ক্যাম্পাসিয়ান পরিবার

in BDCommunity4 years ago

আশা করি সবাই ভালো আছেন।আজকে আমি আমার ক্যাম্পাসিয়ান পরিবারের ব্যাপারে কিছু তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।আমার বাসা হচ্ছে সৈয়দপুর।কিন্তু আমার দ্বিতীয় বাসা হচ্ছে আমার ছাত্রাবাস দিনাজপুর।আমি দিনাজপুর পলিটেকনিকে পড়াশোনা করি তাই আমার পক্ষে প্রতিদিন সৈয়দপুর টু দিনাজপুর যাওয়া আসা সম্ভব নয়। এই কারনে আমি ছাত্রাবাসে থাকি।

USER_SCOPED_TEMP_DATA_orca-image-1395393566.jpeg

আপনারা সবাই অনেক ভালোই করে জানেন যে কয়েক মাস আগে করোনার কারনে দেশের পরিস্থিতি খুবই খারাপ ছিলো যার কারনে আমরা বাসা থেকে সহজে বের হতে পারছিলাম না।এবং আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোও বন্ধ ছিলো।হটাৎ করে আমাদের নোটিশ দেওয়া হয় যে পরীক্ষা হবে।তাই আবারও ফিরে আসি আমার দ্বিতীয় বাসায়।আমার ক্যাম্পাসে ও ছাত্রাবাসে।

আমাদের এই ছাত্রাবাসে ১২ জন সদস্য রয়েছে।আমরা একটা পরিবারের মতই।১২ জনের মধ্যে ৫ জন বড় ভাই এবং আরো ৫ জন তাদের জুনিয়র।এরপরে আছি আমি এবং আমার এক বন্ধু আমরা দু'জন জুনিয়র।আমার ছাত্রাবাস দিনাজপুর সিটি কলেজের রাস্তায় অবস্থিত।এবং একটু হেটে গেলেই আমার ক্যাম্পাস।প্রানের ক্যাম্পাস।আমাদের ছাত্রাবাসে একজন বড় ভাই ম্যানেজার আছেন।তিনি ছাত্রাবাসের সব কিছুই দেখাশোনা করেন।নিচে যার ছবি দেখতে পাচ্ছেন তিনি আমাদের ম্যানেজার।

IMG_20210224_170131.jpg

কোনো প্রকার ঝামেলা হলে একটা মিটিং বসিয়ে সব ঠিক করা হয় বড় ভাইদের মাধ্যমে।এবং রান্না করার জন্য একজন আন্টি থাকেন।তিনি তিন বেলার রান্না করে চলে যান।এরপর আমাদের ছাত্রাবাসে খাওয়া দাওয়ার জন্য একজন ম্যানেজার থাকেন। এই ম্যানেজার প্রত্যেক মাসে পরিবর্তন হয়।এই মাসে আমি আছি ম্যানেজার।আমাদের ১২ জনের মধ্যে কোনো প্রকার বাইরের বা বাসার সমস্যা হলে আমরা সবাই মিলে সাহায্য করি।আমরা এখানে সবাই পলিটেকনিক এর ছাত্র।অন্য কোনো কলেজের নেই।যাতে সবাই সুবিধা পাই একে অপর থেকে।

IMG_20210224_170441.jpg

আমাদের ছাত্রাবাসে ৬ টি রুম রয়েছে।এক রুমে ২ জন করে থাকি।আমার রুমমেট একজন বড় ভাই।আমার অনেক দিন ধরে ইচ্ছা ছিলো আমাদের ক্যাম্পাসিয়ান পরিবারের ব্যাপারে কিছু লেখার।আজকে লিখলাম।আমাদের ছাত্রাবাসে প্রত্যেক মাসে শেষে ভালো ধরনের খাওয়া দাওয়ার আয়োজন করা হয়।এই দিনে আমরা গান নাচসহ অনেক আনন্দ করে থাকি।এবং আমরা পড়ালেখার পাশাপাশি সবাই একসাথে গিয়ে খেলাধুলা করি।এখানে আমরা বাসার মতোই অনুভব করি কিন্তু বাসার মতো কিছুই নেই।সম্পুর্ন জীবন আলাদা বাসা হতে এখানকার।বাসায় ইচ্ছা মতো খাওয়া যায়।এখানে এটা সম্ভব নয়।এক একদিন আলাদা আলাদা সবাই নিজের ইচ্ছা মতো বাজার করে আনে তাই খেতে হয়।

IMG_20210224_170145.jpg

বাসায় গোসল করে বের হয়ে আসি।কিন্তু কাপড়ের দিকে খেয়াল করি না।অনেকে জানিও না কাপড়টা কে ধুয়ে দিবে।অনেকের বাসায় কাজের মেয়ে থাকে যে কাপড় ধুয়ে দেয়।অনেকের মা বোন কাপড় ধুয়ে দেয়।কিন্তু ছাত্রাবাসে কাজের মেয়ে অথবা মা বোন কেউ নেই।নিজের কাপড় নিজেই ধুইতে হয়।অনেক সময় যখন রান্না করার জন্য আন্টি আসেন না।তখন নিজেই নিজেরা রান্না করে খাই।যখন আগুনের গরম ও চুলার ধোয়া চোখে নাকে ঢুকে ঠিক তখনই মায়ের কথা মনে পড়ে।যখন কাপড়গুলো ও মোটা জিন্স প্যান্ট গুলো ধুই তখন বোঝা যায় মায়ের কষ্ট। তখন চিন্তা করি কিভাবে মা বোনেরা আমাদের কাজ করে দেয়।তাদের কতই না কষ্ট হয়।কিন্তু তারা সহ্য করে চুপ করে থাকে আমাদের কিছুই বলে না।আমরা অনেকে তাদের সাথে খারাপ ব্যাবহারও করি।

আজকে এই পর্যন্ত লিখলাম।আশা করি আপনাদের ভালো লেগেছে।পরের ব্লগে আবারও দেখা হবে।সুস্থ থাকুন ভালো থাকুন।

সবার প্রতি ভালোবাসা রইল।
@sanaulbd
Facebook
Twitter