একটা ভাঙ্গা কফিন আর মিজানের ছিন্নবিচ্ছিন্ন দেহ! ( পর্ব ১ )

in BDCommunity3 years ago

হেলোও,আসসালামু আলাইকুম।সবাই কেমন আছেন?


আজকে আমি আপনাদের সাথে আমার লেখা একটি গল্প শেয়ার করছি।আশা করছি সবাই পড়বেন,


source


রুমার আজকে বেশ খাটুনি হচ্ছে তার উপর শাশুড়িও সকাল থেকেই খেচখেচ শুরু করেছে।একটু আগেই রুটি বেলে উঠলো এখন আবার বলছে মুরগীর মাংস কাঁটতে তার উপর কোরবানের দিন এতো কাজ তাও শাশুড়ির কত কথা শুনতে হচ্ছে।ছোটটা আবার উঠে ডিম ভাজি খুজবে।রুমার ছোট ছেলেটার শুধু একটা মাত্র আল্লাদ জীবনের আর তা হলো সকালে উঠে তার একটা ডিম ভাজা চাই ই চাই।সেই নিয়েও রুমার চিন্তা।দুচুলায় মাংস, একটা চুলা খালি নেই।ছেলেটার ও উঠার সময় হয়ে আসলো।শাশুড়ি দুমিনিট রান্নাঘর থেকে বের হতেই রুমা তাড়া হুড়া করে এক চুলা থেকে মাংসের পাতিলটা নামিয়ে তাতে একটা ডিম ভেজে জালি আলমারিতে রেখে দিলো।রুমার দুই ছেলে মেয়ে, মেয়েটা বড় নাম মিনহা আর ছেলেটা ছোট নাম মিজান। ডিমটা ভাজতেই মিজান আম্মু আম্মু বলে ডাক দিয়ে উঠলো।রুমা দৌড়ে ছোট ছেলের কাছে গিয়ে তাড়াতাড়ি হাত মুখ ধুইয়ে দিলো।আজকে কেমন যেনো অস্বাভাবিক ভাবেই মিজান কোনো তালবাহান ছাড়াই মুখ ধুয়ে ফেললো,দাঁত ব্রাশ করে ফেললো,গোসল পর্যন্ত করে ফেললো এরপর পাঞ্জাবিও পড়ে ফেললো!আসলে মিজানের বয়স খুব কম।এই হয়তো সামনের মাসেই সাত হবে।বাচ্চা মানুষ তো তাই একটু আল্লাদ করে আর গোসল করতে তো একেবারে বাড়িটাই মাথায় তুলে ফেলে কিন্তু আজ রুমা একেবারেই তাজ্জব কারণ মিজান আজ সব চুপচাপ করে ফেলেছে। এরপর রুমা ছেলেকে ডিম আর পাউরুটি টোস্ট খাইয়ে দিলো কারণ ওইদিকে আবার শাশুড়িটাও তাড়া দিচ্ছে।রুমা একটা কথাই বুঝেনা যে এইযে এতোদূর বাবামা কে ছেড়ে রুমা যে প্রত্যেক বছর স্বামীর ঘরে ঈদ করে তা কি শাশুড়ির এক বারো মনে পড়েনা?কই! ননদ দুটিতো খুব সুন্দর প্রত্যেকবার ঈদে বাড়ি চলে আসে বাবামা এর সাথে ঈদ করতে।কিন্তু শাশুড়ির ওই এক কথা " আমি কোনোদিন শাশুড়ির হাতে সুখ করতে পারিনি আমার ছেলের বউ কেনো করবে!" সেসব থাক,শাশুড়ির একডাকে না গেলে অনেক কথা শুনানো শুরু করে দিবে তাও আবার উচ্চস্বরে। আজ ঈদের দিনেও রুমা চায়না বাড়িতে অশান্তি হোক।তাই তাড়াতাড়ি আবার চুলার ঘরে গেলো। যাওয়ার আগে মিজান কে বারবার বলে গেছে যেনো পুকুর ধারে না যায়।বাড়িতে রুমা, স্বামী আর বাচ্চারা প্রত্যেক বছর ই ঈদ করতে আসে তবে কোনো বছর ই মিজানের পুকুরের দিকে কোনো আকর্ষণ দেখে না তাই খুব একটা চিন্তা করলোনা এইবার ও।রুমারা শহরে থাকে স্বামীর কাজের সুবিধার্তে, রুমা ও শহরের ই মেয়ে।অনেকক্ষণ ধরে রুমা মাংস রান্না,কাটাকাটি করছে কিন্তু মিজানের কোনো শব্দ পাচ্ছেনা। মিজানের আবার অভ্যাস যত যাই খেলুক না কেনো একটু পর পর মাম্মা বলে মাকে জড়িয়ে ধরে কিছুক্ষণ পেছন থেকে এরপর আবার চলে যায়।কথাটা শাশুড়ি রুমানা কে বলতেই একেবারে খেঁপে উঠে বলে," আমরা কি পোলা মাইয়া পালি নাই?আমরা সংসার করি নাই?এগারোটা বাচ্চা মানুষ করলাম। তোমাদের ই দেখি যত ঢং। " একথা শুনেই রুমা চুপ হয়ে গেলো।রুমা শহরের মেয়ে হলেও একেবারে মাটির মতো মানুষ।হাজার ঘা তেও মুখে রা নেই যেনো।হঠাৎ শুনতে পেলো বাড়ির পিছনে কিসের যেনো সৌরগোল।রুমার বুকটা একেবারে ধুপ করে উঠলো, কিসের যেনো চাপা সংশয় রুমাকে জাপটে ধরেছে।হঠাৎ কানের পাশে মিজানের ডাক শুনতে পেলো যেনো।রুমার মনে হলো ডাকটা যেনো কানের পাশ দিয়ে শোঁ করে চলে গেলো।রুমা অজান্তেই মিজান বলে আতঁকে উঠলো। শাশুড়িও কেমন চুপ হয়ে ভাবতে থাকলো কিসের এতো চিল্লাচিল্লি বাইরে।শাশুড়ি বউমা মিলেই হাতের সব কাজ ফেলে তাড়াতাড়ি বাইরে গেলো।আর বাইরে গিয়ে যা দেখলো তা দেখার জন্য কেও ই প্রস্তুত ছিলোনা!!!
রুমা শুধু নির্বাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো !

চলবে...............


ধন্যবাদ গল্পটি পড়ার জন্য।আশা করি গল্পটির শেষ পর্যন্ত সবাই সঙ্গেই থাকবেন।

লিখাঃ নূসুরা নূর।


Sort:  

Congratulations @nusuranur! You have completed the following achievement on the Hive blockchain and have been rewarded with new badge(s) :

You got more than 100 replies.
Your next target is to reach 200 replies.

You can view your badges on your board and compare yourself to others in the Ranking
If you no longer want to receive notifications, reply to this comment with the word STOP