাহরন হবেন! মহল্লার চায়ের দোকানে আড্ডায় বসে বিস্কুট ডুবিয়ে যে চা-টা আপনি খাবেন সেটা যদি আপনার কোম্পানীর হয় তবে মন্দ কি! ফেসবুকের টাইমলাইনে পত্রিকার নিউজ ফিডে যে সফলতার গল্পটা পড়ছেন সেটা কেন আপনার নয়!
সময় ও পরিপেক্ষিত অনুযায়ী কেন চিন্তা করতে পারছেন না! কেন আপনার পাশের সফল ব্যাক্তিটাকে দেখছেন না, সারাটা দিন সে কি করে? ওহ কি করে দেখবেন আপনার তো আবার ঘুম ভাঙে সেই দুপুরে! ততক্ষণে সফল ব্যাক্তিটা দিনের অর্ধেক কাজ গুছিয়ে দুপুরের লাঞ্চটা সেরে নিয়ে কিছুটা বিশ্রামে! আপনার চিন্তা, আপনার চেতনা, আপনার দৃঢ়তা, আপনার সাহসীকতা, আপনার বুদ্ধিমত্তা, আপনার কাজের প্রতি ভালোবাসাই আপনাকে আগামীতে সফলদের সারিতে নিয়ে দাঁড় করাবে। সিদ্ধান্তটা আপনার ঘুরে দাঁড়াবার! পাঠক ব্যাংকের ম্যানেজার আপনাকে ফোন করছে আমি আজকে বরং আসি! শুভকামনা সকলের জন্য!