"জীবে প্রেম করে যেই জন
সেই জন সেবিছে ইশ্বর"— স্বামী বিবেকানন্দের এক বিশ্বখ্যাত বাণী। কথাটির অর্থ, জীবের প্রতি প্রেম থাকলে এবং জীবের সেবা করলেই ইশ্বর তথা বিধাতার সেবা করা হয়।(আমি আমার মতো করে বললাম,এর সঠিক অর্থও এটাই,হয়তো।)
কিন্তু আমরা কি সত্যিই জীবেকে ভালোবাসতে পারছি? আমরা জীবকে ভালোবেসে,বিধাতার সৃষ্টিকে ভালোবেসে, বিধাতার সেবা করতে পেরেছি? আদৌও কি তা করছি?আমার কিন্তু তা মনে হচ্ছে না।
কিন্তু কেন মনে হচ্ছে না? এর কি কোনো করণ আছে? হ্যা,কারণ আছে।আমরা আমাদের আশপাশের জীবযন্তু থেকেই এর তুলনা পেতে পারি।একটা গরু কিংবা মহিষ দিয়ে যখন হাল চাষ করানো হয় তখন এক পর্যায়ে দেখা যায় সেই হালচাষ করা প্রাণীটি আর এগুচ্ছে না।তখন তার উপর বেত বা লাঠি দিয়ে দুচার ঘাঁ লাগিয়ে আবার হালচাষের জন্য আদেশ দিতে হয়।
আমাদের বাড়ীর আশেপাশে কুকুর বেড়ালের তো অভাব নেই।তাদের কথাই চিন্তা করি। আমরা কি কখনো তাদের কষ্ট বোঝার চেষ্টা করি? কখনোই করি না।একটা কুকুরকে রাস্তায় দেখলেই তার উপর ঢিল ছুঁড়ে দেওয়া আমাদের অভ্যাসে পরিনত হয়েছে।কোনো বিড়ালকে ঘুমন্ত অবস্থায় দেখলে বিকট শব্দে তার ঘুম ভাঙিয়ে দৌড়প্রতিযোগিতায় তাকে নামানোতে আমরা আনন্দ পাই।বাড়ীর পাশের ডাস্টবিন থেকে কুকুর খাবার খুঁজতে আসলে তাকে আমরা তাড়িয়ে দেই। আচ্ছা, কুকুরের কি খুধা লাগে না? লাগে তো ক্ষুধা।কিন্তু সে খবার পাবে কোথায়? সেতো নিজে নিজে খাবার তৈরি করতে পারে না।রাধতে পারে না। হ্যা,,,এর জন্যই সে আসে আমাদের ফেলে দেওয়া নোংরা উচ্ছিষ্টের খোঁজে। কিন্তু আমরা এতোটাই নিচে নেমেছি যে তাদেরকে ঐ খাবারটাও খেতে দিতে নারাজ।বেড়ালের বেলাতেও তাই-ই ঘটে।মানুষের চোখের সামনে থাকে বলে আজ এই দুটো প্রণী সবথেকে বেশি অবহেলিত।
আমাদের ফেলে দেওয়া খাদ্য যখন একটা মাতৃ কুকুর বা মা কুকুর গ্রহণ করে তখন তার ওই খাদ্যের উপরে কি শুধু সেই নির্ভরশীল? তার যে ছোটো ছোটো সন্তান সন্ততি রয়েছে তারা কিন্তু ওই তাদের মায়ের মুখের দিকেই তাকিয়ে থাকে।তারা দু ফোটা দুধের আসায় যখন মায়ের কাছে আসে তখন যদি মা কুকুরটি দুধ দিয়ে তার সন্তানদের খাদ্যের অভাব পূরণ করতে না পারে তবে কি আদৌও সেই বাচ্চা গুলো বাঁচবে?তারা তো খাদ্যের অভাবেই মারা যাবে।বর্তমানের এই শীতের মধ্যে রাস্তায় যেই পরিমান শীত থাকে তাতে তো আমরা এতো মোটামোটা জামা পরেও থাকতে পারি না।আর ভাবুনতো তারা কিভাবে থাকে?তাদের তো আর কিছু করার নেই থাকতেই হবে শীতের মধ্যে। তবে এই শীতের মধ্যেও যদি তারা ঠিক মতো খাবার খেতে না পারে তবে তারা পুষ্টিগুন কি হারাবে না?অবশ্যই হারাবে।তারা অসুস্থ হয়ে পরবে।তাদেরও মানুষের মতো সর্দিকাশি হয়। তারাও পুষ্টিহীনতায় ভোগে। আর এই শীতে ওই নবজাতকদের তো কথাই নেই, তারা যে কিভাবে টিকে থাকে তা বলার মোতো শব্দ আমার ঝুলিতে নেই।আপনি একটিবার নিজের কথা চিন্তা করে দেখুন তো।আপনি এই শীতে রাস্তায় ঘুমাচ্ছেন।তার মধ্যে খাবার পাচ্ছেন না।আপনার সন্তান খেতে পারছে না।কেমন হবে বিষয়টা?
