হেলোও,আসসালামু আলাইকুম।সবাই কেমন আছেন?
আজকে আমি আপনাদের সাথে আমার লেখা একটি গল্প শেয়ার করছি।গল্পটির আজকে অষ্টম পর্ব চলছে।এর আগের পর্ব গুলো আমার এই আইডিতেই পেয়ে যাবেন।আশা করছি সবাই পড়বেন,
গাছটি ছিলো সম্পূর্ণ বিভিন্ন রকমের, বিভিন্ন সাইজের পোকা মাকড়,সাপ,জোঁক ইত্যাদিতে ভর্তি।আর সেই গাছের শিকড় রুমাকে তুলতে হবে।শিকড়টা তুলতে হবে প্রথমে এসব পোকামাকড় সবকিছু হাত দিয়ে সরাতে হবে।রুমা একটু সামনে এগুতেই দেখলো গাছের গোরাতে ভয়ংকর বিষাক্ত সব বিচ্ছু হাটাহাটি করছে।হাত দিতে গেলেই এগুলো হাতের শেষ রক্ষা হতে দেবেনা।তাও রুমা চোখ মুখ বন্ধ করে গাছে হাত লাগালো কিন্তু হাত লাগাতেই তার হাতের মুঠোতে আসলো অসংখ্য বিচ্ছু,সাপ। সে আতঁকে উঠে হাত সরিয়ে ফেললো।তার ইচ্ছা করছি সে যেনো কোনোভাবে নিজের প্রাণটাকে হত্যা করে ফেলে।দুর্বিষহ এই জীবন তার আর সহ্য হচ্ছেনা।তাও সে চোখ মুখ বন্ধ করে মাটি খুঁড়ে একটা লম্বা শিকড়ে হাত ঠেকতেই শিকড়াতে টান দিয়ে উপড়ে নিয়ে আসলো।হাত বের করে দেখে তার হাত দিয়ে রক্ত পড়ছে আর রক্ত খাচ্ছে ছোট ছোট পোকা। সে তাড়াতাড়ি শাড়ির আচল দিয়ে সব কিছু ঝেরে ফেললো আর শিকড়টা নিয়ে দৌড়ে একটু দূরে চলে আসলো। এসেই মাটিতে বসে পড়লো আর চিৎকার করে করে কাঁদতে লাগলো।সে শুধু একটা কথাই ভাবছে, এসব কি থেকে কি হয়ে গেলো!কেনো তার জীবনটা এমন হলো! কেনো সে আর দশটা সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের মতো জীবন চালাতে পারছেনা!এরপর সে আস্তে আস্তে মাটি থেকে উঠে দাঁড়ালো এরপর হাত উলটে চোখের পানি মুছলো।এখন আর কাজ এই শিকড় থেকে একটা চারা জন্মানো। সে শিকড়টি মাটিতে পুতে দিলো আর ওই কালো পানি থেকে কিছু পানি নিয়ে শিকড়ের গোরায় দিলো।কিন্তু কি অদ্ভুত ব্যাপার শিকড়টি বারবার হেলে এক সাইডে পরে যাচ্ছে।হঠাৎ এক অদৃশ্য কণ্ঠ গর্জে উঠলো।বলতে লাগলো, " এই গাছ বাড়ে রক্তে,মনুষ্য রক্তে। পানিতে হবে না, কখনোই হবেনা। "
এই কথা বলতেই হো হো করে অট্টহাসিতে ফেটে পড়লো আর পরক্ষণেই কণ্ঠস্বরটা হাওয়ায় মিলিয়ে গেলো।
এরপর পাশ থেকে এক হাড়ের মতো শক্ত কিছু একটা কুড়িয়ে নিলো রুমা।ভালো ভাবে খেয়াল করতেই বুঝলো এটা একটা দাঁত তবে মানুষের নয়।অনেক লম্বা দাঁত আর খুব বেশি ধারালো।তার মনে হলো হয়তো এটা ওই নেকড়ে মানবদের ই দাঁত।সে এইবার আস্তে আস্তে চোখের পাতা বন্ধ করলো,হাতের উপর দাঁতটি রাখলো আর রেখেই শক্ত ভাবে চেপে খুব জোরে একটা টান দিলো।টান দিতেই হাতের দুই পাশের চামড়া দুই দিকে সরে গিয়ে গল গল করে রক্ত পড়তে লাগলো। সে সাথে সাথে হাতটা শিকড়ের উপর রাখলো।আর রক্তের ফোটা পড়তেই শিকড়টা একদম সেকেন্ডের মধ্যেই একদম সতেজ হয়ে উঠতে লাগলো।রুমা খেয়াল ই করেনি এসবের মাঝে কখন একটা নেকড়ে মানব পাশে এসে দাঁড়িয়েছে।সে গর গর করে বলতে লাগলো এভাবে আরো তিন দিন রক্ত দিতে হবে।তবেই এটা থেকে চারা হবে।রুমার চোখ ফেটে কান্না আসতে চাইছিলো।কারণ হাতটা খুব জ্বলছে, রক্ত পরা বন্ধ হয়ে গেছে কিন্তু হাতটা খুব জ্বলছে।সেদিনের মতো কাজ শেষ কারণ একদিনে দুইটার বেশি কাজ করা যাবেনা।আর রুমার গায়ে শক্তিও অবশিষ্ট নেই আর কোনো।
এরপর রুমার চোখ ঘুমে ভেঙ্গে আসলো আর রুমা ওইখানেই ঘুমে ঢলে পড়লো।
রুমা ঘুমেই আবার স্বপ্ন দেখতে লাগলো যে।আলতাফ এক ফকির বাবার শরণাপন্ন হয়েছে।আর সে ফকির বাবা খুব বাজেভাবে আলতাফকে ঠকাচ্ছে।ফকির বাবার সাথে আলতাফের কথোপকথন শুনতে লাগলো রুমা।
আলতাফ - বাবা আমাকে বাঁচান, আমি অনেক পুলিশের সাহায্য নিয়েছি কিন্তু কোনো ভাবে আমার স্ত্রীর হদিস পাচ্ছিনা।
(আসলে আলতাফ খুব সহজ সরল মানুষ।নিশ্চয় কোনো নিকট আত্বীয় ই তাকে এসব বাবার কথা বুঝিয়েছে।)
ফকির বাবা - তোর বউ এর কি কারো লগে সম্পইরকো আছিলো নি?
