The harsh reality

in BDCommunity3 years ago

প্রতিটা ঘর ভাঙ্গার পেছনে বেশিরভাগ মুরুব্বিদের ভূমিকা বেশি। হতে পারে সেটা মেয়ের পক্ষ থেকে হতে পারে সেটা ছেলে পক্ষ থেকে।
একটা মেয়ে যখন বউ হয়ে একটা নতুন জায়গায় যায় তখন তার খাপ খাওয়াতে বেশ সময় লাগে। 5/7 বছর লেগে যায় নতুন পরিবেশকে আপন করে নিতে বা নিজেকে সেট করতে।
এই ব্যাপারটাই কোনভাবেই ছেলের পক্ষ মানতে রাজি হন না।
তারা মনে করেন এই মেয়েটা সুপারম্যান যেমনটা আলাদিনের চেরাগ যা ঘষলে ম্যাজিকাল কিছু বের হয়। ঠিক তেমনি তাদের আশা যে এই মেয়েটাকে সারাক্ষণ আলাদিনের প্রদীপের মতো চারিদিক থেকে ঘষামাজা করলে ম্যাজিকাল কিছু বের হবে।
20 /21 বছরের একটা মেয়ে কতটুকু বুঝে? আবার অনেক মেয়ে এমন ফ্যামিলি থেকে আসে যারা মোটামুটি সামাজিক না।
যারা মোটামুটি বোঝে না যে কিভাবে পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়াতে হয়? একা একা বড় হয়েছে বা যৌথ ফ্যামিলি তে থেকে বিভিন্ন রকম ট্রলের শিকার হয়েছে।
তার কাছে শ্বশুরবাড়ি মানে প্রচন্ড রকম একটা নেগেটিভ পরিবেশ এমনটা মনের মধ্যে গেঁথে থাকে।
আর শ্বশুর বাড়িতে বিয়ের পরদিন থেকেই তার ওপর যে দায়িত্ব বর্তানো হয়ে থাকে তা থেকে তার আরও মনে দৃঢ় ভাবে দাগ কেটে যায় যে আসলেই শ্বশুর বাড়ির পরিবেশ বড্ড বিরূপ।
কিছু মেয়ের মা আছে যে মেয়ের একটু দুঃখ কষ্টের কথা শুনলে মেয়েকে আরো তাল দিতে থাকে, আমরা তো এরকম পরিবেশ পাই নাই আমাদের শাশুড়ি তো অনেক ভালো ছিল বা আমার আদরের মেয়েটাকে তো শ্বশুর বাড়িতে না জানি না কি করে ফেলতেছে?
শাশুড়ি খারাপ শশুর খারাপ সবার সাথে খুব নেগেটিভ ভাবে অ্যাটিচুড করার জন্য মোটামুটি তাকে ব্রেইন ওয়াশ করে দেয়।
এটা অনেক বড় একটা ভুল। ঘর ভাঙ্গা পিছনে এই ধরনের অ্যাটিটিউড একশতভাগ দায়ি।
আবার অনেক মেয়ের মা ই সারাক্ষণ শুধু সহ্য করো সহ্য করে ধৈর্য ধরো ঠিক হয়ে যাবে এরকম তাল দিতে থাকেন।
এটাও অনেক বড় ভুল।
ঘর ভাঙ্গার পেছনে এই চুপ করে ধৈর্য সর্য ধরা টাও অনেক বড় একটা বিড়ম্বনা।
আর ছেলের মা বোন ভাইয়ের বউদের এক্সপেক্টেশন বেশি হওয়ায় মেয়েটা তাল দিয়ে উঠতে পারে না।
যার ফলে মেয়েটা ছেলেটার শয্যাসঙ্গী হলেও জীবনসঙ্গী হয়ে উঠতে পারে না।
অনেক মা আবার ছেলেকে মধ্যরাত পর্যন্ত রুমের মধ্যে নিয়ে বসে থাকেন আড্ডাবাজি করেন যাতে বউয়ের কাছে যেতে না পারে।
ননদ ননাস রা অনেক বেশি জল্লাদ এর মত আচরন করতে থাকেন যেটা মোটেও শুভ নয়।
কথায় কথায় পরিবারের মিটিং বসে মেয়েটার যে ক্লাস নেওয়া হয় এতে মেয়েটার সম্মানবোধ আস্তে আস্তে কমে যায় সবার প্রতি।
