সকালে হর্টিকালচার সেন্টারে গেলাম কিছু কাগজ সত্যায়িত করতে গেলাম। বাড়ি আসার পরে এরমধ্যেও কয়েকবার আসছি। কিন্তু ভেতরে আসা হয়নি। আজকে যেয়ে দেখি অফিসার নেই। গাছ দেখতে বের হইছে। কাগজ সত্যায়িত করতে দেরি হবে। একজন লোক বললো ভাই আধা ঘন্টা সময় লাগবে। আমি অপেক্ষা করতে থাকলাম। ভিতরের দিকে কিছুদুর হাটতে লাগলাম। এর আগে এই জায়গাটা অনেক খোলামেলা ছিলো। যেকোনো দিক দিয়েই ঢোকা যেতো। আমি প্রায় সময়ই এখানে আসতাম। হর্টিকালচারের পাশেই আমাদের জমি আছে এইজন্য মাঝেই মাঝেই আসা হতো। এছাড়াও পাশেই খেলার মাঠ থাকায় হর্টিকালচারের উপর দিয়ে যাওয়া হতো। ভিতরের দিকে আমি এর আগে যতোবার হাটতে গেছি আমার একটা কাহিনি মনে পরতো। একবার আমি আর এক বন্ধু সাইকেল চালিয়ে সোজা ভিতরে ঢুকে গেছিলাম। ওখানের যে গার্ড ছিলো আমাদেরকে অনেক বকাঝকা করছিলো। সরকারী অফিসের ভিতরে এভাবে সাইকেল চালিয়ে কেনো ঢুকলাম। আমরা তখন মাঠে খেলতেছিলাম। মাঠের পাশেই বরই বাগান ছিলো। আমাদের তখন অনেক বরই খেতে ইচ্ছা করছিলো। কিন্তু ওই বাগানে তখন লোক ছিলো না তাই আমরা হর্টিকালচারে আসছিলাম বরই নিতে। আর এই লোকের ঝাড়ি শুনে আমরা তখন মন খারাপ করে ওই বাগানে আবার যাই। তখন লোক আসছিলো আর আমাদের কে অনেকগুলো বরই এমনিতেই খাইতে দিছিলো। আমরা টাকা দিতে চাইছিলাম কিন্তু উনি নেন নাই। তখন আমাদের মনে হলো হর্টিকালচারের ভিতরে থেকে নিলে টাকা দিতে হতো। ভালোই হলো এখানে ফ্রি তে পেলাম। আজকেও আমার বার বার এই কথা মনে পরতেছিলো। কাগজ সত্যায়িত হয়ে গেলে সিল মারতে হবে। তখন সেই লোকটা কে দেখলাম যে আমাদের ছোট বেলায় ঝাড়ি দিছিলো। উনিই সব কাগজে সিল মেরে দিলেন।
এইখানে আমার অনেক মজার স্মৃতিও আছে। স্কুল পালিয়ে বন্ধুরা আমরা এখানে আড্ডা দিতাম। স্কুলের এক বড় আপু মাঝে মাঝেই আমাকে ডেকে কথা বলতো। কেমন আছি কি অবস্থা। আমার বড় ভাইয়ের বান্ধবী ছিলো আপু। একবার আমাকে বলে স্কুল শেষে তার সাথে দেখা করতে। স্কুলেরই এক জুনিওরকে নিয়ে আপু এখানে এসে বসে ছিলো। আমার সাথে এখানে দেখা করবে। সে গোলাপ ফুল নিয়ে আমার জন্য ওয়েট করতেছিলো। কিন্তু সেই আপুকে আমার অনেক ভয় লাগতো। স্কুল, কলেজ, ভার্সিটিতে এমন কিছু ভাইয়া আপু থাকে যাদের দেখে সবাই ভয় পায়। আপুও ছিলো ওরকম। আমি তখন ভয় পেয়ে আসি নাই। পরেরদিন যখন স্কুলে যেয়েই আপুর সাথে দেখা আর আমাকে বলে তোমার জন্য গতকাল আমি আর শাওন ওয়েট করতেছিলাম আসলা না যে। আর তখনই আমার এক বন্ধু সেই আপুকে ঝারি দেয়। আমার সেই বন্ধু আপুরও বন্ধু ছিলো। ও ড্রপ দিয়ে আমাদের সাথে ক্লাস করছিলো। আর আমারও ভালো বন্ধু হয়ে গেছিলো। এরপরে থেকে আপুর সাথে যতবার দেখা হতো চোখ গরম করে তাকায় থাকতো কিন্তু কিছু বলতো না।
হর্টিকালচারের চারিপাশে আগে এমন প্রাচীর দেয়া ছিলো না। ছোট বেলায় বাসায় যখন বেরাতে আসতো তখন খুব ভোরের দিকে আমরা এদিকে হাটতে আসতাম। মামার হাটার অভ্যাস ছিলো। একবার লিচুর সময় ভোরে আসছি আমরা। ভিতরে ঢুকে দেখি লিচুর বাগানে গাছ ভর্তি শুধু লিচু আর লিচু। মামাকে বলতেছিলাম যে লোকজন কেউ ছিলো না আমরা কয়েকটা লিচু পেরে নেই। কিন্তু কেউই সাহস করতেছিলাম না। গাছ যারা নিছিলো তারা মাচা বানায় শুয়ে থাকে। কিছুক্ষণ পরে দেখি মামা এক লোক ঘুমায় আছে ওর পাশে যেয়েই লিচু পেরে নিছে। যদি ওই লোক জেগে যেতো তাহলে খবর খারাপই ছিলো।
এরপরে একবার আমরা বন্ধুরা ও স্কুলে জুনিওর শাওন একটু আগে যার কথা বললাম। আমরা সবাই লিচুর সময় হর্টিকালচারে গেছি লিচু কিনবো বলে। ওখানকার লোক আমাদের লিচু পেরে দিচ্ছিলো আর আমরা সেগুলো নিয়ে এক জায়গায় রেখে দিচ্ছিলাম। কিন্তু শাওন একটা একটা করে লিচু ওর জ্যাকেটের ভিতরে ঢুকাচ্ছিলো। আমরা ওকে বেশ কয়েকবার মানা করছিলাম কিন্তু শোনে নাই। লিচু পারা শেষে ওও লোক যখন গাছ থেকে নামলো তখন শাওন কে ধরে ওর জ্যাকেট খুলে সব লিচুই নিয়ে নিলেন। আসলে উনি গাছে বসে সবই খেয়াল করছিলো। এরপরে আমরা ওখান থেকে বের হয়ে হাসতে হাসতে শেষ।
কাজ শেষ করে বাড়িতে ফিরছিলাম আর এইসব স্মৃতি মনে করে ভাবছিলাম আগে কতই সুন্দর দিন ছিলো।
Congratulations @amishahi! You have completed the following achievement on the Hive blockchain and have been rewarded with new badge(s) :
Your next target is to reach 90 posts.
You can view your badges on your board and compare yourself to others in the Ranking
If you no longer want to receive notifications, reply to this comment with the word
STOP
To support your work, I also upvoted your post!
Check out the last post from @hivebuzz:
Hi @amishahi, your post has been upvoted by @bdcommunity courtesy of @rehan12!
Support us by voting as a Hive Witness and/or by delegating HIVE POWER.
JOIN US ON
Kire Shahi!
আর রেএএ তাজিম ভাই!!