ইংকটবেরের মধ্যাংশ

in BDCommunity22 days ago

ইংকটবেরের মাঝের দিনগুলো নিয়ে লেখা এই পোস্ট। ইংকটবের করতে গিয়ে পেইন্টিং এ অনেক ধরণের ইম্প্রভমেন্ট চলে আসে। আমি একদমই সাদামাটা করে আঁকার চেষ্টা করি। এরপরেও একটা কাজ যখন রেগুলার বেসিসে করা হয় তখন সেই স্কিল ইম্প্রুভ হবেই! এজন্যই হয়তো বলা হয় কোন কিছুতে এক্সপার্ট হতে গেলে কম করে হলেও প্রতিদিন প্র্যাকটিস করতে!

Day 11
Theme : Snacks

IMG_20241011_222906.jpg

ah, my weakest point!!!
এই হাবিজাবি খাওয়ার লোভ আজ পর্যন্ত সামলাতে পারলাম না! আমার IBS আছে বলে ডাক্তার বার বার বলে দিয়েছে জাঙ্কফুড খাওয়া বারণ। এরপরেও চিপস বা সিঙ্গারা দেখলে নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারি না। আল্লাহ সহায় হউ!

Day 12
Theme: Remote

IMG_20241016_002604.jpg

কোনো remote জায়গায় বাসা করার কথা ভাবলেই আমার "Up" সিনেমার কথা মনে পড়ে। আমার মতন এই স্বপ্ন হয়তো অনেকেরই। পাহাড়ের উপর ছোট্ট সুন্দর একটা বাড়ি। যেখানে ঢাকার দূষিত বায়ু আর শব্দ থাকবে না। করোনা, ডেংগু এসব রোগে মারা পড়ার ভয় থাকবে না। দিনরাত কন্সট্রাকশনের শব্দে মাথা ধরবে না। প্রাণ খুলে একটু নিঃশ্বাস নিতে পারবো! সব ধরণের অস্থিরতা থেকে একটু রেহাই পেতে পারবো।
এমন জায়গায় সারাজীবন থাকতে না পারলেও বছরে একবার গিয়ে যদি কিছুদিন থেকে আসা যায় তাও নিজেকে ভাগ্যবান বলে মনে হবে!

Day 13
Theme: Horizon
IMG_20241016_002707.jpg

horizon সব থেকে ভালমতন উপভোগ করা যায় সমুদ্রের পাড় থেকে। পানিতে ডুবতে থাকা সূর্য দেখার মতন সৌন্দর্য খুব কম জিনিসেই আছে! হালকা মিষ্টি রোদে সমুদ্রের চিকচিক পানির দিকে সারাদিনই চাইলে তাকিয়ে থাকা যায়! ছোট ছোট ঢেউয়ের শব্দ মনের অজান্তেই ভেতরটা ফাঁকা করে দেয়, ভাবিয়ে তুলে বা অন্য কোন জগতে নিয়ে যায়!

Day 14
Theme: Roam
IMG_20241016_002756.jpg
ঘোরাঘুরির জন্য সাইকেল আমাকে সব থেকে বেশি টানে! অন্যান্য ট্রান্সপোর্টের তুলনায় সাইকেল স্লো বলে আস্তে ধীরে প্রকৃতি দেখতে দেখতে চালানো যায়। ছোট থেকে গাছগাছালির মধ্যে বড় হয়েছি বলে এর ভেতর দিয়ে সাইকেল চালাতে অন্যরকম একটা ভালোলাগা কাজ করে। প্রতিটা ঋতুর যে একটা আলাদা ঘ্রাণ আছে এটা কয়জনই বা নেয়ার সুযোগ পায়!

এছাড়া সাইকেলে নিজেকে স্বাধীন লাগে! পাখিরা উড়তে গিয়ে যেরকম স্বাধীনতা ফিল করে অনেকটা সেরকম হয়তো!