মানুষের চোখের সামনে থাকে কুকুর আর বেড়াল। এরা অবহেলিত, লাঞ্ছিত হচ্ছে শুধু মাত্র আমার আপনার একটু আনন্দের জন্য। আমাদের দিকে তো ঢিল না ছুড়লে হবেই না তাই না! তারা রাস্তায় ঘুমিয়ে থাকলে ঢিল ছুতে হবে,তারা ডাস্টবিনে খাবারের খোঁজে আসলে ঢিল ছুড়তে হবে আবার তারা ঘুমিয়ে থাকলে তো কথা-ই নেই, হাতের পাশে যা পাবো আমরা তা দিয়েই তাদের উপর হামলা বলতে হবে!তবে ঐ যে স্বামী বিবেকানন্দের সেই কথাটি মনে রাখবেন।বিধাতাকে পেতে হলে অবশ্যই জীবের প্রদি দয়া দেখাতে হবে।ভালোবাসতে হবে এই বোবা জাতকে।তারা আজ কথা বলতে পারেনা বিধায় তাদের কষ্ট গুলো আমাদের অজানা।আমরা তাদের কষ্ট গুলো সম্পর্কে জানি না।আমরা যখন ঢিল ছুড়ি তখন ওর একটা ওদের শরীরে লাগলে যে কতটা জ্বালা করে তা ওরা বলতে পারে না যে,তাই-ই আমরা বুঝি না। ওদের খাবারের কষ্ট টাও আমরা বুঝি না।
আপনি নিজেকে দিয়ে কল্পনা করুন, আপনি ধরুন গভীর ঘুমে মগ্ন। এমন সময় আপনার কানের কাছে বিকট শব্দে কেউ বোমা ফাটালো। কেমন হবে বিষয়টা? বা,আপনার প্রতিদিন ভোরের গভীর ঘুমের কথাও ধরা যেতে পারে।আপনি তখন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। আপনার মা এসে আপনাকে ডাকতে আরম্ভ করলো কেমন লাগবে? আপনি খাবার খেতে বসলেন, আপনার পেট তখন ক্ষুধার জালায় ভুগছে ওমনি কেউ এসে আপনার প্লেটটা লাথি মেরে ফেলে দিলো, ভালো লাগবে তো আপনার?আপনার তো ঠিকই কষ্ট লাগবে,খারাপ লাগবে।
ঠিক তেমনই, ঐ বোবা প্রণীদেরও খারাপ লাগে,কষ্ট হয় তাদের।তারা শুধু বলতে পারেনা এই হচ্ছে সমস্যা।
মনে রাখবেন এরাও প্রতিটা ব্যথা,যন্ত্রনার জন্য ঐ বিধাতাকেই অভিযোগ জানায়।তারা কথা বলতে পারেনা ঠিকই কিন্তু বিধাতা একজন আছেন, যিনি সব দেখছেন।সুতরাং আপনি ইশ্বর বা আল্লাহর সেবা করতে তো পারছেনই না উল্টো তাকে রাগিয়ে দিচ্ছেন। কেন করছেন ভাই?শুধু শুধু একটা বোবা প্রাণীকে কষ্ট দিয়ে কি লাভ বলতে পারেন?
Congratulations @freakrafi! You have completed the following achievement on the Hive blockchain and have been rewarded with new badge(s):
Your next payout target is 50 HP.
The unit is Hive Power equivalent because your rewards can be split into HP and HBD
You can view your badges on your board and compare yourself to others in the Ranking
If you no longer want to receive notifications, reply to this comment with the word
STOP
To support your work, I also upvoted your post!
Check out the last post from @hivebuzz:
Support the HiveBuzz project. Vote for our proposal!