অনেকেই বলে CSE এর জব ফিল্ড স্যাচুরেটেড। CSE এর কোন জব নাই, ব্লা ব্লা। এসব ভুল ধারনা। বরং দিন দিন এই সেক্টরের জব ফিল্ড ভাল জায়গায় যাচ্ছে, তবে সেটা জাস্ট দক্ষ লোকদের জন্য। কিন্তু এই সেক্টরে দক্ষ জনবলের সংখ্যা নিতান্তই অনেক কম। তুমি তোমার ক্লাসের দিকে তাকাও। তোমার ক্লাসের কয়জন ফ্রেন্ড ভাল প্রোগ্রামিং পারে? ভার্সিটি শেষ করে কয়জন স্টুডেন্ট যেকোন একটা সাইডে অনেক দক্ষ হতে পারছে?? হয়তো মাত্র দুই একজন। শুধু তোমার ভার্সিটি না, সব জায়গায় সেইম অবস্থা। ফলে বেশিরভাগই মনে হতে থাকে জব ফিল্ড ভাল না। কিন্তু এই সেক্টরটাই ইন ফিউচারে দক্ষ লোকদের জন্য সপ্নের ক্যারিয়ারে পরিনত হবে। গত কয়েক বছরে বাংলাদেশ আই টি সেক্টরে খুব ভাল ডেভেলপ করেছে এবং করেই যাচ্ছে।
বর্তমান যুগে দক্ষতা ছাড়া ভাল কোথাও যাওয়া খুব বেশি টাফ। তাই যেকোন একটি সাইডে তোমাকে মোটামুটি দক্ষ হতে হবে। CSE গ্রাজুয়েটদেরও বেলায়ও এর ব্যাতিক্রম নয়। হয় তোমার সিজিপিএ অনেক ভাল থাকতে হবে যাতে টিচিং প্রফেশনে যেতে পার, অথবা নেটওয়ার্কিং সাইডে এক্সপার্ট হতে হবে, না হয় প্রোগ্রামিং এ। এরকম হয়তো অনেক সেক্টর আছে যেগুলো সব আমার জানা নেই। তোমরা যারা CSE পড়ছো আমার থেকেও ভাল জানবা। আবার প্রোগামিং এর মধ্যেও রয়েছে হরেক রকম সাইড।
একজন ভাল প্রোগ্রামার হওয়ার জন্য যে সব ল্যাংগুয়েজে ভাল হতে হবে এমন কোন কথা নাই। কিন্তু তোমাকে একটি কিংবা দুটি ল্যাংগুয়েজে এক্সপার্ট হতে হবে। হয় তোমাকে ভাল এনড্রয়েড এপস ডেভেলপার হতে হবে, না হয় ভাল ওয়েব ডেভেলপার, অথবা ভাল কনটেস্ট প্রোগ্রামার। আর এসব দক্ষতা বাড়ানোর জন্য ভার্সিটির থার্ড থেকে ফোর্থ সেমিস্টার থেকে লেগে পড়তে হবে। ঠিক ওই মুহুর্ত থেকে সময় অপচয় করা বন্ধ করে দিতে হবে। আরও আগে থেকে লেগে পড়তে পারলে আরও ভাল। কিন্তু আমাদের বেশিরভাগ CSE গ্রাজুয়েটরা ভার্সিটি শেষ করে এনড্রয়েড কোচিং, পিএইচপি কোচিং, এই কোর্স, ওই কোর্সের পিছনে ছুটা শুরু করে। যেই বয়সে প্রোগ্রামিং এ মোটামুটি বস হয়ে যাওয়ার কথা সেই বয়সে প্রোগ্রামিংয়ে হাতেখড়ি। কবেইবা প্রোগ্রামিং শিখবে কবেইবা এক্সপার্ট প্রোগ্রামার হবে।
আমি কয়েকজন প্রোগ্রামারকে আড্ডার ছলে এসব কথা জিজ্ঞেস করেছিলাম। ওদেরও সেইম বক্তব্য। ওদের মতে ভাল প্রোগ্রামার যদি হতে চায় কেউ সে যেন থার্ড কিংবা ফোর্থ সেমিস্টার থেকে যেকোন একটা কিংবা দুটো ল্যাংগুয়েজ চয়েস করে লেগে পড়ে। ওরা ভার্সিটি লাইফে সেটাই করেছিল। আর প্রোগ্রামিং এ ভাল করার জন্য দরকার ধৈর্য এবং লেগে থাকা। এক একটা প্রবলেম সলভের জন্য ৭-৮ ঘন্টা ধরেও লেগে থাকতে হয়েছিল ওদের। এভাবেই ওরা হয়েছিল ক্যাম্পাস সেরা প্রোগ্রামার এবং ভার্সিটি থেকেই পাশ করে মোটা অংকের স্যালারিতে ওদের জব হয়েছিল।
আর এখন প্রোগ্রামিং শিখার জন্য ইউটিউবে বাংলাতে অসংখ্য চ্যানেল আছে, টিউটোরিয়াল আছে। ইচ্ছে শক্তি, সময় এবং লেগে থাকলেই সব কিছুই সম্ভব।
আমার পোস্টটি পড়েই এখন অনেকের মনে প্রশ্ন, প্রোগ্রামিংতো অনেক কঠিন। অন্য কোন সাইডে ভাল করা সহজ হবে :-D। তাদের জন্য উত্তর হচ্ছে কোন সাইডই সহজ না যদি টাইম না দাও এবং ইচ্ছে না থাকে। আর যে সেক্টর যত কঠিন সে সেক্টরের ডিমান্ডও তত বেশি। তুমি কোনটাতে কমফোর্ট ফিল কর সেটাই আসল বিষয়। আর এখানে শেখার আগ্রহটাই প্রধান বিষয়। এক কথায় যেকোন সেক্টরে ভাল করার জন্য তোমাকে কাজ করে মজা পেতে হবে, কমফোর্ট ফিল করতে হবে। তবে CSE এর স্টুডেন্টদের ভাল ক্যারিয়ারের জন্য প্রোগ্রামিং এর কোন বিকল্প অপশন নেই। আশেপাশে খোজ নিয়ে দেখ এক একজন ভাল প্রোগ্রামার কত হাই স্যালারিতে জব করছে।
আমি CSE গ্রাজুয়েট না। কিন্ত খুব কাছ থেকে কয়েকজন প্রোগ্রামারকে দেখেছি। রুম মেট হওয়ার সুবাদে শুনেছিলাম ওদের পরিশ্রম আর সফলতার পেছনের গল্প। সেখান থেকেই আমার এই লিখা। এখানে অনেক ভাল ভাল প্রোগ্রামার এবং CSE স্টুডেন্টরা আছেন, আশাকরি আপনারা গ্রুপে পোস্ট করে জুনিয়রদের ক্যারিয়ার গঠনে অবদান রাখবেন। আপনাদের সঠিক গাইডালাইন একজন জুনিয়রের সপ্নের পথে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে।
- Moazzem Hossain Arafat