সকালের ঘুম যেন পৃথিবীর যে কোন কিছুর থেকে সবচেয়ে আরমদায়ক।কিছুটা আয়েশ করে আস্তে আস্তে নিজেকে জাগ্রত করি নতুন কিছু করা উদ্দীপনা নিয়ে।স্বভাবতই ঘুম থেকে উঠে যে কাজটি করি মোবাইল ফোনটা হাতে নিয়ে কিছুটা স্ক্রিনিং করি।সময়ের সাথে নিজেকে সচল রাখার জন্যই হয়তো এই আয়োজন করে ফোন দেখা বা সবকিছুর আপডেট চেক করা।
তবে আজ সকালে উঠে বরাবরের মতো দেখছিলাম।হঠাৎ সীতাকুণ্ডে আগুন লাগার খবরটা দেখতেই মনটা এত দূর্বল হয়ে গেল, কেন জানি মনে হলো যদি সবটাই যদি স্বপ্ন হত! বিষাদ নিয়ে উঠে নিজের বাকি কাজ করছিলাম।সাথে সাথে আপডেট নিউজগুলোতে চোখ রাখছিলাম।কেমন না ব্যাপারগুলো.... দাউ দাউ আগুনে জ্বলছে কত মানুষের বেচে থাকার স্বপ্ন।স্বপ্নগুলো পুড়ে যাওয়া কি এত সোজা? গতকাল শনিবার আনুমানিক রাত ১১টায় চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে এই অগ্নিকান্ড ঘটে। মুলত সেখানে বিএম কনটেইনার ডিপোতে এই বিস্ফোরণ ঘটে।কিছু লাইভ ভিডিও দেখে যা বুঝলাম,আগুন লাগার সাথে সাথেই এই মানুষ আহত বা নিহত হয়নি।আমরা হলাম হুজুগে বাঙালি! কোথায় কোন দূর্ঘটনা হলেই সেখানে সবাই এমন উপচেয়ে পরে ভিড় করে যে ফায়ার সার্ভিসের টিমই ঠিকমতো ঢুকতেই পারে না।এবার তার ভিন্নতা ছিলো না।
বিস্ফোরণ ঘটার কিছু আগেই ফায়ার সার্ভিসের দল যায়।সেখানে আশেপাশের মানুষজন সেখানের অগ্নিকাণ্ডের লাইভ ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তা শেয়ার করছিলো সাথে সাথেই।সাময়িকভাবে যখন আগুন যখন কিছুটা নিয়ন্ত্রিত মনে হলো ফায়ার সার্ভিসের টিমের সবাই একটু কাছে যেতেই বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে।এবং চারপাশ সব এমনভাবে কেঁপে ওঠে যে বাড়িঘরের জানালা–দরজার কাঁচ ভেঙে যায়।ধারণা করা হচ্ছে কম্পন তীব্রতা আশপাশের অন্তত চার বর্গকিলোমিটারের ও বেশি জায়গা জুড়ে হয়েছে।এখন কথা হলো কি ছিলো ঐসব কনটেইনারে?যাতে এত বড় বিস্ফোরণ ঘটে। আর মালিকপক্ষই বা কেন আগে জানায়নি যে সেখানে কি ধরনের রাসায়নিক দ্রব্য মজুত আছে?কি সহজভাবেই না আমাদের এই অসচ্ছল পরিবারের স্বপ্নগুলো ছাই হয়ে গেছে।উর্ধগতির এই বাজারে পরিবারের মাথাই যদি না থাকে কিভাবে চলবে তাদের দিন? তখন তাদের অন্ন জোগার করে দিবে কি এই কনটেইনারের মালিকগণ?
হয়তো বা মৃত্যুর খরচ হিসেবে কিছু দিবে,তারপর হয়তো আমরাই এই ঘটনা ভুলে যাবো!এভাবেই যে চলছে দিন….
এই সব আনমনা চিন্তায় হঠাৎ ফোন এল পরিচিত নাম্বার থেকেই।ফোন ধরতেই বান্ধুবী হাপাতে হাপাতে বললো আমাদের হলের এক আপু আজ সকালে নাকি সড়ক দূর্ঘটনায় মারা গেছেন।কিছুটা হতভম্ব হয়েই ফোন আবার নিউজ দেখেতে লাগলাম।আগের ঘটনার রেশ না কাটতেই আরেকটি খবর শুনে মনটা খুব বিচলিত হয়ে পড়ল।সাভারে দূর্ঘটনাটি ঘটে।একি হলের হলেও একি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইজন শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে সাথে আরো কয়েকজন।কই কিছুদিন আগেই তো আপুর সাথে কথা হলো, বিয়ে হবে তা নিয়ে আমরা কত মজা করলাম।আচ্ছা এটাই কি নিয়তি?
আজ সকালটা আর সকাল ছিলো না।এমন সকাল আসুক তাই চাই সৃষ্টিকর্তার কাছে।স্বজনহারা মানুষদের তিনি শক্তি দিন কঠিন সময়টা পার করা।আর যারা চলে গেছে আমাদের ছেড়ে আর সেই অনাগত প্রাণ যে আপুর ভিতরে বসে অপেক্ষা করছিলো পৃথিবীতে আসার,সবাই যেন যেখানে থাকে সর্বোচ্চ ভালো থাকে এই কামনাই করি।
আসলে জীবনটা কেমন যেন স্কুইড গেমের মতো লাগছে।কেউ বিলিং ভেঙে মারা যাচ্ছে, কেউ বা রাস্তায় পিষে সাথে এবার হলো কেমিক্যাল বিস্ফোরণে।গত দুবছর ছিলো করোনার কঠিন দুর্দশা।কেউ কেউ মরে যাচ্ছে!যারা টিকে যাচ্ছে তাদের অন্য কিছু পার হতে হবে হয়তো।কিন্তু শেষটা হয়তো এভাবেই হবে!আর এটাই যে জীবন।
পূজা ম্যাম আমাদের অনেক প্রিয় ছিলো। খুবই বন্ধুসুলভ ছিলো সে। আমরা মেনে নিতেই পারতেছিনা তার এভাবে চলে যাওয়া।
কাছের মানুষ চলে যাওয়া কষ্ট অনেক কঠিন! :( আপু যেখানেই থাকুক ভালো❤️
Congratulations @rodmila! You have completed the following achievement on the Hive blockchain and have been rewarded with new badge(s):
Your next target is to reach 500 upvotes.
You can view your badges on your board and compare yourself to others in the Ranking
If you no longer want to receive notifications, reply to this comment with the word
STOP
To support your work, I also upvoted your post!
Check out the last post from @hivebuzz:
Support the HiveBuzz project. Vote for our proposal!