আজ রবিবার,সকাল ছয়টা বাজে কুড়ি মিনিট,
আমি তুলিকা এবং আজ আমার বিয়ে।
নানী এর থেকে শুনেছি মেয়েদের নাকি বেশি দেরি করে বিয়ে করতে নেই তাহলে নাকি বর পাওয়া যায় না। ছোট থেকে খুব জেদি র একরোখা থাকা তে তার সবে তেই ভয় ছিল। এখন অবশ্য অনেক চুপচাপ হয়ে গিয়েছি। যাই হক, নানীএর খুব জেদ হয়েছে আমার বিয়ে দেখে তবেই নাকি শান্তি নাহলে শান্তি নাই। যা ভাবা তাই কাজ, ছেলে আমার নিজের পছন্দ করা। ছেলের নাম অরিন্দ। খুব লক্ষী স্বভাবের ছেলে বলতে পারেন কিন্তু চতুর, নাহলে আমার বাবাকে রাজি করানো সেইসাথে লাভ ম্যারেজ কে এরেঞ্জে নিয়ে যাওয়া চারটি কথা নয়।
এই মহান মানুষের দেখা হয় আজ থেকে ঠিক চার বছর আগে। বিগত চার বছর বলতে গেলে দুইজন দুজনের ভালবাসার সাথে সাথে আদৌ আমারা আমাদের জন্য ঠিক কিনা তা যাচাই করেছি। একটু তিক্ত লাগলেও কথাটা সত্য। আমাদের প্রথম দেখা হয় ইউনিভার্সিটিতে, একই বিভাগের সিনিয়র ব্যাচের বড় ভাই হিসাবে থাকলেও ‘বড়’ থেক ‘বর’ হওয়াটা একটু নাটকিয় ছিল। প্রপোসের আগে আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে সে আমাকে ভালবাসে তা না বললে মিথ্যা বলা হবে। আসলে মেয়েদের একটা সিক্স সেন্স থাকে যেটা আমারও ছিল সহজাত ভাবেই। আজ মনে হচ্ছে সিক্স সেন্স আবার কাজ করছে তাই ভোর বেলা বেরিয়ে পরলাম আকাশ দেখতে। ছোট থেকেই আকাশ আর আমার মধ্যে একটা গভীর সম্পর্ক আছে। মন খারাপ, ভালো বা আমার একলা থাকার সময়টা সব কিছু এই আকাশ জুড়ে ছিলো। আমার বাড়ি, আমার ছাদ আর আমার আকাশ, ব্যপারটা একেবারেই নিজের না ? হুম অনেক... কিন্তু কাল থেকে কি থাকবে ! আচ্ছা আকাশের রঙ কি পরিবর্তন হয় জায়গা অনুযায়ি। না হলে বোধহয় ভাল হত। একটা কিছু আমার হয়ে থাকতো।
বেলা ছয়টা বেজে কুড়ি মিনিট,
আমার কেন জানি এই সন্ধ্যে সময়টা একেবারেই পছন্দ ছিলো না। খুব ডিপ্রেসিং...! কিন্তু আজ আমি সাজুগুজু করে সন্ধ্যে উদযাপন করছি। এক কাপ চা আর সন্ধ্যে... ব্যাপারটা আমার ভালো লাগছে। যেহেতু বিয়েটা ঘরোয়া ভাবে হচ্ছে তাই এতো মানুষ ছিলো না আমাদের বাড়ি থেকে। কিন্তু বর পক্ষ থেকে অনেক মেহমান এসেছে ...
আমাদের বিয়ে ঠিক সাতটার পরে শেষ হয়। শুনেছি আমার বর অনেক বার কবুল বলেছে এটা অনেক মজার ছিল। যাই হক, সব অথিতি আপ্যায়ন শেষে এখন আমার যাবার পালা... একটু একটু করে সময় যাচ্ছে আর আমার খুব কান্না পাচ্ছে। আম্মুর দিকে তাকাতে পারলেও আব্বুর দিকে তাকাতে পারছিলাম না কেন জানি... কি যেন নাই নাই... ঠিক চলে যাওয়ার আগ পর্যন্ত কান্নাটা একদমই করি নি। ঘর ভর্তি মানুষকে হাসতে দেখলেও চাপা কষ্ট হু হু করে বারতে লাগলো। এই কষ্টের কোনো সংজ্ঞা নেই , কখনো ছিল না।
গল্পে তুলিকা আমার একটি কাল্পনিক চরিত্র হলেও ঘটে যাওয়া ব্যপারগুলো কাল্পনিক নয়। ভাল থাকুক নিজের বাবা মা, আকাশ কে ছেড়ে যাওয়া এক একটা জিবনের গল্প।
Congratulations @xaibxiba! You have completed the following achievement on the Hive blockchain and have been rewarded with new badge(s) :
You can view your badges on your board And compare to others on the Ranking
If you no longer want to receive notifications, reply to this comment with the word
STOP
To support your work, I also upvoted your post!
Do not miss the last post from @hivebuzz:
Support the HiveBuzz project. Vote for our proposal!
তুলিকা আপনার কাল্পনিক চরিত্র হলেও, নামটা আমার খুব পছন্দ হয়েছে, তার চেয়ে বেশি পছন্দ হয়েছে আপনার লেখার Style.
Good one young lady, keep it up.
ধন্যবাদ ভাইয়া
কাল্পনিক তুলিকা ও অরিন্দের জন্য শুভ কামনা রইলো।
সুন্দর লিখেছেন।।
thank you <3