কুরবানী চলে এসেছে । আসছে ২২শে আগস্ট ইনশাআল্লাহ আমরা সবাই যার যার সাধ্যমতো কুরবানী করার চেষ্টা করব ।
আমাদের এক মাত্র উদ্দেশ্য থাকতে থাকবে মহান আল্লাহ কে খুশি করে তার সন্তুষ্টি অর্জন করা । আমরা সবাই চেষ্টা করব কুরবানীর হাটে গিয়ে সুন্দর দেখে পশু কিনে কোরবানি দেওয়ার । নিজেদের সন্তুষ্টি অথবা সমাজে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত হিসেবে দাম পাওয়ার জন্য কুরবানীর মন মানষিকতা পরিহার করে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা আমাদের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত ।
source
কুরবানীর পশু যেন সুন্দর হয় সে জন্য কিছু গুণাগুণ আমাদের লক্ষ্য রাখা উচিত । এইসব গুনাগুন পর্যবেক্ষণ করে কুরবানী পশু ক্রয় করা প্রয়োজন । নিম্নে কুরবানীর পশু বাছাইকরণ কিছু প্রক্রিয়া বা গুনাগুন আপনাদের উপকারের লক্ষ্যে তুলে ধরার চেষ্টা করলাম :
=> কুরবানির গরু কিনতে যাওয়া সময় অভিজ্ঞ কাউকে সঙ্গে নিয়ে যাওয়া প্রয়োজন । যে অভিজ্ঞ মানুষ টি ভালো ও সুস্থ ও সঠিকভাবে চিনতে পারে এবং গুনাগুন যাচাই করে সঠিক গরু নির্বাচন করতে পারে ।
=> গরু কুরবানী দেওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের প্রথমেই যে বিষয়টি দেখতে হবে সেটি হলো তার বয়স । কুরবানীর জন্য অন্তত দুই বছর হওয়া গরু বাছাই করতে হবে । সুস্থ পূর্ণবয়স্ক গরুর দাঁত দেখে ৫ বছর বয়স পর্যন্ত গরু বাছাই করা যায় ।
দুই বছর বয়স গরুর ২টি, তিন বছর বয়সে ৪টি, চার বছর বয়সে ৬টি এবং পাঁচ বছর বয়সে ৮টি কর্তন দাঁত থাকে।
গরুর দাঁত গুলো অক্ষত ও সুন্দর দেখে বাছাই করার চেষ্টা করব ।
source
=> ছাগলের ক্ষেত্রে কমপক্ষে এক বছর বয়স হওয়া প্রয়োজন । ভেড়ার বয়স এক বছর হতে হবে কিন্তু যদি ছয় মাস বয়সে অনেকটা দেখতে বড় সরো হয় তাহলে কুরবানী করা যাবে । উটের ক্ষেত্রে কমপক্ষে পাঁচ বছর বয়স হতে হবে ।
=> আমরা চেষ্টা করব দিনের আলোতেই যেন পশু বাছাই করে কিনা যায় । কারণ অন্ধকারে অনেক সময় অসুস্থ বা রোগাক্রান্ত পশু বাছাই করা সম্ভব হয় না ।
=> অসুস্থ পশু বাছাই করার একটি সুন্দর প্রক্রিয়া হল তার মুখে কিছু খাবার ধরে দেখা । সুস্থ পশু খাবার খাবে সহজে কিন্তু অসুস্থ পশু সহজে খাবার খেতে চায় না ।
=> একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল গর্ভবতী কিনা তা বাছাই করা । কারণ পশু গর্ভবতী হলে কুরবানী দেওয়া হারাম ।
=> সুস্থ ও সুন্দর গরুর কুঁজ মোটা ও টানটান হয় ।
=> পশু কিনার আগে ঠিকমতো পরীক্ষা করে নিন শরীরের কোন অংশে ক্ষত আছে কিনা । শিং ভাঙ্গা, লেজ, মুখ, দাঁত, খুর ঠিকমতো পরীক্ষা করে নিন কোন সমস্যা চোখে পরে কি না ।
=> কুরবানীর সময় আমরা সবাই চাই বড় সাইজের পশু কিনতে । এইসব বড় সাইজের গরু অনেক সময় ইনজেকশন বা হরমোন ট্যাবলেট খাওয়ানো হয়ে থাকে । তাই আমরা চেষ্টা করব মাঝারি সাইজের গরু বা পশু বাছাই করে কুরবানী করার ।
=> গরু বাছাই করার ক্ষেত্রে দেশি গরু বাছাই করা ভালো । কেননা বাহির থেকে আসা পশু অনেক সময় আঘাতপ্রাপ্ত হয় অথবা ক্লান্ত থাকার কারণে ঝিমাতে থাকে সে ক্ষেত্রে গরু সুস্থ না অসুস্থ সেটা বুঝা যায় না ।
=> শরীরে অতিরিক্ত পানি জমার কারণে হরমোন দেওয়া গরু বেশি আকর্ষণীয় ও মোটা দেখা যায় । এটা পরীক্ষা করার উপায় হল এদের শরীরে আঙুল দিয়ে চাপ দিলে সেখানে গর্ত হয়ে থাকে যা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে না ।অসুস্থ পশুর মুখে অতিরিক্ত ফেনা থাকবে ।
=> কুরবানী ক্ষেত্রে আরেকটি বিষয় হলো মোটা গরু মানে সুস্থ মা ভালো গরু নয় । মোটা বা স্বাস্থ্যবান করতে চর্বির পরিমাণ বেশি থাকে যা মানুষের স্বাস্থ্যের ঝুঁকি অনেক বাড়িয়ে দেয় । আরেকটি সম্ভাবনা থাকে বিভিন্ন ওষুধ দিয়ে গরু মোটা করা যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর তাই এই ধরনের গরু বাছাই করা করার থেকে বিরত থাকাই ভালো ।
=> কোরবানির পশু কেনার ক্ষেত্রে আমরা চেষ্টা করব আকর্ষণীয় রংয়ের পশু বাছাই করার যা দেখতে সুন্দর হয় ।
এসব বিষয় পর্যবেক্ষণ করে অনাকাঙ্ক্ষিত বিপদ থেকে বাঁচা এবং সুস্থ ও সুন্দর পশু বাছাই করে আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য কোরবানি করা আমাদের প্রধান লক্ষ্য হওয়া প্রয়োজন ।
আমার ক্ষুদ্র জ্ঞান থেকে আসন্ন কোরবানির জন্য পশু নির্বাচন করার কিছু গুনাগুন আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করলাম । যদি আরো কোন কিছু প্রয়োজনীয় ব্যাপার থাকে তাহলে পরামর্শ দিয়ে সাহায্য করুন ।
খুবই সময়াপযোগী লেখা। মনের অজান্তে অনেক নিয়ম কানুন ভুলে যাই যা আপনার লেখা পড়ার মাধ্যমে মনে পড়েছে। ধন্যবাদ সুন্দর লেখার জন্য।
Thanks for your comment
সময়োপযোগি লেখা। অনেক কিছুই জানতে পারলাম। আশা করি সকলের উপকার এ আসবে।
Thanks
Khub sundor hoise.. Samnei amader kurbani. Allah amader sobar kurbani kobur korun.. Ameen.