“অক্ষম,দুষ্টু,ন্যাকা,দূর্বল শিশুর “মা” ডাক ”
-এস এম কামাল হোসেন।
“মা” কথাটি অতি মধুর।শুধু মধু্রই না “মা” কথাটির মাঝে আছে সুখ শান্তির অনাবিল এক সমুধুর সুধা।শিশু থেকে কৈশোর পেরিয়ে এমনকি যুবক ও বৃদ্ধ বয়সেও “মা” শব্দ ও মায়ের ভিতর সু মধুর প্রশান্তির আবেশ মোটেই কমে যায় না।“মা” বিধাতার এক অপূর্ব দান, অমূল্য সম্পদ।
পাঠক ধৈর্য্য হারাবেন না, আমি কিন্তু আজকে “মা”রচনা লিখতে বসি নাই।আমি “মা” তুল্য আমাদের “মুক্তি যুদ্ধ”নিয়ে রুপক কিংবা উপমা স্বরুপ দু’ একটি কথা বলার জন্য আপনাদেরকে আমার এই বিরক্তি করা।
১৯৭১ এ আমাদের মহান “মুক্তিযুদ্ধ” সংঘঠিত হয়। “মুক্তিযুদ্ধ” আমাদের জাতীয় জীবনে এক বিরাট সাফল্য গাঁথা অধ্যায়।হুটহাট করে আমাদের এ যুদ্ধ হয়ে যায়নি।দীর্ঘ সংগ্রাম ও সময়ের চুড়ান্ত পরিক্রমায় সেটা ১৯৭১ এ এসে তা অবিশ্যাম্ভাবী হয়ে যায়। সাড়ে সাত কোটি বাঙালী হাতে হাত, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এ যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। যার ফলশ্রুতিতেই আসে আমাদের ঐতিহাসিক এ চুড়ান্ত বিজয়।এ বিজয়ের দাবীদার তখনকার সাড়ে সাত কোটি বাঙালীর হাত হয়ে আজকে ষোলো কিংবা আঠারো কোটি বাংলাদেশীর।মুক্তি যুদ্ধ আমাদের প্রাণের স্পন্দন,আমাদের অস্তিত্বের চাবিকাঠী।মুক্তি যুদ্ধ আপমর জনতার,স্বাধীন চেতার মানুষের। মুক্তি যুদ্ধ কোন ব্যর্থ,দূর্বল,দূরভিসন্ধি ব্যক্তি গোষ্ঠীর রক্ষা কবচ নয়।বরং
মায়ের চেতনা, মায়ের প্রতি ভালোবাসা মানে কোন দুষ্টু ছেলের ভাইয়ের সাথে অপকর্ম করে ভাইয়ের হাত থেকে শাস্তিভোগের বিপরীতে“মা” “মা” বলে চিকৎার করে দৌঁড়ে গিয়ে মায়ের আচলে মাথা গুজানো নয়।কিংবা বন্ধুদের সাথে,সমাজের সাথে মিশতে-মিলতে অক্ষম ছেলের বার বার মায়ের কাছে সাহায্য প্রার্থনা নয়। বরং এমন ছেলে মায়ের জন্য বোঝাই বটে।
মায়ের দুষ্টু, অক্ষম, অপদার্থ,ব্যর্থ,অসামাজিক,অন্যায়কারী ছেলে যতই মাকে “মা” “মা” চিৎকার করে ডাকুক, মায়ের প্রতি ভালোবাসা, শ্রদ্বা ভক্তি ও করুণা প্রার্থনা করুক কেন মা কিন্তু তাতে বড্ড লজ্জাই পান বেশিরভাগ সময়।পক্ষান্তরে সমাজে যোগ্য,সৎ,সক্ষম, পারঙ্গম সন্তান যে কিনা মায়ের আচল ছাড়াই বন্ধুদের সাথে, ভাইদের খেলতে,মিশতে,চলতে পারে তাকেই তার মা তার হৃদয়ের স্নেহ সিঞ্চন দিয়ে ভালোবাসেন। সেই সাথে সে নিত্য নতুন বন্ধুদের ভালোবাসায় সিক্ত হয় এবং বন্ধুত্বের উৎকর্ষতা লাভ করে।আর দেশ, সমাজ রাষ্ট্র এমন মায়ের এমন সন্তানই কামনা করে।
