চিত্রকর্ম

in BDCommunity3 years ago (edited)

IMG_20210914_142257.jpg

চারিদিকে চলছিল পূজার উৎসব। এমন সময় হঠাৎ করে চৌধুরীর বাড়ি থেকে ভগবান গণেশের একটি পেইন্টিং চুরি হয়ে যায়। সেই কারণে বিখ্যাত গোয়েন্দা রোহিত দত্তকে কে , চৌধুরী নিয়ে আসে ভাড়া করে গণেশের পেইন্টিং উদ্ধার করার জন্য।

চৌধুরীর বাড়ি ছিল উত্তর কলকাতায়, তিনি তার স্ত্রী মিসেস নির্মলা চৌধুরী এবং দুই দাসীর সাথে বসবাস করতেন। চৌধুরীর বাড়িতে অনেক মূল্যবান জিনিসপত্র রয়েছিল । তার ঘরের শো-পিস থেকে শুরু করে সমস্ত পেইন্টিং ছিল অনেক দামি এবং মূল্যবান। এই সমস্ত জিনিসপত্র গুলোর মধ্যে ভগবান গণেশের একটি চিত্র ছিল। যেটি জয়পুরের জমিদার, চৌধুরীর দাতা কে দিয়েছিলেন। গণেশের পেইন্টিং এর বয়স হয়েছিল 100 বছর। পেইন্টিং এর উপরে 'JG' একটি লেবেল দেয়া ছিল।

কিছুদিন আগে চৌধুরী এক সপ্তাহের জন্য স্টেশনের বাইরে গিয়েছিলেন। বাড়িতে আসার পর তিনি লক্ষ্য করলেন তার ভগবান গণেশের চিত্রকর্মের মধ্যে 'JG' লেখাটি নেই। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন কেউ চিত্রকর্মটি পাল্টে দিয়েছে এবং তার আসল টি চুরি হয়ে গেছে। তিনি গোয়েন্দা রোহিত দত্তকে তখন ডেকে পাঠালেন । যিনি তার বন্ধুর বন্ধু ছিল। যাতে তিনি পেইন্টিং পেতে সাহায্য করেন।

রোহিত দত্তকে কল করার পর তিনি ঘটনাস্থলে দুইদিন পর এসে উপস্থিত হয়েছিলেন। তিনি সেই দিন থেকেই জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন। একে একে তিনি সবাইকে প্রশ্ন করতে শুরু করেছিলেন। প্রথমেই তিনি মিসেস নির্মলা চৌধুরীকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন। তিনি তাকে গত এক সপ্তাহের ব্যাপারে সবকিছু জানতে চাই ছিলেন। তার মধ্যে যত কৌতূহল ছিল সেই সময়ের ব্যাপারে, তিনি মিসেস চৌধুরী কে জিজ্ঞেস করেন।

মিসেস চৌধুরী তাকে বলেন, তিনি কেবল মাত্র তিনবার বাড়ির বাইরে গিয়েছিলেন গত সপ্তাহে। দুইবার শপিংমলে এবং একবার তারা আত্মীয়র বাড়িতে। এবং বাকি দুই দাসী সবসময় বাড়ীতেই ছিল । তারা কেবলমাত্র তখনই বাইরে যেত, যখন চৌধুরী অথবা মিসেস চৌধুরী তাদের আদেশ দিত।

দুই দাসী চৌধুরীর বাড়িতে গত বিশ বছর ধরে একসাথে কাজ করছে। দুই দাসীর উপর চৌধুরী এবং মিসেস চৌধুরীর পুরো ভরসা ছিল। দুই দাসীকে কোন প্রশ্ন করার আগেই তিনি সিসিটিভি ফুটেজ গুলো চেক করে নিয়েছিল। গোয়েন্দা রোহিত দত্ত চেক করলেন , যে দিনগুলোতে চৌধুরী বাড়িতে ছিলেন না।

তখন ছয় জন লোক তার বাড়ির ভিতর প্রবেশ করেছিল। একজন ছিলেন মালি , দ্বিতীয়জন ছিলেন খাদ্য সরবরাহ কারী একজন পুরুষ, তৃতীয় জন ছিলেন চালক, চতুর্থ ছিলেন দুজন এয়ারকন্ডিশন মেরামতের লোক এবং সর্বশেষ দাসীর চাচাতো ভাই রজত।

সেখানে প্রতিটি মানুষ দুই ঘণ্টার বেশি ছিলেন না, কেবলমাত্র দাসীর চাচাতো ভাই রজত একদিন অবস্থান করেন। দাসীর মতে রজত এখানে ডাক্তার দেখাতে এসেছিল। কারণ ছোট একটি দুর্ঘটনায় রজত পায়ে আঘাত পেয়েছে। তিনি এখানে একদিন থেকে , পরের দিন হসপিটালে চলে যায়।

কিন্তু গোয়েন্দার নজরে যেটা পড়েছিল তা হল , রজত আসার দিন তার বাম পায়ে ব্যান্ডেজ নিয়ে বাড়িতে ঢুকে ছিল। কিন্তু যেদিন চলে গিয়েছিল তার ডান পায়ে ব্যান্ডেজ ছিল । গোয়েন্দা পুলিশকে খবর দেয় এবং পুলিশ দাসি এবং তার চাচাতো ভাইকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়।

যেহেতু দাসী বছরের-পর-বছর চৌধুরীর বাড়িতে বাস করত। সে সবকিছুর সম্পর্কে সচেতন ছিল। দাসী গণেশ চিত্রকর্মের একটি ছবি পাঠিয়েছিল রজতের কাছে। রজত একজন চিত্রশিল্পীর সাহায্যে একটি নকল ছবি তৈরি করেছিল। যখন বাড়িতে আসেন, তিনি আসল থেকে নকল পেইন্টিং প্রতিস্থাপন করেন। রজত আসল পেইন্টিং নিয়ে চলে যায়।

পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করেন এবং মূল চিত্রটি চৌধুরীর হাতে তুলে দেন।

Sort:  

অপরাধী যতই চালাক হোক না কেনো, একটা না একটা ভুল করবেই।আর ওই ভুল ই তাদের ধরা পরার কারণ হয়।