সংযুক্ত আরব আমিরাতে চলছে অনূর্ধ্ব ১৯ এশিয়া কাপের ১০ তম আসর। ১৯৮৯ সালে সর্বপ্রথম অনুষ্ঠিত হয় অনূর্ধ্ব ১৯ দলের আন্তর্জাতিক এশিয়া কাপ আসর। ১৯৮৯ সাল থেকে এখন পর্যন্ত মোট নয়টি আসর সম্পূর্ণ হয়েছে। আর এর মধ্যে সর্বোচ্চ ৮ টি আসরেই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভারত। আর এক বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে আফগানিস্তান ও পাকিস্তান। এইবার ২০২৩ আসরে দ্বিতীয় বারের মত ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব উনিশ দল। অনূর্ধ্ব ১৯ এশিয়া কাপের সব গুলো আসরেই দাপট দেখিয়েছে ভারত। তবে এবার এশিয়া কাপে সেমি ফাইনালে বাংলাদেশের কাছে হেরে এই আসর থেকে বিদায় নিতে হয়েছে তাদের। আর ভারতকে হারিয়েই এশিয়া কাপে নিজেদের ফাইনালে ওঠা নিশ্চিত করে নিয়েছে বাংলাদেশ। ঐদিকে পাকিস্তানকে হারিয়ে এশিয়া কাপের ফাইনালে খেলা নিশ্চিত করে নিয়েছে ইউনাইটেড আরব আমিরাত।
Bangladesh Cricket : The Tigers
গতকালকে ICC Academy Ground, Dubai স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়েছিল ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যকার অনূর্ধ্ব উনিশ এশিয়া কাপের সেমিফাইনালে ম্যাচ। আর এই ম্যাচে ভারতকে ৪ উইকেটে হারিয়েই এশিয়া কাপের ফাইনালে এখন বাংলাদেশ দল। এশিয়া কাপের সর্বোচ্চ বিজয়ী দল ভারতকে হারিয়ে ফাইনালে ওঠা বাংলাদেশের অনূর্ধ্ব উনিশ দলের জন্য অনেক বড় একটা অর্জন। যেখানে বাংলাদেশ সর্বপ্রথম ও শেষ বার ফাইনাল খেলার সুযোগ হয়েছিল ২০১৯ সালের এশিয়া কাপ আসরে, কিন্তু সেখানে ভারতের কাছে হেরে এশিয়া কাপ বিজয়ের স্বপ্ন অসম্পূর্ণ হয়ে ছিলো। আর এই বছর ২০২৩ আসরে ভারতকে হারিয়েই ফাইনালে এখন বাংলাদেশ। নতুন করে আবার এশিয়া কাপ বিজয়ের স্বপ্ন দেখছে পুরো দেশবাসী।
এই ম্যাচে বাংলাদেশ দলের মূল একাদশে খেলেছেন আশিকুর রহমান শিবলী , জিশান আলম, চৌধুরী মোঃ রিজওয়ান, আরিফুল ইসলাম, মোহাম্মদ শিহাব জেমস, আহরার আমিন, পারভেজ রহমান জীবন, মাহফুজুর রহমান রাবি , রোহানাত দৌল্লা বরসন, মোঃ ইকবাল হোসেন ইমন, মারুফ মৃধা। আর ভারত দলের মূল একাদশে খেলেছেন ।আদর্শ সিং, আরশিন কুলকার্নি, উদয় সাহারান, প্রিয়াংশু মোলিয়া, মুশির খান, শচীন ধস, আরেভেলি অবনীশ, মুরুগান অভিষেক, সৌমি পান্ডে, রাজ লিম্বানি, নমন তিওয়ারি।
গতকালকের ম্যাচে শুরুতে টসে জিতে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ। শুরুতে ভারতকে বোলিং দিলে আটকাতে পারলে ম্যাচটা আরো সহজ হয়ে যাবে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের জন্য। সেটাই করে দেখিয়েছে বাংলাদেশী বোলাররা। শুরুতে ভারত ব্যাটিং করতে নেমে বাংলাদেশের বোলিং দাপটে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে ভারত। প্রথম ওভারেই দলের তিন রানের সময় প্রথম উইকেট হারায় ভারত। ২ বলে ২ রান করে প্রথম ওভারেই প্যাভিলিয়নে ফিরে যান আদর্শ সিং। আর দলের ৬১ রানের সময় ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলে ভীষণ চাপে পড়ে যায় তারা। কিন্তু এরপর মুশির খান এর ৬২ বলে ফিফটি রান ও মুরুগান অভিষেক এর ৭৩ বলে ৬২ রান দলের রানরেট বাড়াতে সাহায্য করে। সবশেষে নির্ধারিত ওভারের মধ্যে ৭ ওভার ২ বল হাতে থাকতেই ১৮৮ রানে অল আউট হয়ে যায় ভারত।
আর বাংলদেশের হয়ে সর্বোচ্চ উইকেট তুলে নিয়েছে মারুফ মৃধা। তিনি ১০ ওভার বল করে ৪১ রান খরচ করে তুলে নেয় ৪ উইকেট। আর ৭ ওভারে ৪০ রান খরচ করে দুই উইকেট তুলে নেয় রোহানাত দৌল্লা বরসন। ৮ ওভার ৪ বল করে ২৯ রান খরচ করে দুই উইকেট তুলে নেয় পারভেজ রহমান জীবন।
Bangladesh Cricket: The Tigers
১৮৯ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ওভারেই দলের দুই রানের সময় প্রথম উইকেটের পতন ঘটে বাংলাদেশ দলের। শুরুতে প্রথম বলেই শূন্য রানে আউট হয়ে যায় জিশান আলম। এরপর ১০ ওভারের মধ্যে ৩৪ রানে ৩ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। তবে এরপর আইফুল ইসলাম ও আহরার আমিন দুইজনের ১৩৮ রানের পার্টনারশিপ এ দলের রানের সংগ্রহ গিয়ে দাড়ায় ১৭২ রান। আর এতক্ষণে বাংলাদেশ তাদের জয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গিয়েছে। তাদের দুইজনের এই দুর্দান্ত পার্টনারশিপ বাংলাদেশ দলের জয়ের জন্য যথেষ্ট ছিল। ৯০ বলে ৯৪ রান করে আউট হন আরিফুল ইসলাম। একটুর জন্য সেঞ্চুরির দেখা মিললো না তার। আর এইদিকে ১০১ বলে ৪৪ রান করে আউট হন আহরার আমিন। সবশেষে ৪২ ওভার ৫ বল খেলে ৬ উইকেট হারিয়ে জয় নিশ্চিত করে নেয় বাংলাদেশ।