আশা করি সবাই ভালো আছেন। গত ৩ মে,২০২১,আমার মাসির বিয়ে হয়(২মে,২০২১, মাসির বিয়ে হওয়ার কথা ছিলো)। এইটা আমার জীবনে দেখা এক অদ্ভুত বিয়ে। সেই অদ্ভুত অভিজ্ঞতা আপনাদের সাথে ভাগভাগি করবো।
২ মে রাত, ঘড়িতে রাত ৯ টা বাজে।মেয়ের পক্ষের বাড়িতে অনেক হইচই। সবাই অনেক মজা করছিলো।সবাই গান, নাচ, আড্ডা ইত্যাদি বিভিন্নভাবে মজা করছিলো।কেউবা বিয়ের বিভিন্ন কাজে অংশ নিয়েছিলো। কেউবা মারোয়া বানাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছিল। আবার কেউ কেউ ব্যস্ত ছিলো ছবি তোলার কাজে।
অন্য দিকে ছেলে পক্ষের বাড়িতে তারাহুরো চলছে মেয়ে পক্ষের বাড়িতে রওনা দেওয়ার জন্য। ছেলে পক্ষের বাড়ি কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারীতে। আর মেয়ে পক্ষের বাড়ি গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায়। যেহেতু নদী পথে আসতে হবে তাই বর পক্ষের রওনা দেওয়ার কথা ছিলো বিকেলের মধ্যেই। কিন্তু কিছু নিয়ম কানুনের জন্য তারা ঠিক সময়ে রওনা হতে পারে নি। পরে নিয়ম কানুন মেনে তারা রাত ৯ টায় রওনা হয়। ঠিক সাড়ে ৯ টায় তার ঘাটে এসে পৌঁছায় এবং ১০ টার মধ্যেই তাদের নৌকা ছেড়ে দেয় মেয়ে পক্ষের বাড়ির উদ্দেশ্যে।রওনা দেওয়ার সাথে সাথেই তারা মেয়ে পক্ষের বাড়িতে জানিয়ে দেয় যে তারা রওনা দিয়েছে। আর ঠিক তিন থেকে চার ঘণ্টার মধ্যেই তারা মেয়ে পক্ষের বাড়িতে পৌঁছে যাবে।
মেয়ে পক্ষের সবাই অধীর আগ্রহে বসে আছে বর পক্ষের আসার অপেক্ষায়।সবার মধ্যে এক অন্য রকম অনুভূতি। জারণ আজকে দুটি মনের মিলন হবে। শুধু দুটি মন নয় দুটি পরিবারের মিলন হবে। একটা মেয়ে তার চিরচেনা পরিবার ছেড়ে চলে যাবে এক অচেনা পরিবারে।সেখানেই কাটাতে হবে তার নতুন জীবন মৃত্যুর আগে মুহুর্ত পর্যন্ত।
রাত ১১ টা প্রায়। কথায় আছে বিপদ কখনো বলে কয়ে আসে না। আকাশ কালো মেঘে ভরে গেছে। মাঝে মাঝে বিদুৎ চমকাচ্ছে। ঠিক সেই সময় একটা ফোন আসলো। ফোনটা আমার একটা মেসো করেছিল। তার গলা শুনে বোঝা যাচ্ছিলো যে উনি খুব বিপদে আছেন। এরি মধ্যে আকাশ থেকে বৃষ্টি পড়া শুরু হলো সাথে জোরে বাতাস। ফোনে মেসো বলল যে তারা এখন মাঝ নদীতে, তাদের নৌকা আগাচ্ছেও না পিছাচ্ছেও না। তারা কোনো রকমে একটা চরে উঠছে। যেহেতু রাতের বেলা ছিল তাই চরের আশেপাশে কোনো বাড়ি ঘর থাকলেও তারা অন্ধকারে দেখতে পায় নি। কথা শুনে সবার মুখে এক ধরণের চিন্তা দেখা দিলো। সবার মুখ থেকে হাসির ছাপটা সরে গেলো। মেসোর কথা শুনে আমার মা আমার বাবাকে ফোন দেয়। ফোন দিয়ে সব কিছু বলে। আমার বাবা আবার মেসোকে ফোন দেয়। ফোন দেওয়ার সাথে সাথেই মেসো বাবাকে বলে যে দাদা আমাদেরকে বাঁচান। বাবা মেসোকে বলে যে দ্রুত ৯৯৯ এ ফোন দিয়ে সাহায্য চাইতে। কিন্তু পরবর্তীতে ৯৯৯ এ ফোন দিয়ে কোনো কাজ হয় নি।
রাত ৩ঃ৩০। আমাদের কারো চোখে ঘুম নেই। সবাই চিন্তায় মগ্ন। আর অন্য দিকে ঝড় ছাড়ার লক্ষণ নেই। বাবা আবারো ফোন করলে মাকে আর বলল যে তারাতারি কিছু শুকনা কাপড় আর শুকনা খাবার নিয়ে নদীর ঘাটে যেতে। দেরী না করে আমাদের লোক জন চলে যায় নদীর ঘাটে। সেখানে যেতে প্রায় ৪৫ মিনিটের মতো লেগেছিল। ততক্ষণে হালকে দিনের আলো ফুটতে শুরু করে। তাদেরকে আনার জন্য নৌকা পাঠানো হয়। তারা একেক জন ঠান্ডায় কাপছিলো। ভগবান কৃপায় কেউ গুরুতর অসুস্থ হয় নি।
সকাল ৮ টার মধ্যেই বর সহ সবাই মেয়ে পক্ষের বাড়িতে এসে পৌঁছে যায়। পর্বতীতে আমরা যখন বর পক্ষের এক ব্যক্তিকে সেই ঘটনা সম্পর্কে জিঞ্জাসা করি উনি বলেন যে জল কম বেশি থাকায় ধাক্কা লাগার কারণে তাদের নৌকার পাখা ভেঙে যায়। তারা অনেক কষ্ট করে সাঁতার কেটে একটা চরে এসে দাড়ায় এবং তিনি অনুশোচনা করেন যে তারা যদি সঠিক সময়ে রওনা হতেন তাহলে এই ভয়ংকর ঘটনার সম্মুখীন হতেন না।
অবশেষে তাদের বিয়ে দুপুর ৩টায় সম্পন্ন হয়। হিন্দু ধর্মালম্বীদের বিয়ে সাধারণত রাতে হয়ে থাকে। কিন্তু আমার দেখা এটাই প্রথম বিয়ে যা দিনের আলোতে সম্পন্ন হলো। আশা করি তাদের দাম্পত্য জীবন সুখের হোক। আর সবার উদ্দেশ্যে একটা কথা হুটহাট সিদ্ধান্ত নিয়ে নিজের জীবনকে বিপদে ফেলবেন না সময়ের কাজ সময়ে করতে শিখুন । ধন্যবদ সকলকে।
I can't read it, but this is yet another beautiful eastern language. I had no idea the written word in Bangladesh was so artful. Puts my English to shame! Have a wonderful day! :)
Posted Using LeoFinance Beta
Thank you so much. Every mother tongue is very beautiful and loving.
My twiter link
আপনি বাংলাদেশে থাকেন?
Posted Using LeoFinance Beta
জ্বী।।।
I really missed it for the lockdown.
Yes. You missed a lot. But Don't worry there is many unmarried people and we will enjoy the next wedding ceremony... 🥰