চলতি বাংলাদেশ বনাম শ্রীলঙ্কার মধ্যকার তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ জয় করে নিলো বাংলাদেশ দল। গতকালকে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ বনাম শ্রীলঙ্কার মধ্যকার তৃতীয় নম্বর ম্যাচ। শ্রীলংকার দেওয়া ২৩৬ রানের টার্গেট নির্দিষ্ট ওভারের ৯ ওভার ৪ বল হাতে থাকতেই টার্গেট রান অতিক্রম করে জয় তুলে নেয় টাইগাররা। সিরিজের প্রথম ম্যাচে ৬ উইকেটের জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ এরপর দ্বিতীয় ম্যাচে শ্রীলংকার কাছে ৩ উইকেটে পরাজিত হয়ে ১-১ ব্যাবধানে সিরিজ সমতায় আসে। তাই তৃতীয় নম্বর ম্যাচ টা ছিলো দুই দলের জন্যই অনেক গুরত্বপূর্ণ। যে দল জিততে পারবে তার হাতেই চলে যাবে ওয়ানডে সিরিজ ট্রফি। টি টোয়েন্টি সিরিজ হারের পর এইটাই ছিলো ওয়ানডে সিরিজ জয়ের অন্যতম সুযোগ। আর বাংলাদেশ সেই সুযোগটাই কাজে লাগিয়ে নিয়েছে।
বাংলাদেশ বনাম শ্রীলঙ্কার মধ্যকার ম্যাচ মানেই এখন উত্তেজনাকর পরিস্থিতির ম্যাচ। আর বাংলাদেশের বিপক্ষে শ্রীলংকার ম্যাচ উত্তেজনার কারণটা শুরু হয়েছে নাগিন ড্যান্স এর মধ্য দিয়ে। আর এরপর এখন বিশ্বকাপে ম্যাথিউসের টাইম আউট হওয়ার পর থেকে আরো বেড়ে গিয়েছে এই উত্তেজনা। টাইম আউট হওয়ার শোক টা এখনো কাটিয়ে উঠতে পারে নি তারা। সেটাই এখন প্রকাশ পেয়েছে টি টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের পর লংকানদের টাইম আউট সেলিব্রেশন দিয়ে। আর সেটাও সুদে আসলে মিটিয়ে নিয়েছে বাংলাদেশি খেলোয়াড়রা। ওয়ানডে সিরিজ জয়ের পর সেটার প্রতিশোধ তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ ও।
এই ম্যাচে তিনজন খেলোয়াড়ের পরিবর্তন আনে বাংলাদেশ। লিটন দাস, তাইজুল ইসলাম ও তানজিম সাকিবের পরিবর্তে খেলেছেন এনামুল হক বিজয়, রিশাদ হোসাইন ও মোস্তাফিজ। বাংলাদেশ দলের হয়ে মূল একাদশে খেলছেন এনামুল হক বিজয়, সৌম্য সরকার, নাজমুল হাসান শান্ত, তাওহীদ হৃদয়, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, মেহেদী হাসান মিরাজ, রিশাদ হোসাইন , তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম, মোস্তাফিজুর রহমান। আর শ্রীলংকা দলের মূল একাদশে খেলেছেন পথুম নিসাঙ্কা, আবিষ্কা ফার্নান্দো, কুসল মেন্ডিস, সাদিরা সামারাবিক্রমা, চারিথ আসালাঙ্কা, জানিথ লিয়ানাগে, মহেশ থেকশান, প্রমোদ মধুশান, দিলশান মাদুশঙ্কা, লাহিরু কুমার।
শুরুতে টসে জিতে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেয় লংকানরা। আর ব্যাটিং করতে নেমে শুরুটা ভালো করতে পারে নি লংকান ব্যাটারা। দলের ১ রানের সময়ই প্রথম উইকেট হারায় লংকানরা। এরপর ও ক্রমাগত উইকেট পড়তে থাকে তাদের। দলের কেউই ব্যাট হাতে তেমন একটা সুবিধা করতে পারে নি। দলের এই দুঃসময়ে শক্ত হাতে ব্যাট ধরে দলকে এগিয়ে নিয়ে যায় জানিথ লিয়ানাগে। দলের এই বিপর্যয়ের সময়ও ১০১ রানের দুর্দান্ত একটা ইনিংস খেলে দলীয় রান গিয়ে দাড়ায় ২৩৫ রান। এটাই ছিলো বাংলাদেশ দলের জয়ের অন্যতম সুযোগ। আর লংকানদের দেওয়া এই রান খুব সুন্দর করে খেলে বের করে নিয়ে আসে তামিম, মুশফিক আর রিশাদ রা।
লংকানদের দেওয়া ২৩৬ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালোই করেছিল বাংলাদেশ। ওপেনিংয়ে এনামুল হক ও তানজিদ হাসান তামিম নেমে ৫০ রানের জুটি করে আউট হন এনামুল হক। ২২ বলে ১২ রান করে মাঠ ছাড়েন তিনি। তবে আর এক ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম দলকে ভালো একটা ইনিংস উপহার দেয়। ৮১ বলে ৮৪ রান করেন তানজিদ হাসান তামিম। তবে এরপরও ক্রমান্বয়ে উইকেটের পতন ঘটতে থাকে টাইগারদের। দল তখন উইকেট বিপর্যয়ের দিকে যাচ্ছিল। আর সেই তখনি মুশফিকুর রহিম ও রিশাদ হোসাইন এর ঝড়ো ব্যাটিংয়ে দলকে জয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দেয়। রিশাদ হোসাইন এর ১৮ বলে ৪৮ রানের ইনিংস ও মুশফিকুর রহিমের ৩৬ বলে ৩৭ রানের ইনিংস দলের জয়কে আরো সহজ করে দেয়।