ডাইনিং এর চেয়ার যদি ঠিকভাবে ঢুকিয়ে না রাখে, টেবিলটা যদি খাওয়ার পরে মুছে না রাখে, সকালবেলা উঠে চা না বানায়, মাথা থেকে কাপড় যদি একটু পড়ে যায়, সবকিছুর জন্যই মাস্টার ক্লাস নেওয়া হয়।
এর মধ্যে বাচ্চা হওয়ার পরে যে পোস্ট পার্টাম ডিপ্রেশন শুরু হয় ওটা নিয়ে কেউ ভাবতেই রাজি না।
সবার খালি এক কথা তারা যে পরিমাণ কষ্ট করেছেন তার দ্বিগুণ চতুর্গুণ মেয়েটাকে কষ্ট করতে হবে কোন ভাবে যদি তার হাজবেন্ড তাকে সাহায্য করে তাহলে তো সর্বনাশ।
তাদের ছেলে ভেড়া হয়ে গেছে।
এত মা-বোনদের ভাইয়ের বউদের এত যন্ত্রণার মধ্যে কোন কোন মেয়ে টিকে যায়।
কিন্তু কিছু কিছু মেয়ে নারকীয় যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে বের হয়ে আসে।
তখন এই সমাজ আবার মেয়েটাকে ই দোষ দেয় যে মেয়েটা সংসার করতে পারেনি।
প্রতিটা মেয়েই সুন্দর প্রতিটা মেয়েই সাবলীল। এসব জায়গায় মুরুব্বিরা যদি একটু মুন্সিয়ানা ফুটিয়ে তোলে তাহলে সংসার গুলো এরকম নারকীয় হয় না।
বেশিরভাগ শাশুড়ির মনে করেন যে বৌমা এসেছে মানেই তার সংসার হাতে নিয়ে নিবেন।
তাই সংসারের সবকিছু হাতের মুঠোয় রেখে বৌমাকে চাকরের মতো খাটানো একটা ভাব দেখা যায়।
এটা করে মেয়েটা কাজ সব করে দেয় কিন্তু দায়িত্ব পালন করা বা ভালবেসে কোন কিছু করা তার মধ্যে হয়ে ওঠে না।
তাই সে যে কোনভাবেই ঐ সংসার থেকে নিজের একটা আলাদা সংসার পেতে চায় নিজের মতো করে সাজাতে চায়।
কিন্তু শ্বাশুড়ি মা শ্বশুর বাড়ি যদি তাঁর অনুকূলে থাকে তার সাথে বন্ধুত্ব সুলভ আচরন করে সবসময় তার ভুল না ধরে তার অসুস্থতায় পাশে থাকে
তাহলে কিন্তু এটা কখনোই আলাদা থাকার বা আলাদা হওয়ার কথা চিন্তা করবে না।
তাই অধিকাংশ ঘর ভাঙ্গার পেছনে মুরুব্বীদের মুন্সিয়ানার যথেষ্ট অভাব রয়েছে।
আর বৌমা থেকে বলছি দয়া করে ধৈর্য ধরুন চেষ্টা করুন আপনার স্বামীর সাথে আপনার সম্পর্কটা অটুট রাখতে। তারপরও যদি একান্ত না হয় তাহলে বেরিয়ে আসুন। তবে মনে রাখবেন বেরিয়ে আসার পরের জারনি অনেক কঠিন হবে।
তখনো আপনার জীবনের সমস্যা আসবে কিন্তু অন্য রূপে।
তাই মায়ের কথা শুনে সংসার ছেড়ে আসবেন না।
আর শাশুরির কথা শুনে সংসারে নিজের সর্বস্ব ঢেলে দিবেন না।
টেকনিক্যাল হওয়া শিখুন। মাঝে মাঝে না বলা শিখুন। আপনার স্বামীর সাথে আপনার সময় গুলোকে সবচেয়ে সুন্দর করে উপভোগ করুন।
রুমের ভিতর ঝগড়া হলেও কাউকে বলার দরকার নেই রুমের ভিতর রোমান্স হলেও কাউকে প্রকাশ করার দরকার নেই।
আজকে থেকেই প্রবলেম থেকে হয়ে পালিয়ে যাওয়ার থেকে প্রবলেম কেন হচ্ছে সেটা বের করার চেষ্টা করুন।