আলতাফ - না বাবা,রুমা এমন মেয়ে না।ও কোনো এমন ভাবে পর্যন্ত নি।
ফকির বাবা - তাইলে এই পুটলির মধ্যে হাত ঢুকা তো।
আলতাফ - বাবা ভেতরে তো কতগুলো গাছের পাতা।
ফকির বাবা - হ বেডা, হাত উডা তো।দেখি কি তুললি?
আলতাফ - বাবা এটা তো একটা লাল পাতা।
ফকির বাবা - হায় হায়,তোর বউ এর তো কপালের দোষ আছে মেলা।
আলতাফ - বাবা কি হয়েছে প্লিজ বলেন।
ফকির বাবা - তর বউরে এক জিনের মনে ধরছে।
আলতাফ - মানে!?
ফকির বাবা - বেশি কতা কইছ না। মেলা খরচ করা লাগবো তোর বউরে ফিইরা আনতে চাইলে।
আলতাফ - বাবা আমি যত বলবেন খরচ করতে রাজি আছি।আমার রুমাকে ফিরিয়ে দেন প্লিজ।আমি মাত্রই আমার ছেলে হারিয়েছি আর কাওকে হারাতে পারবোনা।
ফকির বাবা - দেখি বিশ হাজার টেয়া দে অহন ই।মেলা যনতরপারি কিনা লাগলো।একডা বড় ছাগল কিনা লাগবো
মেলা কাম।
আলতাফ - হ্যা বাবা এই যে নেন আমি টাকা এনেছি।
ফকির বাবা - হ দে, এই পাতিলের ভিত্রে রাইখা উইঠা যা।পিছনের দিকে তাকাইবি না একদম, তাইলে কাম অইবোনা।
আলতাফ - হ্যা বাবা হ্যা। আপনি যা বলবেন তাই করবো।
রুমা স্বপ্নেই ভাবতে লাগলো তার স্বামী আলতাফ কোনোদিন কোনো অন্ধবিশ্বাসে বিশ্বাস করেনি কিন্তু আজ! আজ তার কি না করতে হচ্ছে!আর এই ফকির! কিভাবে লোক ঠকাচ্ছে।হায় রে দুনিয়া। কেমন হয়ে গেলো সবাই!
এরপর রুমা আরো দেখতে লাগলো,
আলতাফ উঠে চলে গেছে আর ফকির বাবা টাকা গুলো হাতে নিয়ে গুণছে আর তার এক চ্যালাকে ডেকে বলছে,
"দেখছস নি করিম্মা?মেলা দিন পরে এমন বলদা পাইলাম।এক্কেরে বলদা। আজকাইল্কার পোলা পাইন তো মেলা চালাক হইয়া গেছে।আমগোরে বিশ্বাস ই করবার চায়না।এরম কয়ডা বলদা মানুষ না থাকলে আমগোর ব্যবসায় তো এক্কেরে লালবাত্তি জ্বলতো এতদিনে।এইবার ভালোই একডা দাও মারন যাইবো।কি কচ করিম্মা?
করিম্মা - হ ওস্তাদ।আপনি যেই ফাইন এক্টিং করবার পারেন।কার কি সাইধ্য আছে আপনারে অবিশ্বাস কইরবো!এই বেডারে এক্কেরে ছাইচ্ছা খাইয়া ফালামু এইবার।বেডা বউ গেছে তো আরেকডা বিয়া করবি।মাইয়ার কি অভাব আছে নি দুনিয়াডাত! এই মাইয়ার লাইগা মইরা যাইতেছস।
এসব কথোপকথন করতে করতেই দুজন ই হো হো করে হাসছে।
ঘুম ভেঙ্গে গেলো রুমা।রুমা আবার নিজেকে আবিষ্কার করলো ওই রুমে। আর রুমে সেই আগের মতোই নরমাংস খাবার উৎসব চলছে যেনো।এখন রুমার করতে হবে তৃতীয় কাজ।এ যে আরো ভয়ংকর।
তৃতীয় কাজে রুমার করতে হবে.....
চলবে....
ধন্যবাদ গল্পটি পড়ার জন্য।গল্পটির সামনে পাবেন আরো নতুন নতুন রহস্য।রহস্যগুলো জানতে চাইলে অবশ্যই শেষ পর্যন্ত পড়তে হবে।আর অবশ্যই আপনাদের মতামত জানাবেন। ধন্যবাদ সকলকে পোস্টটি বা গল্পটি পড়ার জন্য।
লিখাঃ নূসুরা নূর।
Your content has been voted as a part of Encouragement program. Keep up the good work!
Use Ecency daily to boost your growth on platform!
Support Ecency
Vote for Proposal
Delegate HP and earn more
Congratulations @nusuranur! You have completed the following achievement on the Hive blockchain and have been rewarded with new badge(s) :
Your next target is to reach 2750 upvotes.
You can view your badges on your board and compare yourself to others in the Ranking
If you no longer want to receive notifications, reply to this comment with the word
STOP
Check out the last post from @hivebuzz: