বাড়িতে দিনকাল

in BDCommunity3 years ago

IMG_20210821_102131182~2.jpg

বেশ কয়েকদিন ব্যস্ততার কারনে কোন লিখা পোস্ট করতে পারিনাই। প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে নতুন একটা কাজ যোগ হইছে। ভাগ্নে কে নিয়ে নতুন স্কুলে যেতে হয়। আপুর বেবি হবে তাই বাসাতে আছে। সকাল সাড়ে আটটায় ক্লাস শুরু। স্কুলে এখন কোচিং করাচ্ছে। সারাদিন এতো দুষ্টুমি করে এইজন্য ব্যস্ত রাখার জন্য নতুন একজন স্যার দেয়া হইছে। কিন্তু স্যার চলে যাওয়ার পরে আবারও সেই দুষ্টুমি। স্যার যে স্কুলে ক্লাস নেন ওখানে প্রতিদিন কোচিং করায়। ওখানে ভর্তি করে দিতে বললো। প্রথম দিন নিয়ে গেলাম প্রায় এক ঘন্টা দেরিতে। ঘুম থেকে উঠতে পারে না। আস্তে ধীরে ঘুম থেকে তোলার পরে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করাতে করাতে দেরি হয়ে যায়। স্কুলে নিয়ে যাওয়ার সময় ও অনেক এক্সসাইটেড হয়ে থাকে। নতুন স্কুলে নিয়ে যেয়ে দেখি ম্যাডাম বসে আছে। কোন ক্লাসে ভর্তি করাবো শুনলেন। ছোট বেলায় আমি এক আপুর কাছে প্রাইভেট পড়তাম। উনি এখানকার শিক্ষক শুনছি। প্রায় পনেরো বছর দেখা নেই। যেই ম্যাডামের সাথে কথা বলছি আমার মনে হচ্ছিলো উনিই সেই আপু। মাস্ক পরার কারনে কনফিউজড ছিলাম। পরে যখন শুনলো আমার বাসা কথায় মাস্ক খুলতে বললো। বলে চিনতে পারছি কি না। বললাম যে আমি কনফিউজড ছিলাম বলবো কি না। আমাকে দেখে বলে সেই ছোট বেলায় দেখছি তোমাকে এখনতো একদমই চেঞ্জ হয়ে গেছো। ভাগ্নেকে ভর্তি করায় দিয়ে আপুর সাথে বেশ কিছুক্ষন গল্প করলাম। আমরা ছোট থাকতে আপুরা আমাদের বাসার নিচে ভাড়া থাকতো। যখন প্রথম আপুরা আসলো তার কিছুদিন পরেই উনার একটা বেবি হলো। নাম ছিলো অরণ্য। আমাদের সবাই ওকে অনেক আদর করতাম।

IMG_20210723_145354887.PORTRAIT.jpg

স্কুলে এসে মনে পরলো আগে ছোট বেলায় আব্বা আমাকে আর আমার বড় ভাইকে একসাথে স্কুলে নিয়ে ভর্তি করায় দিছিলো। আর এখন আমরা বাসার পিচ্চিদের নিয়ে যাচ্ছি ভর্তি করায় দিতে। অবশ্য আমি সেই সময় আমার ভাগ্নের মত এক্সসাইটেড ছিলাম না। স্কুলে যেতে একদমই ইচ্ছা করতো না। আব্বার অফিসের এক আয়া প্রতিদিন আমাকে কোলে করে স্কুলে নিয়ে যেতো আর আসতো।
এইসব ভাবতে ভাবতে ভাগ্নের ক্লাস শেষ হয়ে গেলো। ওকে নিয়ে বাসায় ফিরতেছি। ভ্যান ধরতে হলে স্কুল থেকে বেশ কিছুদূর পথ হেটে যেতে হয়। এতটুকু হাটতেই বলে মামা ভ্যান নাও আর তো হাটতে পারিনা। বললাম চল আজকে হেটে বাসায় যাই কিন্তু ও একদম রাজি না। বলে না মামা অনেক দূরে হেটে যাওয়া যাবে না। কিন্তু আসলে বাসা পাঁচ মিনিটের হাটা পথ। পরে ভ্যান থেকে বাসার সামনে নামতেই বলে দেখছো মামা বাসা কতদূরে। ছোট বাচ্চাদের কথা শুনতেই ভালো লাগে।
সকালে বের হবার সময় আমারও নাস্তা করা হয়না। ঘুম থেকে উঠে আমিও কোনরকম রেডি হয়ে বের হয়ে যাই। বাসায় এসে খাওয়াদাওয়া করে আবার ভাগ্নের স্যার আসে ওকে পড়াতে। ওর আবার সপ্তাহ খানেক হলো হুজুর আসতেছে আরবি পড়াতে। প্রথম দিন হুজুর ওকে বলে বল বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম আর ও বলে না আমি বলতে পারবো না। আপু আর আমি পাশে বসে ছিলাম হাসি কোনরকম চেপে ছিলাম। ও আবার বৃষ্টি আসলে অনেক ভয় পায়। দরজা জানালা সব বন্ধ করে দিতে চায়। সেদিন হুজুর যখন আসছে কিছুখন পরেই ঝুম বৃষ্টি শুরু হলো। একটু পরে দেখি আপু হাসতে হাসতে আমাকে বলে রুমে গিয়ে দেখে ও হুজুরের কোলের মধ্যে ঘাপটি মেরে চুপ করে বসে আছে।
ছোট বাচ্চাদের এই কাজগুলো অনেক মজার লাগে। ভাঙ্গা ভাঙ্গা করে কথা বলে। আমি বাহিরে থেকে বাসায় আসলেই গেট খুলে দিয়ে বলে মামা আমার জন্য কি নিনে আসসো। কুছু নিনে আসো নাই। কেন নিনে আসো নাই। আর সাথে কোন ব্যাগ দেখলেই মনে করে ব্যাগে যা আছে সব কিছু ওর। ওর জন্য কোন জিনিস থাকলে সেটা বের করে দিলেও ওকে ব্যাগ দেখাতে হয় আর কিছু আছে কিনা। ছোট বাচ্চাদের এই ব্যাপার গুলো অনেক কিউট লাগে কিন্তু বড় হলে আর এগুলো ভালো লাগে না। তখন মনে হয় কেনো বড় হলো। ছোট থাকতেই তো ভালো ছিলো।

Sort:  

Hi @amishahi, your post has been upvoted by @bdcommunity courtesy of @rehan12!


Support us by voting as a Hive Witness and/or by delegating HIVE POWER.

JOIN US ON