"NOBODY LASTS. NOBODY IS THERE TO LAST"
বেশ সোজাসাপ্টা আলাপ আসলে।
অনেক বৃহৎ হিসেবে ধরতে গেলে এর অর্থ দাঁড়াবে জগতে কেউই চিরঞ্জীব না থাকা। তবে অতো বড় হিসেবে যাবোনা, ক্ষুদ্র; একেবারেই ক্ষুদ্র হিসেবে যাবো, তা হলো ব্যক্তিজীবন।
আপনার জীবনে কেউই টিকবেনা। কেউই থাকবেনা। কেউই একজীবনভর থাকেনা। আপনার বা আমার বলে না, কারো জীবনেই; অন্তত সাধারণ হিসেবে, চিরদিন কেউ থেকে যায়না।
জন্মের পর থেকে মায়ের কোলে লালিত হয়ে, বাপের কাধে উঠে দুনিয়া ঘুরে হঠাৎ ৩০ বছর পর মানুষ দেখে এই দুটো মানু্ষ হয়তো নানান কারণে তার জীবনে এখন নেই, কিন্তু জীবন দিব্যি চলছে। কিন্তু চলার কথা তো ছিলোনা! তাও চলছে।
যে ভাই বা বোনের সাথে খুনসুটি করা ছাড়া কোনো বেলার খাবার ঠিকমতো হজম হতোনা, সে বোন হয়তো বিয়ে করে দেশের আরেক প্রান্তে থাকে, প্রতি দিন, সপ্তাহ, মাস এমন করে এক সময় কতোদিন পর কথা হয়, হিসেব থাকেনা। সে ভাই হয়তো নিজের অস্তিত্ব গুটয়ে আর জীবনে থাকেনা, কিন্তু মানুষ তখনও প্রতি বেলায় ভাত খায়। সাধ্যে কুলালে পেট ভরেই খায়।
যে বন্ধুর সাথে একদিন দেখা না হলে, একটানা ৩ ঘন্টা কথা না হলে, এক বিকেল একসাথে কাটাতে না পারলে "দিনটাই বৃথা গেল" মার্কা অনুভূতি হতো, সেই বন্ধুর সাথে হয়তো এখন ছয় মাসে একবার দেখা হয়। হয়তো বুকে জড়ায় নেওয়া হয়, স্মৃতিচারণ হয় একরাশ। কিন্তু তখন আর একগাল হেসে আসি বলে সরে আসার সময় বুক পোড়েনা। আবার হয়তোবা সে বন্ধু দূরদেশে থাকায় ৬ বছরে একবার দেখাও হয়না। প্রত্যেকটা দিন তাও কাটে, কেটে যায়।
আর প্রেম! এযুগের প্রেমের মতো কৃত্রিম সম্পর্কের আলাপই এখানে আর আনলাম না। এ ছাড়া; এর ছেড়ে যাওয়ায় যে জীবন কতো স্বাভাবিকভাবে চলে তার প্রমাণ আসেপাশে এত বেশি দেখা যায়, যতোটা দৃষ্টিদূষণেরই সৃষ্টি করে।
একটা জীবন বাঁচতে গেলে এত এত মানুষ আসে যায়। নিয়ম এটা। প্রত্যেকটা ক্ষেত্রেই আমরা কেউকে না কেউকে বুকে ধরে ভাবি, "এই মানুষটা আমার। এই মানুষ নিশ্চিত চিরদিন আমার থাকবে। আমার সাথে থাকবে, আমায় আগলে রাখবে। কারণ এই মানুষটা ছাড়া আমার ঠিকঠাক; পূর্ণাঙ্গ কোনো অস্তিত্বই তো আমি সামনে দেখতে পাইনা। তার মানে নিশ্চিত এই মানুষটা থাকবে। থাকতে না চাইলেও আমি রাখবো।" - এই দিবাস্বপ্ন দেখতে দেখতে হঠাৎ দেখেন, আপনার, মানুষটার, বা হয়তো দুনিয়ার নিজের কারণেই মানুষটা আর আপনার থাকেনা, আপনার জীবনেই থাকেনা। কিন্তু তাও আপনি বেঁচে থাকেন। নিজ অস্তিত্ব নিয়ে প্রবল চেষ্টার ফসল স্বরূপ হলেও; সটান টিকে থাকেন। কিন্তু এইযে এই চিন্তা, "সে আমার থাকবে" চিন্তাটা এই বিচ্ছেদের সময় এতবড় একটা ধাক্কার সৃষ্টি করে যা আমরা অনেকেই সামলে নিতে পারিনা। সবার শক্তি তো আসলে সমান না!
এই ধাক্কাটা চাইলে এড়ানো যায় কিন্তু! যদি আমরা শুধু নিজেদেরকে শুরু থেকে একটু প্রস্তুত রাখি, নিজেদেরকে বার বার মনে করিয়ে দেই "কেউ থাকেনা!"। আমরা সবাই জানি যে চাইলেই এই ধাক্কা কিভাবে এড়ানো যায়। কিন্তু তাও আমরা দিনশেষে, কেন যেন, এড়াইনা। এড়াতে আসলে চাইনা। একটা জীবনের চারিদিক ঘিরে এত বিশ্রী বিষয়াদি দেখতে দেখতে বুকে এতটা নৈরাশার প্রলেপ পড়ে যে বুকে কেউকে ধরে, ক্ষণিকের বানোয়াটি ওই তাপে তার কিছুটা ক্ষইয়ে দিতে আমরা খুব বেশি উদগ্রীব থাকি। কিছুক্ষণের জন্য ওই চিন্তা, ওই বাস্তববাদিতা, ওই বাস্তবতার জানালা আটকে আমরা নিজেদেরকে বুঝাই, "এটাই হয়তো শান্তি। এটাই হয়তো শান্তির শুরু। এতেই হয়তো হাফ ছেড়ে শান্তি মিলবে।"
এরপর বুক ফাঁকা হয়, তারা চলে যায়, আবার প্রলেপ পড়ে, আবার উত্তাপের আশায় মানুষ বাঁচে.... এবং এই নিরবচ্ছিন্ন সাইকেল চিরদিন চলতে থাকে, যতোদিন মানুষ বাঁচে।
এরপর কোনো এক সন্ধ্যায় মৃত্যুশয্যায় পরিবার দিয়ে ঘেরাও হয়ে শুয়ে, অথবা কোনো এক রাস্তার পাশে শেষ নিঃশ্বাস ছাড়তে ছাড়তে মানুষ এক পলকে পুরো জীবনটা ঘুরে এসে, হয়তো প্রথমবারের মতই নিজের বুকে তাকিয়ে দেখে, নিরাশার প্রলেপের পর প্রলেপ পড়েই গেছে, মিছে তাপে কিছুই গলেনি। কারণ-
একটা জীবন জুড়ে কেউই আসলে তার হয়নি,
এক জীবনে তার আসলে কেউই ছিলোনা।
Congratulations @kohiqafi! You have completed the following achievement on the Hive blockchain and have been rewarded with new badge(s):
Your next target is to reach 50 replies.
You can view your badges on your board and compare yourself to others in the Ranking
If you no longer want to receive notifications, reply to this comment with the word
STOP
Check out the last post from @hivebuzz:
Support the HiveBuzz project. Vote for our proposal!
Thanks @hivebuzz 🐒🖐😁
You're welcome @kohiqafi, that's a pleasure! Have a nice day 😊👍