তারা ভরা আকাশ কার না পছন্দ। বিশেষ করে পূর্ণিমার রাত গুলোতে , খোলা মাঠে খালি পায়ে গ্রামীণ এলাকায় , নিস্তব্ধ পরিবেশে হাঁটার অনুভূতিটাই আলাদা। গ্রামে রাতের বেলা ঝি ঝি পোকা দেখা যেত। এখনো হয়তো দেখা যায় কিন্তু আগের তুলনায় অনেক কম। ওই পোকা গুলো আগে একসাথে অনেক গুলো জমিয়ে বোতলে ভোরে তারপর সবাই মিলে খেলতাম ওই গুলো দিয়ে। সব থেকে বেশি ভালো লাগতো যখন পুরো গ্রামের বিদ্যুৎ চলে যেত । পুরো গ্রাম জুড়ে অন্ধকার , তখন আমরা কয়েকজন মিলে ঝি ঝি পোকা গুলো বোতলের মধ্যে নিয়ে পুরো গ্রাম ঘুরে বেড়াতাম। আর ঐটার আলো তুলনামূলক ভাবে ভালোই থাকতো ।
রাতের দিকে সবাই স্বাভাবিক ভাবেই পড়া শোনায় ব্যস্ত থাকতাম , আর যখনি গ্রাম এর বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যেত তখনই আমাদের সবার মাঝে যেন আবার জীবন ফিরে আসতো। বিদ্যুৎ যাওয়ার প্রায় ২ মিনিট এর মধ্যেই আমরা সবাই একত্রিত হয়ে যেতাম। বাড়ি থেকে সামান্য দূরে বাশ ঝাড় ছিল , সেখানে গেলেই বেশির ভাগ সময় ঝি ঝি পোকা পাওয়া যেত। সবাই একে একে পোকা গুলো জমিয়ে বোতলে নিয়ে সারা গ্রাম ঘুরে বেড়াতাম। কিন্তু যাওয়ার সময় এই গুলোকে বাসায় নিয়ে যাওয়া যেত না। আম্মু যখনি দেখতো এইসব নিয়ে খেলা মেলা করছি তখনি বকা বাকি করতো। এইসব নিয়ে খেলা নাকি অশুভ লক্ষণ।
গ্রামে কত ধরণের কুসংস্কার আছে। এই গুলো নিয়ে কথা বললে , বলা আর শেষ হবে না। যাগ্গে এইসব নিয়ে কথা আর নাই বলি। আমাদের গ্রামের পাশে অনেক বড় একটা খেলার মাঠ আছে। মাঠ বললে ভুল হবে। আসলে ঐটা হচ্ছে ধান খেত। ধান কাটার মৌসুম শেষ হলে সেখানে ছেলে মেয়েরা মাটি গুলো সমান করে ক্রিকেট খেলার পিচ , ফুটবল খেলার জন্য গোলপোস্ট এইসব তৈরী করে। সেখান থেকে আকাশটাকে একদম পরিষ্কার দেখা যায়। এখনো গ্রামে গেলে রাতের বেলা বন্ধুদের সাথে করে সেখানে বসে আড্ডা দেই। এই শান্তি কোথায় পাবো ? পূর্ণিমার রাতে , নির্জন এলাকায় , খোলা মাঠে বসে থাকার মতো শান্তিপূর্ণ মুহূর্ত ২য় টা খুঁজে পাওয়া মুশকিল।
গতকাল পৃথিবী থেকে সব থেকে বড় চাঁদ দেখা গিয়েছিলো। গতকাল রাতে বাসার ছাদে উঠেছিলাম কিন্তু ঠিক মতো চাঁদ দেখা যায়নি। আকাশটা মেঘে ঢাকা ছিল। কিন্তু হ্যা , চাঁদটা সত্যি অনেক উজ্জল ছিল গতকাল। জানিনা কালকে পূর্ণিমা ছিল কি না কিন্তু চাঁদের উজ্জলতা দেখে মনে হচ্ছিলো পূর্ণিমার রাতই হবে। ঐদিন একটা খবরে দেখলাম চাঁদ আস্তে আস্তে করে আমাদের পৃথিবী থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। এমন একটা সময় আসবে যখন কিনা পৃথিবীতে চাঁদ নাম কোনো বস্তুর অস্তিত্বই থাকবে না। লক্ষ লক্ষ মাইল দূর থেকে চাঁদ পৃথিবীর করুন অবস্থাউপভোগ করবে । যদিও এইসব কথা এখনকার না , কোটি কোটি বছর পরের কথা বলছি।
আমরা যখন ছোটো ছিলাম তখন আমাদের গ্রামে বিদ্যুৎ ছিলো না,অমাবস্যা রাতে ঘর থেকে বের হলেই হাজার হাজার জোনাকি দেখা যেতো,মনে হতো চাঁদের পরিবর্তে আলো দিতে তারা এসেছে।কিন্তু এখন বিদ্যুৎ আছে কিন্তু রাতে সারা গ্রাম খুঁজে একটা জোনাকি পোকা বের করতে পারি না।
somoyer sathe sathe tarao bilopto hoye jacche :)
Congratulations @shemanto72! You have completed the following achievement on the Hive blockchain and have been rewarded with new badge(s):
Your next target is to reach 5000 upvotes.
You can view your badges on your board and compare yourself to others in the Ranking
If you no longer want to receive notifications, reply to this comment with the word
STOP
Support the HiveBuzz project. Vote for our proposal!