Source
কেন মেঘ আসে হৃদয়ে আকাশে, তোমারে দেখিতে দেয় না.... এই গানের কয়েকটি লাইন বেশ কিছুক্ষণ হলো মাথায় বাজতেছে।তার মধ্যে উত্তরীয় দমকা হাওয়ায় গানের লিরিক পরিবর্তন হয়ে গেল... কেন ঝড় আসে...?!
ঝড় কি শুধু প্রকৃতিতেই আসে? নাহ!ঝড় আঘাত হানে মানবজীবনেও।দূর থেকে দেখা সুখী মানুষগুলোর জীবনেও হয়তো বড় কোন ঝড় এসেছিলো।কেউ হয়তো তা মোকাবিলা করে সামনে এগিয়ে গেছে আবার কেউ হয়তো তার মাঝেই বিলীন হয়ে গেছে।এইভাবে যাচ্ছে আমাদের দিনগুলো।
কয়েকদিন যাবৎ নিদ্রাহীনতায় কাটছে।অনেক চেষ্টা করেও ঘুমের দেখা পাচ্ছি না।পবিত্র রমজান মাস চলছে।ঘুম আসার চেষ্টা যখন ব্যহত হয় তখন ঠিক সেহরির আগ মুহূর্তে প্রবল ঘুমে আছন্ন হয়ে যাই তারপর আম্মুর ডাকে ঘুমের মায়াজাল কোন ভাবে কেটেই চলে যাই সেহরি খেতে। এবার যেটা হয়, নামাযের পর আর ঘুম আসে না। রাতটা কোন মতে কাটালেও দিন যে শুয়ে বসে কাটতে চায় না।সবাই ঘুম।সবাই ঘুমাচ্ছে তা ভেবেও অস্থির লাগে।তাছাড়া সকালের ঘুম যে আরামের এই হয়তো কেউ-ই অস্বীকার করবে না।
তবে আজকে ঝড়ময় আবহাওয়ায় আমি চলে গেলাম আমার বইয়ের সেল্ফের কাছে।কেন যেন মনে হচ্ছিলো এক কাপ চায়ের সাথে কোন একটা বই বেশ যাবে।চোখে পরল 'মানুষের গল্প ' বইটির দিকে।কোন এক বই মেলা থেকে শখ করে কিনেছিলাম বইটি।কিন্তু সময়ের যে বড্ড অভাব!প্রবলভাবে ছুটমান এই জীবনে সময়ের যে কি অভাব!আর স্বপ্ন তো সবাই দেখে।নিজের জীবনকে পরিবর্তন করার স্বপ্ন কারো হয়তো বড় আবার কারোটা হয়তো খুব ক্ষুদ্র।তবে সবাই কিন্তু চায় যে তার স্বপ্নটা পূরণ হোক! ক্ষুদ্র মানুষও মাঝে মাঝে অনেক বড় স্বপ্ন দেখে ।
জীবন নিয়ে এই এলোমেলো চিন্তাগুলো স্থির রেখেই শুরু করলাম বই পড়া।বলে রাখা ভালো এটা একটি অনুবাদ বই।অনুবাদ করেছেন আশফাক আহমেদ।ইউভাল নোয়া হারারির মানবজাতির সংক্ষিপ্ত ইতিহাস নিয়ে লেখা 'স্যাপিয়েন্স: এ ব্রিফ হিস্টোরি অফ হিউম্যানকাইন্ড' বইয়ের ভাবানুবাদ। ভাবানুবাদ কেন বললাম তার কারণ হিসেবে বলতে পারি, ইংরেজি লেখকের অনেক বইয়ের বঙ্গানুবাদ পরেছি আমি।কাঠখোট্টা বাংলা শব্দ উচ্চারণ বই পড়া আনন্দকেই উবে দেয়।সেক্ষেত্রে আশফাক আহমেদকে ধন্যবাদ দেয়া যেতে পারে।তার সাবলীল লেখার ধরন বা প্রত্যেকটা টপিক তার নিজস্ব ধারায় বুঝানো।যা অন্য একটা ভালো লাগার সৃষ্টি করেছে প্রতি মুহুর্তে।তাছাড়া যেকোন বয়েসের মানুষ কোন বাধা ছাড়াই বিজ্ঞানের কঠিন বিষয়গুলো সহজেই বুঝতে পারবে।ইতিহাস, বিজ্ঞান, দর্শন, অর্থনীতি সবকিছু মিলিয়ে ছোটদের জন্যও এই বইটি যথেষ্ট শিক্ষনীয়।বিজ্ঞান আর দর্শন যে পাশাপাশি যায় বা এদের মধ্যে যে সূক্ষ্ম পার্থক্য পরিলক্ষিত হয় তা অনেকে কাছে বোধগম্য হয় না।অনেকেই বিজ্ঞানের গল্পের বই পড়তে চায় না।তার মূল কারন হলো কঠিন বিষয়গুলো সব সময় তার মাধুর্য হারায়।তখন আর সেটা গল্পের বই থাকে না।হয়ে যায় পাঠ্যবইয়ে মতো ছন্দহারা।আর এখানেই তিনি সেরা।মূল বইটি এখনো পড়া হয়নি।জ্ঞান বিজ্ঞান নিয়ে যাদের নূন্যতম আগ্রহ আছে তাদের অবশ্যই জানার জন্য পড়াতে হবে।
তবে সূচিপত্র থেকে বুঝা যায়, লেখকের যথেষ্ট রসবোধ আছে! মানুষ হিসেবে আমাদের অপরাধসমূহ,এক গ্লাস অন্ধকার এ তার সাবলীল ব্যাখ্যা বেশ মনে ধরেছে! প্রবল আগ্রহে পুরো বইটি নিমিষেই শেষ করে ফেললাম।পড়া শেষে মনে হলো গল্পের ছলে বইটা শেষ।এবার মনে হলো রাজ্যের ঘুম উঁকি দিচ্ছে আমার দুইচোখ জুড়ে। এক চিলতে প্রশান্তি নিয়ে চলে গেলাম ঘুমের রাজ্যে....।
Hi @rodmila, your post has been upvoted by @bdcommunity courtesy of @rem-steem!
Support us by voting as a Hive Witness and/or by delegating HIVE POWER.
JOIN US ON