প্রাক আলাপ: বাবু হওয়ার পর আঁকাআঁকি এবং লেখা দুইটাই অলমোস্ট ছেড়ে দিতে হয়েছিল। নিজের একদম বেসিক কাজ গুলার জন্যই সময় বের করতে পারছিলাম না, সেখানে লেখালিখি বিলাসিতা! নিজের পছন্দের কাজগুলা করতে পারছিলাম না বলে মাঝে মাঝে খুব মন খারাপ হতো। ইংক্টবের করবো এটা মাথায়ও আনি নি। পরে পরিবারের দেয়া ইন্সপাইরেশন থেকে মনে হলো আচ্ছা ট্রাই করে দেখি। আসলেই সময় আলাদা করে বের করে নিতে কষ্ট হচ্ছে কিন্তু নিজের মধ্যে পরিচিত একটা উত্তেজনা অনেকদিন পর টের পাচ্ছি। এই good feeling টার জন্য হলেও ইনক্টবের শুরু করা একটা good decision ছিল। দেখা যাক কতদিন continue করতে পারি!
Day 01
Theme: Moustache
গোঁফ জিনিসটা নিয়ে ভাবতে গেলে বাবার কথা সবার আগে মনে পড়ে। বাবাকে গোঁফ ছাড়া আসলে কল্পনা করতে পারি না। গোঁফ নিয়ে বাবার ভালবাসা ছোট থেকে দেখে আসছি।
বাবার ছোট্ট চিকন একটা গোঁফ কাটার কাঁচি ছিল। আমাদের সেই কাঁচি ধরা ছিল একদম বারণ। কিন্তু মাঝে মধ্যে ক্রাফটিং করতে গেলে ওই কাঁচিটার দিকেই আমার নজর যেতো। লুকায় লুকায় ব্যবহার করলেও বাবা কেম্নে কেম্নে জানি বুঝে যেতো যে আমরা কোনো অকাম করেছি।
গোঁফের প্রতি যে আলাদা যত্ন নিতে হয় এটাও বুঝতাম বাবাকে দেখে। বাবা খুব সুন্দর করে গোফ ছাঁটতো। আম্মু বাবার চুলে কলপ দিয়ে দেয়ার সময় গোঁফেও সাবধানে লাগিয়ে দিতো।
এখন হাজার ব্যস্ততার কারণে বাবাকে আলাদা করে আর গোঁফের পেছনে সময় দিতে দেখি না। তবে এলোমেলো ছোট বড় গোঁফেও বাবাকে সুন্দর মানায় যায়। সেই গোঁফ আঁকার একটা চেষ্টা করলাম 💙
বি.দ্র. আঁকা খারাপ হওয়ার সব দোষ এখন থেকে বাবুকে দিতে পারবো, শান্তি 😌

Day 02
Theme : weave
আমার লাইফের রোল মডেল হিসেবে আমি নানিকে দেখি। ৭৫ বছর বয়সেও নানি একা হাতে সব করতে পারে। এত workaholic! plus perfectionist. নানির রান্না থেকে শুরু করে গাছ লাগানো, ঘর গুছানো, পরিপাটি থাকা, সবাইকে দেখে রাখা, ঘুরতে যাওয়ার স্পিরিট সবকিছুতেই আমার মুগ্ধতা কাজ করে। চেষ্টা করি নানির মতন সব কিছু গুছায় সামলে রাখার। পারি না।
নানির একটা বড় গুণ আছে। জামা কাপড় থেকে শুরু করে উলের সোয়েটার সব কিছুই নানি খুব চমৎকার করে বানাতে পারে৷ আমরা নানির বানানো জামা পড়েই বড় হয়েছি। প্রতি জন্মদিনে নানি আমাদের দুই বোনকে ম্যাচিং করে জামা বানায় দিতো৷
বাবু হওয়ার আগ থেকেই নানিকে গুতাচ্ছিলাম রিদার জন্য কিছু বানায় দিতে। বড় মার বানানো জামা পড়বে! বাবুর কত বড় সৌভাগ্য!
তবে জামার থেকেও নানির বানানো উলের সোয়েটার দেখে খুব অবাক হতাম। crocheteing এর প্যাঁচ আমি পারিই না! নানির থেকে একবার শেখার চেষ্টা করেছিলাম, লাভ হয় নাই। নানা, মামা সবাই নানির বানানো সোয়েটার পরেছে। উত্তরাধিকার সূত্রে বাবুও নানির থেকে দুইটা সোয়েটার পেলো। এত সুন্দর জিনিস আমার বাধাই করে রাখতে ইচ্ছা করে!
আল্লাহ নানা নানিকে নেক হায়াত দান করুক! সুস্থ রাখুক 💙

