আতংক !!!

in #horror6 years ago (edited)

আজ যে ঘটনাটা আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো এটা এমন একটা ঘটনা যা পুরা গ্রামবাসি কে আতংকিত করে তুলেছিলো। যশোর জেলার মনিরামপুর থানার দূর্গাপুর গ্রামে এই ঘটনাটি ঘটেছিল। ২০১২ সালের দিকে আমার বেস্ট ফ্রেন্ডের চাচাতো বোন (সংগত কারনে বোনের নামটা বলছিনা লেখার সুবিধার্থে রুনি ছদ্দ নাম ব্যবহার করছি) এর সাথে এই ঘটনাটা ঘটেছিল আর দু:খের বিষয় রুনি মারা যায়। রুনি নতুন কলেজে ভর্তি হয়েছিল একটা সময় রুনি একই গ্রামের তার থেকে ২ বছরের বড় একটি ছেলের সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে যায়। এটা রুনির পরিবারের লোক জন সহ আমি ও আমার ফ্রেন্ড জানতে পারি। এক পর্যায়ে বাসা থেকে রুনির উপর প্রচুর চাপ সৃষ্টি হয়। রুনির মা প্রায় রুনিকে বকাঝকা করতো কিন্তুু নতুন প্রেম কি আর কারো বাঁধা মানে। রুনিকে অনেকে বোঝাতো কিন্তুু রুনি প্রচন্ড জেদি টাইপের মেয়ে কারো কথা শুনতো না। আর প্রায় বাসায় এই নিয়ে ঝামেলা হতো। ঘটনার দিন রুনি কলেজ থেকে ফিরে দুপুরে মা আর ছোট ভাই এর সাথে লান্চ করলো ওর বাবা ওইদিন বাসায় ছিলনা। রুনিকে ওই দিন বেশ হাসিখুশি লাগছিল। বিকালে ওর মাকে বললো মা আমি একটু বাজারে যাব একটা বই কিনতে হবে আমাকে কিছু টাকা দাও। আন্টি রুনিকে কিছুনা বলে টাকাটা দিলেন আর বললেন দ্রুত আসিস। রুনি টাকাটা নিল বাজারে গেল বই কিনলো আর ফেরার সময় সুতা পট্টি থেকে দড়ি কিনলো। দোকানদার একটু সন্দেহ করছিল বললো মা দড়ি কি করবা। রুনি নাকি হেসে উত্তর দিয়েছিল কাকু গলায় দড়ি দিবো। দোকানদার ও হাসিমুখে টাকাটা নিয়ে রুনির কাছে দড়ি বিক্রি করেছিলো আর বললো মা তুমি রাগকরো না কম বয়সি ছেলে মেয়েদের কাছে দড়ি বিক্রি করতে ভয় লাগে রুনি ও হেসে বললো ভয় নেই কাকু আমি এতো জলদি মরতে চাইনা। এরপর রুনি বাসায় ফিরে আসলো রুনি যে বাজার থেকে দড়ি কিনেছে এটা কেউ বুঝতেই পারিনি ও ভ্যানিটি ব্যাগের ভেতর লুকিয়ে দড়ি আনছিলো। প্রতিদিনের মত ওইদিন সন্ধার পর ও রুমে বই পড়ছিলো আর ও জানতো ইসার নামাজের পর ওর মা ওর ছোট ভাইকে নিয়ে পাশের বাড়ি যাবে। ও সুযোগের অপেক্ষ্যা করছিলো কখন ওর মা বের হবে। আন্টি যাওয়ার আগে রুনির রুমে এসে বললেন তুই পড় আমি শুভোকে নিয়ে তোর কাকিদের বাসায় যাচ্ছি এসে খেতে দেব। ওই ঘরে তোর দাদি আছে ওই খানে যেয়ে পড় এই বলে আন্টি চলেগেলেন। রুনি গেট টা লাগিয়ে দাদির রুমে গেল আর দাদাকে বলল দাদি তুমি টিভি দেখো আমি অংকটা শেষকরে আসছি। রুনি রুমে যেয়ে আস্তে করে দরজাটা বন্ধকরলো ব্যাগ থেকে দড়িটা বের করলো। এরপর ফ্যানের সাথে দড়িটা বাঁধলো এবং গলায় দড়ি দিল। ১ ঘন্টা পার হয়ে যায় রুনি দরজা খোলেনা ওর মা ও ততোক্ষণে বাসায় চলে আসছে। আন্টি গেটে এসে বার বার দরজা ধাক্কা দেয় কিন্তুু রুনি বা ওর দাদি কেউ গেট খুলতে আসেনা রুনির দাদি এক পর্যায়ে গেট খোলে আন্টি ঘরে এসে বলে রুনি কই। দাদি বলে ও তো পড়ার রুমে মনে হয় ঘুমায় গেছে। আন্টি বললো এমন সময়তো ও ঘুমায় না এরপর আন্টি রুনির ঘরের দরজায় ধাক্কা দিলেন কিন্তুু দরজা ভেতর থেকে লক ছিলো। বেশ কয়েক বার ধাক্কা দেওয়ার পর ও যখন রুনি দরজা খুলছিলো না আন্টি তখন চিৎকার দিলেন আশে পাশের লোকজন চলে আসলো। এরপর একজন দরজা ভেঙ্গে ভেতরে গেলেন আর রুনিকে গলায় দড়ি দেওয়া অবস্থায় দেখলেন। ততোক্ষণে রুনি মারা গেছে রুনিকে নামানো হল একজন বললো দ্রুত হাসপাতালে নিতে ওই অবস্হায় হাসপাতালে নেওয়া হলো কিন্তুু হাসপাতালের ডাক্তার বললেন আরো ৪০ মিনিট আগে মারা গেছে। ডাক্তার একটু অবাক হইছিলো কারন গলায় দড়ি দেওয়া লাশের শরিরে তিনি কয়েকটা মার ও আচড়ের দাগ দেখছিলেন কিন্তুু তিনি এটা কাউকে বলেননি। রুনির লাশ বাড়ি আনা হলো গ্রামের মানুষ সবাই জড় হলো রুনিদের বাসায়। রুনিদের বাসায় তখন শোকের মাতম চলছে রুনির মা অজ্ঞান হয়ে গেছিলেন। এরপর সবাই বললো এই অবস্হায় লাশ বেশিক্ষণ রাখা যাবেনা গোসলের ব্যবস্হা করতে হবে। রুনি যখন গোসল করাতে নিয়ে যাওয়া হল তখন গোছল খানার ভেতর থেকে রুনির কাকি,লাশ ধোয়ানো মহিলারা হঠাৎ বের হয়ে আসলেন। সবার মুখে ভয়ের চিহ্ন বোঝা যাচ্ছিলো। কাকা বললেন কি হলো কি হয়েছে ভেতরে আপনারা বাইরে আসলেন কেন। এবার কাকি বললো রুনির পিঠে আঁচড়ের দাগ ও গলায় বড় বড় আঙ্গুলের ছাপ দেখা যাচ্ছে এটা মানুষের আঁচড় বা আঙ্গুল না। যেহেতু পুরুষ মানুষ মেয়েদের লাশ ধোয়ানো ঘরে ঢুকতে পারেননা তাই বাড়ির পাশের এক হুজুরকে ঘটনাটা বলা হলো। হুজুর বললেন ভয় নেই আপনারা দ্রুত গোসলকরিয়ে ফেলান লাশ বেশিক্ষণ ফেলে রাখা ঠিক হবেনা। এরপর রুনিকে গোসল করিয়ে খাটিয়ায় শোয়ানো হলো রাত তখন আনুমানিক ৩ টা হঠাৎ রুনির ঘর থেকে একটা শব্দ এলো সবাই শব্দটি শুনতে পেল। এবং অনেকটা ভয় পেল রুমে কেউ ছিলোনা এমনকি রুনিদের বাসায় বিড়াল ও ছিলোনা তাহলে এই শব্দটা কিসের। কেউ ওই রুমে যেতে সাহস পাচ্ছিলোনা আবার হুজুর কে ডাকা হল। হুজুর আসলেন এবং সরাসরি রুনির রুমে গেলেন আর একটা গন্ধ পেলেন রুমের লাইট জ্বালালেন এবং দেখতে পেলেন ফ্যানটা হালকা হালকা ঘুরছে। হুজুর বাইরে এসে ঘরটা বন্ধ করে দিলেন। সবাই বললো কি হয়েছে হুজুর। হুজুর বললেন কাল বলবো ভয়ের কিছু নেই।পরেরে দিন সকালে রুনির বাবা আসলেন এবং সকাল ১১ টার দিকে মাটি দেওয়া হলো। ওই দিন রাতের বেলা হালকা হালকা বৃষ্টি হচ্ছিল বলে রাখা ভাল রুনিকে রাস্তার ধারে মাটি দেওয়া হয়। রাস্তার একটু পাশে কয়েকটা ঘরবাড়ি ছিল ওই দিন রাতে কাসেম চাচা বাড়ি আসছিলেন হঠাৎ চাচার চোখ ওই কবরের দিকে যায়। চাচা অনেক সাহসী ছিলেন কিন্তুু তিনি যা দেখলেন আর এমন ভয় পেলেন যে চিৎকার দিয়ে দৌড়াতে দৌড়াতে বাসায় এসে অজ্ঞান হয়েগেলেন।