হেলোও,আসসালামু আলাইকুম।সবাই কেমন আছেন?
আজকে আমি আপনাদের সাথে আমার লেখা একটি গল্প শেয়ার করছি।গল্পটির আজকে চতুর্থ পর্ব চলছে।এর আগের পর্ব গুলো আমার এই আইডিতে পেয়ে যাবেন।আশা করছি সবাই পড়বেন,
রুমার মেয়ে মিনহা নিজের রক্ত নিয়ে খেলছে!
মিনহা নিজের গলার মধ্যে অদ্ভুত ভাবে হাত ঢুকিয়ে রক্ত বের করছে।আর সেই রক্তে মাখামাখি করছে নিজের পুতুল গুলো।হঠাৎ রুমার মনে হতে লাগলো পুতুল গুলো যেনো তার দিকে তাকিয়ে আছে আর পুতুলগুলোর মুখেও যেনো কেমন একটা আবছা হাসির রেখা।রুমা আর ঠিক থাকতো পারলো না,ভয়ে মেয়ের কাছেও যায়নি।কাঁপা কাঁপা হাতে কোনো রকমের দেওয়াল ধরে ধরে বাড়ির ল্যান্ডলাইন ফোনের দিকে আগালো।
যেই ফোনটা হাতে নিতে যাবে সেই মূহুর্তেই রুমা অচেতন হয়ে মাটিতে পড়ে গেলো।এরপর রুমার আর কিছু মনে নেই!
হঠাৎ রুমাত চেতনা ফিরে এলো মিনহার মা!মা! ডাকে।অদ্ভুত ব্যাপার হলো এই বিভৎস ঘটে যাওয়া ঘটনা গুলো না রুমার মনে আছে না মিনহার!
আলতাফ সন্ধ্যা সাতটার দিকে বাড়ি আসলো।আলতাফের একটা শখ আছে, অদ্ভুত শখ।আর শখটি হলো এন্টিক জিনিষপত্র জমানো।শখটা যে খুব বেশি তা নয়,মাঝেমধ্যে খেয়ালে আসলে ছোট খাটো এটা ওটা কিনে, এমনটাই।কিন্তু আজ আলতাফ এক অদ্ভুত জিনিষ নিয়ে আসলো।আলতাফ বাড়িতে ঢুকেছে ইয়া বড় একটা ঘড়ি আর শো পিস রাখার স্ট্যান্ড নিয়ে।কিন্তু স্ট্যান্ডটার অদ্ভুত ব্যাপার হলো স্ট্যান্ডটা দেখতে অনেকটা কফিনের মতো!
রুমা দেখেই কেমন যেনো একটা আতঁকে উঠলো।কিন্তু তার আগের ঘটনা কোনো কিছুই মনে নেই।আলতাফ বাসায় ঢুকেই রুমাকে বলতে লাগলো " যানো রুমা,রফিক ভাইয়ের দোকানে খুব কম দামে পেলাম।সুন্দর না দেখতে বলো? একদম বহু পুরোনো লোহায় বানানো কিন্তু দেখো এখনো রঙ একটুও নড়ে নি। " রুমা শুধু হুম বললে কিচেনে চলে গেলো।সেদিন রাতে সবাই খেয়েদেয়ে ঘুমিয়ে পড়লো।রাতের ঠিক তিনটায় রুমার মনে হলো স্ট্যান্ডটা থেকে কেমন একটা ক্যাচক্যাচ শব্দ আসছে। রুমা উঠে গিয়ে দেখে স্ট্যান্ডটা হঠাৎ এতোটাই বড় দেখাচ্ছে যে রুমার সমান কেও সহজেই ঢুকে যেতে পারবে আর একদম হুবহু কফিনের মতোই লাগছে এখন।রুমার মনে হলো তাকে সেই আগের মতোই কেও ডাকছে কাছে।ভেতর থেকে অদৃশ্য একটা শব্দ আসছে যেনো কেও ডাকছে "মা আসো,আসো।ভেতরে আসো,এইতো আমি। "রুমাও কেমন ঘোরের মধ্যে হেঁটে হেঁটে ওই স্ট্যান্ড বা কফিনের যাই বলি না কেনো!তার মধ্যে আস্তে আস্তে ঢুকে গেলো আর ওই কফিনের দরজাটাও বন্ধ হয়ে গেলো।দরজাটা বন্ধ হতেই রুমার আগে ঘটে যাওয়া সব কিছু ধীরে ধীরে মনে পড়ে যেতে লাগলো!"আর রুমা হাতঁড়েপাতঁড়ে একটা কাগজ পেলো।কফিনের মাঝে কোনো এক অজানা রকম ভাবে আলো আসছে তবে তা খুব হাল্কা কিন্তু সবকিছু আবছাভাবে দেখা যায়।
ওই কাগজে লিখা আছে,
" মা,আমি এখানেই আছি।খুজেঁ নাও,বড্ড বিপদে আমি আর তোমরাও। "
