কলেজের মাএ দু বছর সময় দেখতে দেখতেই কেটে যায়। উপভোগ করার জন্য সময়টা খুব কম তবুও কলেজের সময়টা ছিল অদ্ভূত ভাল লাগার যেদিকে তাকাই সেদিকেই রঙের ছোয়াঁ যেন সবকিছুই রঙিন। বেশ কিছু স্মৃতি মধুর সময় যা মনকে নাড়া দেয়। আমাদের মাঝে অনেকেই হয়ত বলবে স্কুল জীবনটাই সব থেকে বেশি সুন্দর ছিল হয়ত আমিও একই কথাই বলব। খুব অবুঝের মত করেই হয়ত কেটেছে স্কুলের সময়টা। তবুও মনে হয় কলেজের সময়টা কেন এত অল্প ছিল!
আগের কলেজ জীবনের সময়টা ছিল পুরোপুরি আলাদা কারন তখনকার ছেলেমেয়েরা এখনকার সময়ের তুলনায় একটু দেরিতেই পরিপক্ব হত। কলেজ জীবনটা যেহেতু কৈশোরকালের শেষের দিকে শুরু হয়ে থাকে আর যৌবনকালের শুরুর দিকে শেষ হয়ে থাকে তাই সময়টা তীব্র আবেগঘন।
নবীনবরন দিন, কলেজের উদ্দ্যেশ্যে যেতে যেতেই ভাবছিলাম, কত দিনের আশা কবে কলেজে ভর্তি হব? কবে বড় হব? এবার সত্যি সত্যিই বড় হয়ে গেছি, কি অদ্ভূত ভাললাগা! অনেক কৌতহল, স্বপ্ন আর আশা নিয়ে সূচনা কলেজ জীবনের পথ চলা। নতুন ক্লাস, নতুন বন্ধু, নতুন বই, নতুন শিক্ষক, নতুন পরিবেশ কত উওেজনা। কলেজের প্রথম দিনের কথা কার না মনে আছে। সেই সোনালী দিনের স্মৃতি কখনো ভোলার নয়।
কয়েকদিন ক্লাস করার পরই একটি মেয়ের সাথে খুবই ভাল বন্ধুত্ব হয়ে গেল। কলেজে আসার আগে প্রতিদিন দুজনেই বাসার টেলিফোন থেকে কল করে সময় মিলিয়ে রওনা হতাম যেন একই সময়ে দুজন পৌছাতে পারি। তখনও আমাদের সবার হাতে মোবাইল ফোন ছিল না। সবচেয়ে মজার ব্যাপার ছিল ব্যাগ দিয়ে যার যার চেয়ার দখল করা। দুজনে পাশাপাশি বসতে না পারলে যেন দিনটাই খারাপ যেত। মাঝে মাঝে কোন বোরিং স্যারের ক্লাসে গালে হাত দিয়ে বসে থাকা আবার কোন স্যারের মজার ক্লাস করা। ক্লাস শেষে সবাই একসাথে কিছুক্ষণ কলেজ ক্যান্টিনে আড্ডা দেওয়াটাই যেন ছিল চরম সুখের।
কলেজের সবচেয়ে জনপ্রিয় স্যারের কাছে সবাই মিলে ব্যাচে পড়তে যাওয়ার আগে সবাই কোন একটা জায়গায় একসাথে জড়ো হয়ে যাওয়ার মজাই আলাদা ছিল। সবাই যেন সবার জন্য। কলেজের এই সময়টাতে কাউকে ভাললাগার ব্যাপারটা খুবই সাধারন ছিল। আকার ইঈিতের মাধ্যমে মাঝে মাঝে বুঝাতে চাইলেও মুখে বলার ব্যাপারটা একটু কঠিন ছিল। কেউ যদি একবার বুঝে ফেলত পুরো ক্লাস ছড়াতে পাচঁ মিনিট ও লাগত না। কখনো দেখা যেত দুষ্টু ছেলেরা মেয়েদেরকে বিরক্ত করার দৃশ্য কোথাও বা আবার রোমিও জুলিয়েটের দৃশ্য। তবে এই ব্যাপারগুলো দারুন উপভোগের ছিল।
পরীক্ষার হলে স্যারের চোখ ফাঁকি দিতে নানান বাহানা করে বন্ধুকে বাচাঁনোর চেষ্টা করা। দেখতে দেখতে এভাবেই প্রথম বছর শেষ হয়ে দ্বিতীয় বছরও কিভাবে শেষ হয়ে এলো বোঝা দায়। এর মাঝে রয়ে গেছে সুন্দর সুন্দর কিছু স্মৃতি। কলেজের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগদান করায় বেশ কিছু স্মৃতি বাড়তি যুক্ত হয়েছে। এই স্মৃতিগুলো যেন জীবনের ডায়েরির রঙিন পাতায় লেখা হয়ে আছে। কেন যে কলেজের সময়টা আরো দীর্ঘায়ীত ছিল না! তাহলে হয়ত আরো কিছুদিন এভাবেই কাটানো যেত।
Image
ধন্যবাদ সবাইকে🙂