প্রিয়,
পাঠকগণ,
কেমন আছেন আপনারা সবাই? আশাকরি এখনও পর্যন্ত সবাই ভালো আছেন। এখনও পর্যন্ত এই জন্যই বললাম,কারণ কাল কি হতে চলছে এখনও বুঝতে পারছি না।
প্রকৃতির যে লীলাখেলা চলছে তাতে সত্যিই জীবন অনিশ্চিত বলে মনে হচ্ছে।মুহূর্তের মধ্যে প্রকৃতির রূপ পরিবর্তিত হচ্ছে।এক মুহূর্তে অন্ধকার নেমে আসছে পৃথিবীর বুকে, আর কিছুক্ষণের মধ্যে সব অন্ধকার কেটে গিয়ে ঝলমল করে উঠছে।
কাল দুপুরে ঝড়বৃষ্টির পর আকাশ একেবারে পরিষ্কার হয়ে গেল। এরপর সন্ধ্যাবেলা যখন চা নিয়ে ওপরে গেলাম,তখন ছাদে দাড়াতেই দেখি প্রকৃতির এক অপূর্ব সুন্দর রূপ। হালকা হালকা মেঘ ভেসে চলেছে, আর তার মাঝখান দিয়ে উকি দিচ্ছে চাঁদ।
সে যেন এক অপূর্ব দৃশ্য, ভাষায় যার সৌন্দর্য্য ব্যক্ত করা সম্ভব নয়। ছবি তুলেছি,আপনাদের সাথে সেগুলো শেয়ারও করবো, কিন্তু জানিনা ছবির মাধ্যমে কতটা সৌন্দর্য্য আপনাদের কাছে পৌঁছাবে।নিজের চোখে দেখা আর ছবির মাধ্যমে দেখার মধ্যে একটা পার্থক্য তো থাকবেই তাইনা?
যাইহোক,এরপর আসি আজকের একটা ঘটনার কথায়।"ইয়াস" এর জন্য মোটামুটি আমরা সকলেই প্রস্তুত ছিলাম।আন্দাজ করতে পারছিলাম আমফানের মত বা তার থেকে বেশি/কম ক্ষয়ক্ষতি নিশ্চয় হবে।অথচ এই মাত্র টিভি খুলে দেখি কিছুক্ষন আগে হাওড়ার ব্যান্ডেলে একটা ছোট ঘূর্ণিঝড় হয়েগেছে,যায় জন্য কেউ প্রস্তুত ছিল না।
টিভিতে দেখে সত্যিই ভয় লাগছিল, গঙ্গার জল চারিপাশে শান্ত কিন্তু মাঝখানে কিছুটা জায়গার জল ঘূর্ণিঝড়ের কারণে পাক খেয়ে অনেকটা ওপরে উঠে যাচ্ছে,এবং সেইভাবে একটু একটু করে হালিশহরের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। ওই প্রবল জলোচ্ছ্বাসের কারনে,প্রচন্ড হাওয়ার কারনে গাছগুলো দোলনার মত দুলছে।
কিছু মানুষ মোবাইলে ছবি তুলেছে, ভিডিওতে শোনা যাচ্ছিল মানুষের কোলাহল,আর্তনাদ। ব্যান্ডেল ও হালিশহরের বেশ কিছুটা জায়গায় প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে শুনলাম।
এই পরিস্থিতির জন্য কেউই তৈরী ছিলাম না আমরা। কেউই ভাবতে পারেনি কিছুক্ষণের জন্য গঙ্গার বুকেও এমন ঘূর্ণিঝড় হবে। ছবিতে দেখে আমার এতো ভয় লাগছিল,তাহলে যে মানুষগুলো সেটা সামনে থেকে দেখেছে,তাদের অবস্থাটা ভেবেই খারাপ লাগছে।
আমাদের এইদিকে আজকের দিনটা ভালই কাটলো, হালকা বৃষ্টি হয়েছে, ঝড় আজ আর হয়নি। তবে কালকের জন্য ভয় লাগছে। যদিও কেউ কেউ বলছে যে আমাদের এইদিকে অতটাও ক্ষতি হবে না। আবার কেউ কেউ বলছে যেহেতু ইয়াস আমফানের থেকেও শক্তিশালী হচ্ছে, তাই ক্ষতির ভয় তো থেকেই যায়।
সত্যিই জানিনা কাল সকাল থেকে প্রকৃতির কি রূপ দেখতে হবে। কাল সকাল থেকে দুপুরের মধ্যেই উপকূলবর্তী এলাকায় ইয়াস আছড়ে পড়বে। তাই কালকের পরিস্থিতি কি হবে ভাবতে পারছি না। বিদুৎ এর পরিষেবা কেমন থাকবে জানিনা। আমফানের সময় টানা ১৩-১৪ দিন বিদুৎ সংযোগ ব্যাহত ছিলো। মোবাইলে কোনো নেটওয়ার্ক ছিল না। নিজের মানুষের খোঁজ পর্যন্ত নিতে পারিনি। তখনও এমন lockdown ছিলো।
যাইহোক,কালকের জন্য সবাই সাবধানে থাকবেন। আর প্রার্থনা করবেন যেন ক্ষয়ক্ষতি না নয়,মানুষের প্রাণ না যায়, ইয়াস যেন তার শক্তি হারিয়ে সাধারণ ঝড়ের মত আছড়ে পরে। ভালো থাকবেন।সকল পরিস্থিতি ঠিক থাকলে কালকের অভিজ্ঞতা নিশ্চয় শেয়ার করবো।🙏