রুমার ভেতরটা আজ কেমন শক্ত হয়ে আছে।কোনো ভয় যেনো আর তাকে কাঁবু করতে পারছেনা।রুমা আরেকটু এগুতেই দেখলো একটা অনেক বড় খোলা জঙ্গলের মতো।আসলে সে প্রথমে কফিনের মাধ্যমে ঢুকেছেই একটা জঙ্গলে কিন্তু এতোক্ষণ বেপারটা ঠিক ঠাহর করতে পারেনি ।সামনে ঘুটঘুটে অন্ধকার কিন্ত কোনো এক অদ্ভুত কারণে সে সবকিছু দেখছে।আর এদিকে আলতাফ ঘুম থেকে উঠে দেখে রুমা কোথাও নেই সেই সাথে কফিনের মতো স্ট্যান্ড টিও কোথাও নেই!ওইদিকে রুমার সামনে এক অদ্ভুত রকমের জীব এসে দাঁড়িয়েছে। যার মাথাটা কেমন নেকড়ের মতো হলেও শরীরটা পুরো মানুষের মতো কিন্তু দেখতে কেমন যেনো কদাকার।সে রুমাকে এসে বলতে লাগলো, " ওইদিন ই তোমাকে এখানে আনতাম তবে তোমার ঘরের ওই নার্স এসে গিয়ে তোমাকে আটকে ফেলেছিলো তাই সেদিন পারিনি। " রুমা বললো " আমার ছেলে কোথায়?কি করেছ?কেনো করেছ?কেনো একজন মাকে দিয়ে তার মেয়ের রক্ত পান করালে?কেনো করছ এসব। "
ওই কদাকার দেখতে প্রাণীটা বললো " দোষ তোমাদের না। তোমার কপালের। "
রুমা - " মানে? কি বলতে চাইছো?
প্রাণী - " বলছি,শুনো।তোমার দুটি সন্তান ই আমাদের সময়ে জন্ম নিয়েছে।মানে হলো আমাদের এক বিশেষ দিনের ঠিক বিশেষ একটি সময় রয়েছে আর সেদিনে পৃথিবীতে যেসব সন্তান জন্মায় তাদের আমরা নিজের কাছে নিয়ে আসি কিন্তু মিনহাকে আগে আনিনি কারণ জানতাম তোমার পেটে আসবে আরেকটা সন্তান আর সে ও জন্মাবে আমাদের সময় ই।তাই দুজনকে একসাথে আনতে মিনহা হওয়ার পরও আমরা কিছুই করিনি,মিজানের জন্য অপেক্ষা করছিলাম।"
রুমা - এসব করে তোমাদের লাভ কী?
প্রানী - লাভ ক্ষতি তোমাকে বুঝিয়ে লাভ নেই।আমরা ঠিক করেছি তোমার ছেলেকে ফেরত দেবো আর মিনহাকেও কিছু করবোনা। তোমাদের ও এসব থেকে মুক্তি দিবে দিবো। কারণ কি জানতে চাও?
রুমা - কী কারণ?
প্রানী - কারণ হলো তোমার স্বামী আলতাফ!!
রুমা বললো," আলতাফ? আলতাফ কি করলো?আলতাফ তো এসবের কিছুই জানেনা। ও কি করে এসবের মাঝে?" প্রানীটা রুমার আরেকটু কাছে এসে বললো, " আলতাফ ই তো তোমার সন্তানদের এতোদিন জীবিত থাকার কারণ। " এটা বলেই প্রাণীটা একটা ক্রুর হাসি দিলো!
এরপর প্রাণীটা বলতে লাগলো, "আলতাফ এই যে কফিনটা কিনে আনলো। কিভাবে কিনলো জানো? " রুমা বললো, না তো!রুমার উত্তরে প্রাণীটা অদ্ভুতভবে অট্টহাসি দিলো!হাসিটা যেনো কেমন ভয়ংকর,শুনলেই গা টা হিম হয়ে যায়! এরপর প্রাণীটা আলতাফের এই ব্যাপারের সাথে সম্পর্কটা বলতে লাগলো....
চলবে.......
ধন্যবাদ গল্পটি পড়ার জন্য।গল্পটির সামনে পাবেন আরো নতুন নতুন রহস্য।রহস্যগুলো জানতে চাইলে অবশ্যই শেষ পর্যন্ত পড়তে হবে।আর অবশ্যই আপনাদের মতামত জানাবেন। ধন্যবাদ সকলকে পোস্টটি বা গল্পটি পড়ার জন্য।
লিখাঃ নূসুরা নূর।
Hi @nusuranur, your post has been upvoted by @bdcommunity courtesy of @rehan12!
Support us by voting as a Hive Witness and/or by delegating HIVE POWER.
JOIN US ON