Day 15
Theme: Guidebook

IMG_20241016_002836.jpg
ইন্টারনেট চলে আসার পর থেকে কোন কিছু জানার জন্য আমাদের গাইডবইয়ের উপর নির্ভরতাটা কমে এসেছে। আগে পড়াশোনা, রান্নাবান্না, ট্রাভেল সবকিছুর জন্যই গাইডবুকের উপর নির্ভর হতে হতো। এখন কিছু লাগলে তা ইন্টারনেটে খুঁজলেই বের হয়ে আসে। ইনফরমেশন পাওয়া এখন সহজ হলেও গাইডবুকের উপর একটা আলাদা দুর্বলতা কাজ করে। হাইলাইট করা, বুকমার্ক, নোটডাউন করে রাখা এসব কিছুতেই একটা নিজস্বতা আছে, পরবর্তীতে যা ঘেঁটে দেখা যায়। যেই সুযোগটা ইন্টারনেটে তেমন পাওয়া যায় না।

Day 16
Theme: Grungy

IMG_20241016_184546.jpg
পুরানো বোতলকে একদম পরিষ্কার করে রঙ করে নানা রকমের ডিজাইন করাই হলো আমার কাজ। এই প্রসেসের সবচেয়ে কঠিন পার্টই হলো ময়লা বোতলটাকে ভালো মতন ক্লিন করা। বোতলের স্টিকার তুলে আঠা তুলতেই মাঝে মধ্যে আধা ঘন্টার মতন সময় লেগে যায়।
কিন্তু কাজ শেষে যখন কালারফুল বোতলটাকে শেলফে সাজায় রাখি তখন দেখতে কেমন যেনো একটা শান্তি শান্তি লাগে!

Day 17
Theme : journal
IMG_20241017_191603.jpg
আমার ডায়েরি লেখার অভ্যাস ক্লাস ওয়ান থেকে। ৫ বছর বয়সের ছোট হলুদ ডায়েরিটা সেদিনও ঘেঁটে দেখাচ্ছিলাম।

এত ছোট বয়স থেকেই লেখার অভ্যাস হয়েছে আম্মু আর বাবার কারণে। দুইজনকেই নিয়মিত ডায়েরি লিখতে দেখতাম। ওইখান থেকেই আমার আগ্রহটা জন্মে।

গুড নিউজ এটাই ডায়রি লেখাটা এখনও ছাড়ি নাই! যদিও আগের মতন খুব বেশি লেখা হয় না তবুও টুকটাক সুযোগ পেলে লিখে ফেলি।

আমার নতুন জমানো ডায়েরি থাকলেও বিয়ের ঠিক পরপরেই ও একটা ডায়েরি কিনে দেয়। এত থাকা সত্ত্বেও একটু এস্থেটিক ডায়েরি পেলে আমিও লোভ সামলাতে পারি না, কিনে ফেলি।

জার্নালিং করার একটা বড় সুবিধা হলো মেমোরিগুলা ধরে রাখা যায়। ছবিতে যেখানে মোমেন্ট ক্যাপচার হয়, ডায়েরিতে হয় অনুভুতি!

Day 18
Theme: drive
IMG_20241018_222020.jpg
আমি ড্রাইভিং শিখি ৬ বছর আগে। বাবা নতুন গাড়ি কিনে নিজে মাত্র ড্রাইভিং শিখেছে। এরপরেই আমাকে শেখানোর দায়িত্বে নামে৷ বাবার গাড়ি হলো অতি আদরের জিনিস। ৬ বছর পরেও যেটা এখনও আগের মতন আছে। গাড়ির প্রতিটা জিনিসের উপরেই বাবার এত যত্ন যে গাড়ির দেখে কেউ বলবে না এর এত বয়স হয়েছে।

আমাকে বাবা প্রথম ড্রাইভিং শিখায় বিশাল বড় এক মাঠে। দুইদিন পর রাস্তায় ট্রাই করা হয়। তবে আমার এলাকার রাস্তা ছাড়া কখনওই মেইন রোডে চালানোর সাহস হয় নাই। বাবার অতি সতর্কতার কারণে আজ পর্যন্ত ৩০/৪০ এর উপর টানতে পারি নাই৷ একটু স্পিড দিলেই বাবা বলতো - এই যে ইয়াং মানুষরা এক্সিডেন্ট করেই এই কারণে। খালি মন চায় একটু স্পিড বাড়াই, জোশ ফিলিং লাগবে। কিন্তু স্পিডের উপর কন্ট্রোল রাখতে পারাটাই ভাল ড্রাইভিংএর লক্ষণ!

