আমি সানাউল হক।আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন।আজকে আমি আমার বাবার মাছের ব্যবসায় সম্পর্কে লিখেছি।
আমার বাবা একজন মাছের আড়তদার।আমাদের আড়তে পাইকারী মাছ বিক্রি করা হয়।সাধারণত আড়তে খুচরা মাছ বিক্রি হয় না। সর্বনিম্ন ৫ কেজি মাছ নিতে হয় পাইকারদের।আড়তের মাছ বিক্রির সময়সীমা ভোর ৫ টা হতে শুরু হয়ে যায় এবং ৯টা বাজতেই বিক্রি প্রায় শেষ হয়ে যায়।
এরপর পাইকারগন নিজ নিজ দোকান বসিয়ে খুচরা মাছ বিক্রি করে।আমার যখনই কলেজ বন্ধ থাকে তখন আমি বাবার সাহায্য করার জন্য আড়তে যাই।সকালে ঘুম থেকে উঠতে কষ্ট হয় বিশেষ করে এই শীতের সময় তারপরেও যাই।আমি আড়তে গেলে যখন যা ইচ্ছা হয় সেই কাজ করি।কিন্তু বেশিরভাগই সময় আমি চালান তৈরি করি।
হটাৎ করে আজকে এই বিষয় নিয়ে ব্লগ লেখার চিন্তা মাথায় আসলে ছবি তোলা শুরু করি।ছবি তোলার জন্য যখন বাইরে যাই তখন পিকাপে থাকা মাছগুলোর ছবি তোলার সময় যে ভাই পিকাপে ছিলেন তিনি বলেন যে ভাই সেলফি নিচ্ছেন? আমি বললাম না ভাই ব্লগ লিখবো তাই ছবি তুলবো।উনি বলেন যে আমারও ছবি নেন ভাই।তাই উনার ছবিটি নিলাম।
আমাদের পিকাপে করে মাছ আসে বিভিন্ন জায়গা হতে।এরপর আমাদের আড়তে যারা কাজ করেন তারা ক্রেট অথবা ড্রামে মাছ নামায় আড়তে নিয়ে আসেন।আড়তে আসার পরে মাছের নিলাম (ডাক) হয়।অনেকে অনেক রকম দাম বলে।যেই দামে লাভ হবে সেই দামে সেই পাইকারকে মাছ দেওয়া হয়।
যদি কোনো অপরিচিত পাইকার থাকে তাহলে তাকে নগদে মাছ দেওয়া হয়।কারনে অনেকে চোর পাইকার থাকে যারা মাছ নিয়ে পালিয়ে যায়।তাই আড়তদারগন মিটিং বসিয়ে এই সিধান্ত নেন যে বাকি অথবা নগদ নিজ ইচ্ছা বিক্রি করতে হবে।
বর্তমানে মাছের দাম অনেক কমেছে।কয়েকদিন আগে যে মাছগুলোর দাম ১৮০ টাকা ছিলো সেই মাছগুলোর বর্তমান দাম ১২০ টাকা।এই কারনে অনেক মাছ বিক্রি হচ্ছে না।বর্তমানে আড়তদারদের অবস্থা তেমন ভালো নয়।তাই আমার বাবা অনেক জায়গা হতে মাছ বন্ধ করেছে।কারন বেশি মাছ থাকলে বিক্রি হচ্ছে না বরং আটকে যাচ্ছে।
দেশি মাছগুলোর দাম বেশি কমেনি যেমনঃ মাগুর,শিং ইত্যাদি।অন্য দিকে রুই,কাতলা,পুটি,সিলভার কার্প,ব্রিগেড এগুলো মাছের দাম অনেক কমেছে।মাছগুলো সাধারণত পাল্লাতে মাপে বিক্রি হয়।অনেকের আড়তে ডিজিটাল পাল্লা দিয়ে মাপে বিক্রি হয়।
পাইকারদের জন্য এখানে বিভিন্ন সুবিধা করা হয়েছে যেমন ৪১ কেজিতে ১ মন।আমরা সকলে জানি যে ৪০ কেজিতে ১ মন হয়।কিন্তু মিটিং বসিয়ে তারা ৪১ কেজিতে ১ মন করে তার বিপরীতে সিস্টেম করেছে যে দাম কমানো যাবে না।আগে দাম কমিয়ে নিতে পারত।এখন নিলামে যতদুর দাম উঠবে সেই দামে মাছ নিতে হবে।
আমি আড়তে গেলে অনেক রকমের মাছ বাসায় নিয়ে আসি।মাছগুলোকে পানিতে ছেড়ে দিলে ভালো লাগে।যারা আড়তে কাজ করে তাদের প্রত্যেকের আলাদা আলাদা বেতন দেয়া হয়।দৈনিক ২০০ হতে ৩০০।কাজ করতে হয় শুধুমাত্র সকাল ৫ টা হতে ১০ বা ১১ টা পর্যন্ত।আমাদের আড়তে যারা কাজ করে তারা অনেকে পাইকারি মাছ কিনে খুচরা বিক্রি করে।তাদের পেশা হিসেবে এটাই বেছে নিয়েছে।
আর অনেকে সকালে কাজ করে আমাদের আড়তে আর অন্যান্য কাজ করে আড়ত থেকে গিয়ে।আল্লাহর অশেষ রহমতে মাছের ব্যবসায় বাবার ভালোই চলছে।
পিকাপের মাছগুলো জীবিত রাখার জন্য বিভিন্ন মেশিন ব্যবহার করা হয়।এই মেশিন গুলো পানিতে চলমান গতিতে রাখে।পানি চলমান থাকায় মাছগুলো সহজে মরে না।যার কারনে মাছের দাম বৃদ্ধি পায়।মরা মাছের চেয়ে জীবিত মাছের দাম বেশি
বর্তমানে পুরো বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে সুস্বাদু ইলিশ বাংলাদেশে পাওয়া যায়।আমাদের আড়তে ইলিশ মাছ ৪০০ থেকে ১০০ টাকা কেজি বিক্রি করা হয়।বিশেষ করে পহেলা বৈশাখের সময় ইলিশ মাছের দাম বেড়ে যায়।
কয়েকদিন আগেই মা ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ করা হয়েছিলো।কারন সে সময় মা ইলিশ ডিম দেয়।সেই সময় মা ইলিশ ধরলে ২ বছরের কারাদণ্ড অথবা সর্বোচ্চ ৫০০০ টাকা জরিমানা দিতে হতো।গত ৩ দিন আগে ইলিশ মাছ ধরা শুরু হয়েছে।এখন বর্তমানে বাজারে ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে।
সবাই দোয়া করিয়েন যাতে আমার বাবার ব্যবসায় আরও উন্নত হয়।আশা করি আপনাদের ভালো লেগেছে।ব্লগটি পড়ে আপনার মন্তব্য অবশ্যই কমেন্টে জানাবেন।ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
DEVICE: SYMPHONY i98
সবার প্রতি ভালোবাসা রইল
Doa kori apnar babar jonno bhaia.... Bebsha kora amaro iccha.... Bebsha ke islam halal boleche abong bebsha kora sunnot 😍😍