আমার মতে একটা মানুষের জীবনকে ৩ ভাগে ভাগ করা যায়৷ প্রতি ভাগে ২৫ বছর করে পড়ে৷ অর্থাৎ প্রথম ভাগ হল ০ থেকে ২৫। দ্বিতীয় ভাগে ২৬ থেকে ৫০ আর তৃতীয় ভাগে ৫১ থেকে ৭৫। কোনো ধরনের দূর্ঘটনা না ঘটলে ঘুরে ফিরে ৭৫ বছর বয়স পর্যন্তই মানুষ টিকে থাকে। এরপর যে কয়েক বছর বাঁচা সম্ভব, সেইটা বোনাস। বেঁচে থাকা কিংবা না থাকাটা এতটাও গুরুত্বপূর্ণ না ৭৫ এর পর।
আমার জীবনের ৩ ভাগের প্রথম ভাগ বহু আগেই পার করে চলে এসেছি। এমুহুর্তে আছি দ্বিতীয় ভাগে৷ ২৮ পূর্ণ করে ২৯ বছরে চলে আসলাম আজ। বেঁচে থাকলে আগামী বছরের এই দিনে ৩০ এর ক্লাবে ঢুকে যাবো৷ সময়গুলো যেন দ্রুত পার হয়ে যাচ্ছে। ধরে রাখা সম্ভব হচ্ছে না। দিন যত যাচ্ছে, পৃথিবী থেকে হারিয়ে যাওয়ার সময়টাও কিন্তু একটু একটু করে ঘনিয়ে আসছে৷ ভাবতেও কেমন লাগে, তাই না?
২৯ বছরের জীবনে কতশত স্মৃতি জমে আছে মাথায়, তার কোনো ইয়াত্তা নাই। কিছু স্মৃতি মজার, আনন্দের। কিছু আবার দুঃখ কষ্টের। সবকিছু মিলিয়েই জীবন। কিন্তু যদি প্রশ্ন করা হয়, আপনার যে স্মৃতিগুলো এখনো মনে আছে, সেসবের মাঝে একদম প্রথম স্মৃতি কোনটা? তাহলে তো অবশ্যই কনফিউজড হয়ে যেতে হবে, তাই না?
অন্যদের কথা বাদ দিই, মাঝে মাঝে তো আমি নিজেও কনফিউজড হয়ে যাই। এই যেমন আমার ছোটবেলার সবচেয়ে পুরানো ছবি যেটা আমার মনে আছে, সেইটা হল মায়ের সাথে নতুন বাড়ি দেখতে যাবার মুহুর্তটা। মাটির তৈরি একটা দুই রুমের ছোট ঘর। উপরে ছনের ছাদ। আম্মু একটা পিড়িতে বসে আছে আর আমি কয়েকটা সমবয়সী বাচ্চার সাথে উঠান জুড়ে দৌড়াচ্ছিলাম। সেসময় আমার বয়স কত হবে? সম্ভবত তখনোও স্কুলে ভর্তি হই নি। কারণ সেই নতুন মাটির বাড়িতে উঠার কিছুদিন পরেই আমি স্কুলে ভর্তি হয়েছিলাম, তাও শিশু শ্রেনীতে।
খুব সম্ভবত সেদিনের সেই স্মৃতিটুকুই আমার জীবনের মনে রাখা একদম প্রথম স্মৃতি। এর আগের কোনো গল্প আমার মনে নেই, তবে বড় ভাই ও মায়ের মুখে টুকটাক কিছু গল্প শুনেছিলাম। কিন্তু শত চেষ্টায়ও সেসবের কিছু কখনো মনে আনতে পারি নি৷
আরেকটা স্মৃতি মনে পড়ে। একটা পাখির জানাজা দেবার দৃশ্য। পাখিটার নাম ভুলে গিয়েছি। তবে একদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে আবিষ্কার করলাম উঠানের এক কোনায় ছোট একটা পাখি মরে পড়ে আছে৷ সবাইকে ডেকে নিয়ে এসে সেই পাখিটাকে কবর দিয়েছিলাম। কবর দেয়ার আগে অবশ্য নিজেদের মতো করে জানাজাও পড়েছিলাম। সেইটাই ছিল আমার জীবনের প্রথম কোনো জানাজার নামাজ পড়া৷ পরবর্তীতে এসে বুঝতে পেরেছিলাম যে এই নামাজ পশুপাখির জন্য না, শুধু মানুষের জন্য প্রযোজ্য৷ এরপর শুধু মানুষেরই জানাজার নামাজ পড়া হয়েছে।
আরো কত শতো স্মৃতি কিংবা গল্প যে মাথার ভেতর চুপচাপ লুকিয়ে আছে, তার ইয়াত্তা নাই৷ চুপচাপ থাকতে থাকতে সেইসব স্মৃতিগুলোর উপর হয় ধুলো জমে যায়৷ কিন্তু কোনো একদিন দেখা যায় যে হুট করে সেইসব ধুলো জমে থাকা স্মৃতিগুলো বেড়িয়ে আসে। নস্টালজিক একটা অনুভূতির জন্ম দিয়ে যায়৷
যায় হোক, কী লিখতে বসে কী লিখে ফেলছি৷ এই লেখাটা অবশ্য গতকাল লেখার দরকার ছিল। কারণ আমার জন্মদিন ১৪ই এপ্রিল, অর্থাৎ বাংলা নববর্ষের দিনে৷ যদিও সার্টিফিকেট অনুসারে অন্য একটা তারিখ দেয়া আছে৷ ক্লাস নাইনের রেজিস্ট্রেশনের সময় ভুল করে ভুল তারিখ জন্মদিনের জায়গায় বসিয়ে দেয়া হয়েছিল। সেই ভুল জন্মতারিখটা এরপর আর কখনো সংশোধন করা হয় নি। উলটা সেই ভুল জন্মতারিখই যেন আজ আমার আসল জন্মতারিখ হয়ে গিয়েছে৷
আর কী লিখব! তারচেয়ে বরং নিজেকে শুভেচ্ছা জানিয়ে লেখাটা শেষ করে দিচ্ছি। "শুভ জন্মদিন রেজা। বৈশাখের প্রথম দিনে যার জন্ম, তার জীবন তো বৈশাখের মতোই হবে। কখনো রোদ, বৃষ্টি কিংবা কাল বৈশাখী ঝড়। সব কিছু মিলিয়েই তো জীবন। কোনো ভাবেই ভেঙ্গে পড়া যাবে না।"
Hi @reza-shamim, your post has been upvoted by @bdcommunity courtesy of @rem-steem!
Support us by voting as a Hive Witness and/or by delegating HIVE POWER.
JOIN US ON
Hey @reza-shamim!
Actifit (@actifit) is Hive's flagship Move2Earn Project. We've been building on hive for almost 5 years now and have an active community of 7,000+ subscribers & 600+ active users.
We provide many services on top of hive, supportive to both hive and actifit vision. We've also partnered with many great projects and communities on hive.
We're looking for your vote to support actifit's growth and services on hive blockchain.
Click one of below links to view/vote on the proposal:
Congratulations @reza-shamim! You have completed the following achievement on the Hive blockchain And have been rewarded with New badge(s)
Your next target is to reach 56000 upvotes.
You can view your badges on your board and compare yourself to others in the Ranking
If you no longer want to receive notifications, reply to this comment with the word
STOP
Check out our last posts:
Support the HiveBuzz project. Vote for our proposal!