লকডাউনের মধ্যকার একটি ছোট্ট দিনের গল্প

in BDCommunity4 years ago

আজ সকাল সকাল বেরিয়ে পরেছি ঢাকার উদ্দেশ্যে, খবর পেয়েছি সব নাকি চুরি হয়ে গিয়েছে। লকডাউনের দিন, এর থেকে আর ভাল কি শুনবো !
ভাবছি না কারন তেমন কিছুই নেই আমার যে চুরি হবে। তাও গেলাম অসহায়ের শেষ সম্বল দেখতে।
টানা চার মাস পর বাড়ির বাহিরে পা দেওয়া। আহা !! একটা ক্রাইম সিন দেখতে যাব নাকি বাহিরের পরিবেশটা দেখব বুঝে উঠতে পারছিলাম না , ঠিক ঐ সময়ে নজরে পড়ল, রাস্তায় বড্ড মানুষ। বিশেষ করে মেইন রাস্তার ফুটপাতটায় । কিন্তু হ্যাঁ লোকাল বাসের চেহারা আর আগের মতো নাই। ভাল্লাগছে ব্যাপারটা ।
স্বভাবতই আমি বাসের একেবারে সামনে বসতে পছন্দ করতাম। আজকে আর সেটি হল না। বসলাম ৩য় নম্বর সিটে । রাস্তায় যাওয়া আসাতে খেয়াল করলাম আমি মনে হয় এতদিন শুধু শুধু ভয়ের মধ্যে ছিলাম। কিসের কি ! মাস্ক অনেকের মুখে নেই আর সোশ্যাল ডিস্টেন্স আবার কি ...বলে নিজের মনেই নিজে হেঁসে উঠা আমি ভাবলাম যাক মাস্কটা পরা ছিল নাহলে লোকে আবার আমাকে কি বলতো।
যেমন তেমন করে পৌছালাম মিরপুর ডিওএইচ।
আমাকে অবাক করে দিয়ে মিরপুর ১২ এর নতুন রুপ নিয়েছে। গত চার বছর ধরে যে পরিমাণ বালু খেয়েছি সেখানে এত সুন্দর পরিবেশ ঠিক হজম হল না আমার।
এইসব দেখতে দেখতে পৌছে গেলাম ২০৬ নম্বর বাসার দোরগোড়ায় । নাহ এইবার একটু সিরিয়াস হওয়া দরকার । যদিও একটু আকটু রাগ শো করলেও সেটা বেশিক্ষনের জন্য পারলাম না। সব গুছিয়ে ভাবলাম আমার বাচ্চা গিটারটা নিয়ে যাই।
বের হওয়ার পর কিছু ছবি তুলে বেরিয়ে পরলাম ঘরে ফিরব বলে। কিছু দূর যেতেই বৃষ্টি ... নাহ ভালই লাগছে কিন্ত কপালে আর গান শুনা নেই । বাসে বসে অনলাইন ক্লাস করতে করতে আমি আগের বাস যাত্রা মিস করতে থাকি প্রচন্ড। যাই হক এইগুলাহ আর কয়দিনের জন্যই বা হবে।
বিপত্তি ঘটে ঠিক বাসায় আশার আগ মুহূর্তে। ভুল রাস্তায় নেমে গিয়ে যেই রিকশা করে ঠিক রাস্তায় মোড় নিবো তক্ষণই আমার বাচ্চা গিটার পরে গিয়ে টাস !!...
বাসায় না এসে দিলাম ছুট দোকানে। যেভাবেই হক ঠিক করতে হবে।
কপাল ভাল ছিল যার কারনে ঠিক করে ফেলতে পেরেছিলাম।
রাত তখনও সাড়ে নয়টার কাছাকাছি। আমার রুমের সাথে থাকা ছোট বারান্দাটাও আজ জীবন্ত লাগছে। ঐখানে অবশ্য একটা ছোট দোলনা আছে। ভাঙা ও জোড়া দেওয়া গিটার নিয়ে গান শুরু করতেই সব ক্লান্তি চলে গেল। অনেকদিন পরে ভালোলাগছে। অনেক ধকলের পর শান্তির নিঃশ্বাস।
সব কিছুর মধ্যেও ভাল আছি বা ভাল থাকা ফিল করাটাই অনেক বড় ব্যাপার।

আশা করি ভাল লাগবে আমার এই ছোট গল্প ।

Sort:  

টানা দুই মাস বাসায় থেকে যেদিন প্রথম বের হয়েছিলাম, সেদিন ভালই অবাক হয়েছিলাম। করোনাকে ভয় পায় না মানুষ। সবাই স্বাভাবিক ভাবেই রাস্তাঘাটে চলাচল শুরু করেছিল। পরিবর্তন বলতে আগের চেয়ে এখন মানুষের মুখে মুখে মাস্ক দেখা যায় শুধু।

মাস্ক ব্যবহারের ব্যাপারটা অনেকাংশে কমেও গিয়েছে