Day 19
Theme: Ridge
IMG_20241019_134644.jpg
লাস্ট তিনদিন পঞ্চগড় আর তেঁতুলিয়ায় থাকা হয়েছে। ফ্যামিলি ট্রিপে। ছোট্ট, সুন্দর, ঝামেলা ছাড়া একটা ট্যুর ছিল। পঞ্চগড়ে আহামরি বড় তেমন কিছু দেখার মতন নাই।

তবে টুরিস্টদের মধ্যে রিসেন্টলি যেই হাইপ হয়েছে সেটা হলো কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা। শীতের শুরুতে আর শেষের দিকে আকাশ পরিষ্কার থাকলে ভোরবেলায় কাঞ্চনজঙ্ঘার রিজলাইন দেখার সম্ভাবনা থাকে। আমরা দেখি নাই, দেখার ট্রাইও অবশ্য করি নাই। আমার কাছে এই জিনিস দেখতে যাওয়া একটু ওভারহাইপ লেগেছে। এত দূর থেকে পাহাড় দেখা মনে হয় না worth it, খালি খালি মনের মধ্যে পাহাড়ের কাছে না যেতে পারার আফসোস থেকে যাবে।

কিন্তু ওখানকার স্থানীয়রা বার বার বলে দিয়েছে ওয়েদার ভালো দেখে আবার শীতের শেষের দিকে আসতে, যাতে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখে যেতে পারি 😄 কিন্তু ১০/১১ ঘন্টা ট্রেন জার্নিটাই একটু কষ্টকর। পরেরবারের জন্য নীলফামারি, ঠাকুরগাঁও আর দিনাজপুর লিস্টে রেখেছি।

পুনশ্চঃ ট্রেনের ঝাকুনির মধ্যে আঁকা বলে তেমন একটা ভালো হয় নাই।

Day 20
Theme : Uncharted
IMG_20241020_234720.jpg

ভারত হয়ে পঞ্চগড় দিয়ে দুইটা বড় বড় নদী আমাদের দেশে ঢুকেছে। মহানন্দা আর করতোয়া। এতদিন বইপত্রে পড়ে আসা বিশাল বড় খরস্রোতা নদী সামনাসামনি দেখবো বলে এক্সাইটেড ছিলাম। কিন্তু গিয়ে নদীর অবস্থা দেখে আমাদের সবারই মন খুব খারাপ হয়ে গেলো। পাহাড়ি ঝিরিপথের মতন নদীর পানির ধারা৷ নদী এতটাই অগভীর, যে বৃষ্টি হলে আমার বাসার গলিতেই এর থেকে বেশি পানি উঠে।

এত বেহাল দশার প্রধান কারণ ইন্ডিয়া বাঁধ দিয়ে পানি আটকে রাখা। আর নদীর ঠিক ওপারেই ইন্ডিয়ার বর্ডার। যে বর্ডার প্রতিনিয়ত নতুন করে আমাদের দিকে চাপছে। ওরা এখন দাবী করছে এই নদীর পুরা জায়গাটাই তাদের। আমাদের এপাশ থেকে কয়েকজন মিলে পানিতে নামলেই ওরা স্পিডবোর্ড নিয়ে তাড়াতে চলে আসে। নদীর পথ দিন দিন যত পরিবর্তন হয়ে আমাদের পাড় ভাঙ্গবে ততই তাদের সীমানা বাড়তে থাকবে। এই যথেচ্ছাচায় কারও কিছু বলার নাই, করার নাই। কি অদ্ভুত!

আমার বোন আজকে বলছিল ইন্ডিয়া দখল না করলেও কি আমরা নদী ঠিক রাখতে পারতাম? যেভাবে বালু আর পাথর তোলার ব্যবসা শুরু হয়েছে কতদিনই বা আর এই নদী ভালো থাকতো?
নদীর অবস্থা দেখে মনে হলো আর দুই এক বছরের মধ্যেই এই নদী হয়তো বাংলাদেশের ম্যাপে uncharted অবস্থায় চলে আসবে।