“মা” সম আমাদের “মুক্তিযুদ্ধ” এর প্রধান লক্ষ্যে ও উদ্ধেশ্য গণ মানুষের মুক্তি, জনগণের শাসন,গণতন্ত্র, সুশাসন, ন্যায়বিচার, ন্যায়ভিত্তিক সমাজ নিশ্চিতকরণ ইত্যাদি ইত্যাদি ।
সেগুলোকে তো আজ শাসকগোষ্ঠী গলাটিপে হত্যা করেছেই সেই সাথে খুন, গুম,পাহাড়সম দূর্নীতি,লুটপাট যোগ হয়েছে গণ মানুষের কাঁধে।এরা মুক্তিকামী মুক্তিযোদ্ধার মায়ের লাখো সন্তানকে খুন,গুম, হামলা-মামলা দিয়ে, স্বাধীন গণতান্ত্রিক অধিকারের রাস্তায় বেড়িকেট দিয়ে,পেটোয়া দিয়ে পিটিয়ে আবার মুক্তিযুদ্ধ মায়ের চেতনার আচঁলে মাথা গুজে মুখে মুক্তিযুদ্ধ মুক্তিযুদ্ধ বলে লোক দেখানো মুক্তিযুদ্ধের তবজি টিপছে।
মুক্তি যুদ্ধ মানে লুটেরা,লুটপাটকারী, গণতন্ত্রের হত্যাকারী, খুন,গুম, রাষ্ট্রীয় সব গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ যেমন; সংসদ, বিচার বিভাগ, প্রশাসন কে ধ্বংসকারীর আশ্রয়স্থল নয়। এরাই যতই ব্যর্থ, কুলাঙ্গার সন্তানের মত মা মা (মুক্তিযুদ্ধ)বলে চিৎকার করুক না কেন তাতে তাদের ব্যর্থতা আর অক্ষমতাই ইঙ্গিত বহন করছে।তারা তাদের অক্ষমতাকে পুরোপুরি জানে বলেই লুকিয়ে লুকিয়ে একটি নিরাপদ আচঁলে লুকিয়ে নির্বাচনী খেলছে এবং ভবিষ্যতেও ওভাবেই খেলতে চায়। এজন্য তারা শুধু মুক্তিযুদ্ধ নয় তাদের হাতের সমস্ত অস্ত্রকে ব্যবহার করেছে।ব্যবহার করছে, নষ্ট করছে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সব অঙ্গ প্রত্যঙ্গকে।সেক্ষেত্রে তারা ভুল করেনি কাগজের আইনের পৃষ্ঠা পরিবর্তন করতেও। কিন্তু আমাদের সমাজে বাস্তবে দেখা যায় মায়ের ঐ দুষ্টু,ন্যাকা, কুলাঙ্গার আঁচলের শিশু মায়ের আঁচল ছেড়ে সত্যিকারে মায়ের সন্তান রুপে তার সমস্ত ভুলের প্রায়চিত্ত করে ভাই-বন্ধুদের কাছে নাকে খত দিয়ে জনতার কাতারে যেদিন এসে দাঁড়ায় সেদিন সে সত্যিই খেলাধূলা ও বন্ধুত্বের স্বাধ উপভোগ করে,নচেৎ নয়।
শাসক গোষ্ঠী এটা যতই তা তাড়াতাড়ি উপলব্ধি করবে ততই তার ও মুক্তিকামী জনগণের জন্য মঙ্গলজনক হবে।
তারিখঃ ৮ ডিসেম্বর,২০১৭।
mother is my heart