সকালে চাচার জ্ঞান আসে সবাই তখন প্রশ্নকরে কি হয়েছিল চাচা বললো রুনিকে কাল আমি কবরের উপর বসে থাকতে দেখেছি ও কাঁদছিল। কেউ বিশ্বাস করলো আবার কেউ করলো না। অনেকে বিষয়টা সিরিয়াসলি নেয়নি। রুনির মৃত্যুর ২ দিন পর রাত তখন আনুমানিক ২ টা হবে হঠাৎ রুনিদের বাসার চালে ঢিল পরার মত শব্দ হয়। রুনির বাবা ভয়ে ঘুম থেকে উঠে পরেন এবং বাইরে আসেন তিনি টর্চ লাইট জ্বালিয়ে আশে পাশে দেখতে লাগলেন এবার তার চোখ পড়লো দক্ষিণ দিকের আম গাছের উপর উনি দেখলেন রুনি আমগাছে বসে বসে কাঁদছে। আংকেল ও ভয় পেলেন পরেরে দিন হুজুরকে সমস্তো ঘটনা খুলে বললেন এবার হুজুর বললেন রুনি যখন গলায় দড়ি দিয়েছিলো তখন ওর রুমে খারাপ একটা জ্বিন ছিল রুনি গলায় দড়ি দিতো না ও চেয়ার থেকে নামতে যাচ্ছিলো কিন্তুু ওই জ্বিনটা ওকে জোর করে গলা চেপে ধরে। রুনি বাঁচার চেষ্টা করছিলো চিৎকার করতে চেয়েছিলো কিন্তু পারলোনা। আর রুনির আত্মা ঘুরে বেড়াচ্ছে কষ্ট সহ্য করতে পারছেনা তাই এমন করছে। তারপর হুজুর রুনির বাবাকে একটা তাবিজ দিলো । তারপরেরে দিন আমার এক বন্ধু রাত ৯ টার দিকে বাসায় যাচ্ছিলো ওর চোখও হঠাৎ রুনির কবেরর দিকে যায় আর ও দেখে রুনি কবরেরে উপরে বসে কি যেন খাচ্ছে এই দেখে ও ভয়ে দৌড়ে বাড়ি চলে আসে এবং বাসায় এসে সবাইকে বলে। সবথেকে বেশি ভয় পেয়েছিল আমার সেই বন্ধুটি রুনির মৃত্যুর ৫ দিনপরের ঘটনা এইটা। আমার বন্ধু রুমে একা ঘুমায় ওই দিন রাত ১/২ টা হবে ও ঘুমাচ্ছিলো হঠাৎ ও কান্নার শব্দ শুনতে পায় উঠে বসে আর যা দেখে কি বলবো আমার এখনো ভয়করে শুনলে ওদেখে জানালার পাশে দাড়িয়ে রুনি কাঁদছে রুনির চেহারাটা বোঝা যাচ্ছেনা কিন্তুু কান্নার ধরন একই রকম ছিলো। ওই দেখার পর চিৎকার দিয়ে আমার বন্ধু সেন্চলেচ হয়ে যায়।ও এতোটা ভয় পেয়ছিলো যে ৪ দিন জ্বর ছিলো। এরপর প্রায় গ্রামের মানুষ রুনিকে দেখতে পেত প্রথম প্রথম তো ওই রাস্তা দিয়ে মানুষ রাতেরবেলা যেতে ভয় পেত। রুনির মৃত্যুর পরে বেশ কিছু দিন এলাকাবাসি আতংকে ছিল। আর এই ধটনাটা গ্রামের প্রায় সবাই জানে!
rain-artwork-christian-quinot-village-1680x1050-wallpaper.jpg

Sort:  

Hi! I am a robot. I just upvoted you! I found similar content that readers might be interested in:
https://www.thehauntedblog.com/foys-lake-haunted-bangladesh/

Congratulations!

This post has been upvoted from Steemit Bangladesh, @steemitbd. It's the first steemit community project run by Bangladeshi steemians to empower youths from Bangladesh through STEEM blockchain. If you are from Bangladesh and looking for community support, Join Steemit Bangladesh Discord Server.

If you would like to delegate to the Steemit Bangladesh, you can do so by clicking on the following links:

50 SP, 100 SP, 250 SP, 500 SP, 1000 SP.

YOU ARE INVITED TO JOIN THE SERVER!