হেলোও, আসসালামু। সবাই কেমন আছেন?আশা করছি সবাই ভালো আছেন।আমিও আলহামদুলিল্লাহ্ ভালো আছি।
আজ আমি আপনাদের সামনে উপস্থিত হয়েছি আমাদের বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা একটি জনপ্রিয় কবিতা নিয়ে।অর্থাৎ আমি আজকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জনপ্রিয় একটি কবি আবৃত্তি করেছি।আশা করি আমার আবৃত্তিটি সবাই শুনবেন।
কবিতার নামঃ অচলা বুড়ি
কবির নামঃ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
আবৃত্তিতেঃ নূসুরা নূর
My Poetry Recitation Video Link
এই অচলা বুড়ি কবিতাটা ছন্দে ছন্দে সহজ ভাষার হলেও এর ভেতরকার মূল অর্থ বেশ জটিল।আর এ জটিলতাকে কবি নিজের জ্ঞানের মাধ্যমে সহজ ভাষায় রূপান্তরিত করলেও এই জটিলতা এমন যে শুধু কবিতাটি শুনলেই আপনি এর অর্থ খুব একটা ঠাহর করতে পারবেন না। হয়তো অনেকেই পারবেন।কিন্তু আমি আপনাদের সুবিধার্তে কবিতাটির অল্পবিস্তর মূলভাব আমার ক্ষুদ্র জ্ঞান দিয়ে আমারই লেখার মাধ্যমে তুলে ধরছি।
কবি তার এই অচলা বুড়ি কবিতার প্রথম লাইনে বুঝিয়েছেন, একজন বুড়ি সে অচলা প্রায় কিন্তু তার মুখটা সবসময় হাসিতে ভরে থাকে।বুড়ি অচলা প্রায় হলেও তার মুখ খানি একেবারে স্নেহেতে পরিপূর্ণ এবং তার মনটাও তেমনটাই কোমল।তার এমন অচলা প্রায় শরীর হলেও সে একবার পথের ধারে পরে থাকা এক কুকুরকে সুস্থ করে বাঁচিয়ে তুলেছিলো যাকে গাড়ি চাপা দিয়ে গিয়েছিলো।কুকুরটি পুরোপুরি সুস্থ হয়নি তবে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাটতে পারতো আর তখন থেকেই সে ই একমাত্র বুড়ির চলার পথের নিত্যসহচর হয়ে যায়।বুড়ির একটা মেয়ে ও ছিলো তবে তার বাড়ি বুড়ির বাড়ি থেকে বেশখানিকটা দূরেই।পাড়ার দাদাঠাকুর বুড়িকে জিজ্ঞেস করতো, বুড়ির কত টাকা জমলো আর এই টাকা বলতো ওই টাকা তো আর সঙ্গে যাবেনা অর্থাৎ মৃত্যুর টাইমে টাকা যাবেনা কিন্তু বুড়ি বলতো যে টাকার তো দরকার খুব তাই সে টাকা ধার দেয়না , জমিয়ে রাখে।
এরপর কবি কবিতার দ্বিতীয় প্যারার ছন্দে বুঝালো এক পাড়ার কথা,পাড়ার নাম সাঁৎরাপাড়া আর সে পাড়ার কায়েত বাড়ির বিধবা এক মেয়ে ছিলো। সে মেয়ে বিয়ের আগে বাবার বাড়িতে খুব সুখে ছিলো কিন্তু বিয়ের পরেই স্বামী মারা গেছে সাথে বাবাও মারা গেছে আর ভাইরাও ঠাঁই দেয়না। সে কারণে তার অভাব বা দুঃখ কোনোটার ই শেষ নেই।কিন্তু শেষকালে সে আর ক্ষুদার জ্বালা সহ্য করতে না পেরে হাসপাতালে রুগীর সেবা করার কাজ নেয়।এই চাকরি নেওয়ার কারণে পাড়ার লোকরা মেয়েটিকে অনেক তুচ্ছতাচ্ছিল্য করলো,অপমান করলো।কিন্তু অচলা বুড়ি সে মেয়েটির পাশে ছিলো এবং তাকে বলে, তুই খুব ভালো করেছিস কারণ ভিক্ষা করার চেয়ে অসুস্থ মানুষদের সেবা করা অনেক উত্তম।
তৃতীয় প্যারায় কবি তুলে ধরেছেন আগেকার সময়ের গরীব বা কম ক্ষমতাবানদের উপর বেশি ক্ষমতাবানদের প্রভাব বা জোর খাটানোটা কেমন ছিলো তা।এই ব্যাপারটি বুঝাতে কবি এক গল্প বলেছেন আর তা হলো, এক জমিদারের মায়ের শ্রাদ্ধের বেগার খাটার জন্য এই রাই ডোমনি নামক ডোমনির ছেলেকে ডাকলো কিন্তু তা সে উপেক্ষা করলো কারণ তার কাজ ছিলো।সেই কারণে রাজা বললো যে ওই ডোমনির ছেলেকে শাস্তি দেওয়া হবে।আর শাস্তি দিলো ও।শাস্তি হলো সাত বছরের জেল আর সে অপমান সহ্য করতে না পেরে ছেলেটির মা রাই ডোমনি সে পাড়া ত্যাগ করলো।সেই ডোমনিকেই বুড়ি প্রত্যেক মাসে মাসকাবারের জিনিষপত্র দিয়ে আসে। আর তা দেখেই গ্রামের এই শম্ভু নামক লোক বুড়িকে খোটা দিয়ে বললো তার এতো দরদ কিসে।তার উত্তরে বুড়ি বললো, যারা তাকে এই দুঃখ দিয়েছে তাদের পাপের বোঝা হাল্কা করতেই বুড়ি ওই ডোমনির কাছে যায়।
অর্থাৎ বুড়িটি অচলা প্রায় কিন্তু অন্য সব চলতে পারা মানুষদের চেয়ে হাজার গুণে উত্তম তিনি,সেই কারণেই তিনি কবির কবিতার অংশ হতে পেরেছেন।
আমি কবিতাটি সম্পূর্ণ আবৃত্তি করিনি কারণ সম্পূর্ণ আবৃত্তি করলে কবিতাটি অনেক বড় হওয়ার কারণে আপনারা বিরক্ত হয়ে যেতেন।আর আমি চাইনা আমার কারণে কেও বিরক্ত হোক।তাই আমি কবিতার বেশ কিছুতাই আবৃত্তি করেছি এবং আমি যতটুকু আবৃত্তি করেছি ততটুকুর মূলভাব ই আমার পোস্টের মাধ্যমে আপনাদের সামনে তুলে ধরেছি।
আশা করি পোস্টটি সবাই পড়েছেন।অবশ্যই জানাবেন আপনাদের অভিব্যক্তি।আমি কবিতাটি পড়ে যা বুঝেছি সে অনূযায়ীই কবিতাটির মূলভাব হিসেবে আপনাদের জন্য লিখেছি।তাই বলছি যদি আমার লেখায় কোনো ভুল থেকে থামে তাহলে অবশ্য সে ভুলটি আমাকে ধরিয়ে দিবেন এবং আমার ভুলটি আমি যেনো শুধরাতে পারি সে সুযোগটি আমাকে করে দিবেন।ধন্যবাদ সকলকে আমার পোস্টটি পড়ার জন্য।
লিখাঃ নূসুরা নূর।
চমৎকার আবৃত্তি করেছেন
thank you.