হেলোও,আসসালামু আলাইকুম।সবাই কেমন আছেন?
আজকে আমি আপনাদের সাথে আমার লেখা একটি গল্প শেয়ার করছি।আশা করছি সবাই পড়বেন,
রুমা অবাক দৃষ্টিতে থাকিয়ে থেকে দেখলো একটা বাচ্চার একটা হাত পড়ে আছে, হাতের সাথে পাঞ্জাবির কাপড় ও আছে।মানে সেই হাতের মানুষটা যে ফুলহাতা পাঞ্জাবি পড়েছিলো সে পাঞ্জাবির হাতা সমেত একটা হাত। আর হাতটা আরো কারো নয়!!রুমার ছোট ছেলে মিজানের!
এরপর আর রুমার কিছু মনে নেই!শুধু মনে আছে যে সে মিজান বলে একটা ডাক দিয়ে মাটিতে বসে পড়েছিলো। এরপর আর কিছু মনে নেই।এরপর প্রায় বারোদিন পর রুমার জ্ঞান ফিরলো। রুমা আস্তে আস্তে চোখ খুলে দেখে সে একটা হসপিটালের কেবিনে শুয়ে আছে। দেখে মনে হচ্ছে ভালোই দামী হসপিটাল।সামনের দেয়াল ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে সকাল আটটা বাজছে কিন্তু হঠাৎ মনে পড়লো মিজানের জন্য ডিম ভাজা হয়নি,এখনি ঘুম থেকে উঠে ডিম ভাজা খুঁজবে। তড়িঘড়ি করে উঠতে গিয়ে দেখে তার হাত বেডের দুইপাশের দুই লোহার সাথে বাধা।এটা দেখেই তার মিজানের ওই কাটা হাতের কথা মনে পড়ে গেলো।এটা মনে পড়তেই রুমা মিজান মিজান বলে চিৎকার করতে লাগলো। তার চিৎকার শুনেই ডাক্তার আর রুমার স্বামী আলতাফ দৌড়ে কেবিনে ঢুকলো। ঢুকে দেখে রুমা চিৎকার করতে করতে কাহিল হয়ে পড়েছে।কিন্তু তাও হাসফাস করতে করতে চুলগুলো উস্কোখুস্কো হয়ে গেছে,মুখ দিয়ে লালা পড়ছে, একদম পাগলের মতো হয়ে গেছে।ডাক্তার তাড়াতাড়ি এসে একটা ডায়াস্টাট ভ্যালিয়াম পুশ করে দিলো যেনো ঘুমিয়ে পরে। এরপর আলতাফ কেবিনের বাইরে আসলো আস্তে আস্তে। কি করবে সে বুঝে উঠতে পারছেনা।এই বছরের মতো কুরবানী ঈদ মনে হয় তার সারাজীবনেও আসেনি আর এই কদিনে তার জীবনে যে ধকল গেছে এমন ধকল ও তার সারাজীবনে যায়নি।সেই ঈদের দিন হঠাৎ মিজানের চিৎকার শুনলো, চিৎকারের উৎস খুজতেই পুকুর পারে এসে দেখে কেও নেই।তাই আলতাফের বাবা পাশের লোকজনদের বললো পুকুরে তাড়াতাড়ি জাল ফেলতে।চার পাঁচ জন লোক পুকুরে জাল টানতেই জালে আসলো একটা কাটা হাত তাও মিজানের।এ দৃশ্য দেখেও আলতাফ ও ঠিক থাকতে পারেনি।কেমন যেনো রোবটে পরিণত হয়ে গেছে।কোন অনুভুতি কাজ করছেনা।এরপর তো রুমার এই অবস্থা।প্রায় ত্রিশ দিন রুমাকে হসপিটালে রাখা হলো।সেই হাত বেঁধেই রাখা হলো।আলতাফ ও কেমন যেনো হয়ে গেলো,মুখে কোনো হাসি নেই, কেমন বেখেয়ালে থাকে সবটা সময়।অবশ্য কেও তার স্ত্রীকে চোখের সামনেই দিনের পর দিন হাত বাঁধা অবস্থায় পরে থাকতে দেখলে আর অলৌকিক ভাবে নিজের ছেলের শুধু একটা কাটা হাত পাওয়া গেলে সে মানুষ আর কিভাবেই বা স্বাভাবিক থাকবে!
রুমার ছেলের জন্য আহাজারি এখনো কমেনি তাই বাসায় একটা ফুলটাইম নার্স রাখা হলো কারণ আলতাফের অফিস যেতে হবে, প্রায় একমাস ছুটি নিয়েছে। এরপর থেকে স্বাভাবিক ভাবেই আলতাফ অফিসে যেতে থাকলো আর রুমা মেয়ে মিনহাকে গ্রামেই রেখে এসেছে দাদা-দাদীর কাছে কারণ রুমার সন্তান সামলানোর অবস্থা নেই।একদিন ভোর বেলায় আলতাফ অফিসে চলে গেলো।বাসায় আছে রুমা আর নার্স নাজিবা।নাজিব রুমার জন্য স্যুপ রান্না করতে কিচেনে গেছে আর রুমা শুয়ে ছিলো।
হঠাৎ রুমা ঘরের এক কোণে তাকাতেই দেখে ওই কাটা হাতটা আর পাশে একটা কফিন।তার ছোট ছেলে মিজানের কাটা হাত!!
এরপর!!
চলবে...........
ধন্যবাদ গল্পটি পড়ার জন্য।গল্পটির সামনে পাবেন আরো নতুন নতুন রহস্য।রহস্যগুলো জানতে চাইলে অবশ্যই শেষ পর্যন্ত পড়তে হবে।আর অবশ্যই আপনাদের মতামত জানাবেন। ধন্যবাদ সকলকে পোস্টটি বা গল্পটি পড়ার জন্য।
লিখাঃ নূসুরা নূর।
খুব সুন্দর হয়েছে।
পড়ার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।