সুস্থ নারী, সুস্থ নগরী’-এই স্লোগানকে সামনে রেখে ব্র্যাকের উদ্যোগে ঢাকায় প্রথমবারের মতো চালু হল নারীদের জন্য আধুনিক, স্বাস্থ্যসম্মত ও নিরাপদ টয়লেট। সম্প্রতি রাজধানীর গাউছিয়া মার্কেটের নূর ম্যানশনের তৃতীয় তলায় এর উদ্বোধন করেন অভিনেত্রী ও স্থাপত্যশিল্পী অপি করিম।
নারীদের জন্য আধুনিক, স্বাস্থ্যসম্মত ও নিরাপদ টয়লেটের নকশা করেছেন অপি করিম। এর সঙ্গে যুক্ত হওয়া প্রসঙ্গে অপি করিম বলেন, এ রকম একটি উদ্যোগের সূচনালগ্নে থাকতে পেরে আমি আনন্দিত। আমি অভিনেত্রী হলেও এরচেয়ে বড় জায়গা স্থপতি হিসেবে আমার একটা দায়িত্ব রয়েছে। আমার মনে হয়েছে, আমিও নারীর জন্য স্বাস্থ্যসম্মত, নিরাপদ টয়লেটের নকশা করতে পারি। আমার অনুজ স্থপতি বন্ধু, সহকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তারাও ভেবেছেন আমি এই কাজটি করতে পারব। শুধু অভিনেত্রী হলে হয়তো এ কাজটি পেতাম না। স্থাপত্য বিদ্যার ওপর ডিগ্রি থাকায় এ সুযোগটি পেয়েছি। এখানে ব্যবহারকারী এবং ব্যবস্থাপনাকারী উভয়পক্ষই এর পরিচ্ছন্নতা ও নিরাপত্তার বিষয়ে সচেতন থাকবেন। দু’পক্ষেরই এর ব্যবহারে শিক্ষার ব্যাপার রয়েছে। নারীর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় এটা পরিষ্কার রাখা দরকার।
ব্র্যাকের পরিচালক ড. ফয়সল চৌধুরীর মতে, নারীর অধিকার ও মর্যাদা রক্ষায় ব্র্যাক শুরু থেকেই কাজ করছে। সবার সহযোগিতা পেলে ব্র্যাক এ রকম উদ্যোগকে টেকসই মডেল হিসেবে শহরগুলোতে ছড়িয়ে দেবে।
শুধু নারীরাই এই টয়লেট ব্যবহারের সুবিধা পাবেন। নিরাপত্তার স্বার্থে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত নিয়োজিত থাকবেন দুইজন নারী কর্মচারী। এছাড়া একজন পরিচ্ছন্নতা কর্মী সার্বক্ষণিক নিয়োজিত থাকবেন। সহজে পানি নির্গমন ও পরিচ্ছন্নতা রক্ষার্থে মানসম্পন্ন উপকরণ ব্যবহার করা হয়েছে। ব্র্যাকের অর্থায়নে প্রায় ৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘ভূমিজ’ নামে একটি সামাজিক উদ্যোগ এটি পাইলট প্রকল্প হিসেবে চালু করে। ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের সহযোগিতায় মার্কেটটির একটি টয়লেট সংস্কারের মাধ্যমে এই আধুনিকায়ন করা হয়।
নূর ম্যানশন দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুর রশিদ জীবন বলেন, আগে নারী-পুরুষ সবাই এই মার্কেটের টয়লেটগুলো ব্যবহার করতেন। এতে নারীরা সংকোচবোধ করতেন। এখন আলাদা টয়লেট হওয়ায় তাদের অসুবিধা দূর হবে।
জনসমাগম, পথচারীদের প্রবেশগম্যতা ও নিরাপত্তার বিষয় বিবেচনায় রেখে রাজধানীর ৩২টি গুরুত্বপূর্ণ স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য গাউছিয়া, নিউমার্কেট, ফার্মগেট, মগবাজার, মালিবাগ, মৌচাক, উত্তরা, মহাখালী, মিরপুর ইত্যাদি। জনসাধারণের সাড়া পেলে আগামী এক বছরের মধ্যে নগরীতে ১০০টি টয়লেট করার পরিকল্পনা আছে। মার্কেট চলাকালীন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত এই টয়লেট ব্যবহার করা যাবে। প্রাথমিকভাবে এটি ব্যবহারের ফি নির্ধারণ করা হয়েছে জনপ্রতি ১০ টাকা।
ভূমিজ সামাজিক উদ্যোগের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও নগর পরিকল্পনাবিদ ফারহানা রশীদ জানান, ২০১৬-২০১৭ সালে নগরীতে ২০০ জনের ওপর এক গবেষণা জরিপে দেখা যায়, ঢাকা শহরে ৮০ শতাংশ নারী ঘর থেকে বের হওয়ার সময় পানি খান না। কারণ এই শহরে নারীদের জন্য পর্যাপ্ত টয়লেট না থাকায় পানি খেলে তাদের নানা বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। গবেষণায় আরও দেখা যায়, ২০২০ সাল পর্যন্ত ঢাকা শহরে অন্তত ৩ হাজার টয়লেট দরকার।
THanks for Sharing
nice post
porostek jonno kobe bobe?