জীবনকে সেভাবে দেখা হয়নি অমিতের। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে এসেছে উত্তরবঙ্গের প্রত্যন্ত জেলা থেকে। টাকা পয়সার টানাটানি। একই হলে থাকে অমিতের বন্ধু সজীব। সজীব ধনী পিতার সন্তান। সজিবই অমিত কে একটি টিউশনি যোগাড় করে দিয়েছে। ফোনে কথা বলেছে অমিত ছেলেটি বাবার সঙ্গে। ওই ছেলেটিকে পরাবে অমিত নাম তনময়। তনময় এর বাবা অমিত বলেছে পারিশ্রমিক হিসেবে অন্যদের চেয়ে বেশি দিবেন তিনি। অমিত প্রথমে বুঝতে পারে নি কেন তিনি বেশি দিবেন? প্রথম দিনটা তনময় কে পড়াতে গেলে এক অন্য অভিজ্ঞতা হয় অমিতের। পঙ্গু বিকলাঙ্গ মানুষ দেখেছে অমিত কিন্তু বুদ্ধি প্রতিবন্ধীদের সম্পর্কে তেমন ধারণা ছিল না তাঁর। তনময় এর মা তনময় কে সামনে নিয়ে আসার পর অবাক হল অমিত। চমৎকার সুদর্শন দেখতে তোমায়। কিন্তু কোথায় যেন একটু সমস্যা আছে বলে মনে হলো অমিতের। কয়েকটি কথা বলার পরই বুঝলো তনময়ের বুদ্ধিটা যথেষ্ট পরিণত নয়, একটু কম বিকশিত। প্রথমে একটু বিব্রত বিরক্ত হলেও সামনে নেয় অমিত। টাকার দরকার ,তাই টিউশনিটা ছাড়তে পারছে না। এভাবেই প্রথম মাসটা কাটলো। এরমধ্যে তনময়ের সঙ্গে এক ধরনের বন্ধুত্ব হয়ে গেছে অমিতের। অমিতের সবকিছু বুঝতে পারে তনময়, তনময়ের কোনকিছুই অমিতের কাছে দুর্বোধ্য নয়। মাঝে মাঝে নিজ গ্রামের গল্প করতো অমিত । তনময় অবাক হয়ে শুনছে গল্প। একদিন অমিতের কাছে নিজের আঁকা একটি ছবি নিয়ে আসে তনময়। অমিত দেখলো তাদের গ্রামের অবিকল ছবি এঁকেছে তনময়। যেভাবে গল্প করেছে সে, তনময় রংতুলিতে তাই তুলে এনেছে। অমিতের বুঝতে বাকি রইল না যে, তন্ময় দাস শাণিত হলেও তার প্রকাশ কিছু দিরে। সেদিন থেকে সব দ্বিধা মুছে ফেল এর সমস্ত ধৈর্য শক্তি দিয়ে তনময় কে পড়াতে লাগলো। মাস শেষে তনময়ের মা নির্ধারিত বেতন এর চাইতেও বেশি টাকা দিতে চাইলেন। কিন্তু তনময় জানালো বেশি বেতন লাগবে না অন্যদের মতো দিলেই সে খুশি।
শিক্ষণীয় বিষয় হলো
১। মানুষের চেষ্টাই হচ্ছে সফলতার মূল চাবিকাঠি।
২। কোন মানুষকে মন থেকে কোন কিছু শেখাতে চাইলে তার প্রতিদান ও সেরকম পাওয়া যায়।
৩। অর্থ বড় কিছু নয় তার প্রতিদান হচ্ছে বড়।
৪। সমাজের প্রতিবন্ধীদের কে কেউ যেন ছোট করে না দেখে তাকে সঠিকভাবে শিক্ষা দিলে সেও আপনার মত বড় হয়ে উঠতে পারবে।
৫। এই গল্প থেকে আমরা যা শিখতে পেরেছি সেটাই যেন সমাজ জীবনে কাজে লাগাতে পারি।
এই গল্পটা সকালে মন দিয়ে পড়বেন,, ধন্যবাদ।