ভারতের মাটিতে চলতি একদিনের ক্রিকেট বিশ্বকাপের সময় এখন শেষের দিকে। দুই সেমিফাইনালের মধ্যে গতকালকে বুধবারে প্রথম সেমিফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল ভারত ও নিউজিল্যান্ড। লীগ পর্বের সবগুলো ম্যাচ অপরাজিত থেকে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থাকা দল ভারত ও নয় ম্যাচের মধ্যে পাঁচ ম্যাচ জিতে পয়েন্ট টেবিলের চতুর্থ নম্বরে থাকা দল নিউজিল্যান্ড। একদিকে দুইবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন দল ভারত আর অন্য দিকে কোনো শিরোপার মুখ না দেখা দল নিউজিল্যান্ড। তবে দল হিসেবে নিউজিল্যান্ড কোনো দিক দিয়ে কম নয়। ২০১৫ ও ২০১৯ সালে টানা দুই বার বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলা দল নিউজিল্যান্ড। এবার সেমিফাইনালে উঠে ভারতের কাছে হেরে শিরোপা জয়ের আক্ষেপটা আরও দীর্ঘাযিত হলো।
এইবার বিশ্বকাপটা ভারতের মাটিতে হওয়ায় খুব সভাবিকভাবেই হট ফেভারিট এর তালিকায় প্রথমেই রাখা হয়েছিল ভারতকে। গত বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পরাজিত হয়েই বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিতে হয়েছিল ভারতকে। আর এইবার সেই প্রতিশোধ টাই নিলেন স্বাগতিকরা। নিউজিল্যান্ডকে ৭০ রানে হারিয়ে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় দিয়ে রোহিত সর্মারা। সাথে সাথে বিশ্বকাপের ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে তারা। আর এইদিকে নিউজিল্যান্ড ২০১৫ সালের বিশ্বকাপ ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে ও ২০১৯ সালের বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের কাছে হেরে শিরোপার কাছ থেকে ফিরে আসতে হয় তাদেরকে।
আর এখন ২০২৩ সালের বিশ্বকাপে সেমিফাইনালে ভারতের কাছে ৭০ রানে হারলো কেন উইলিয়ামসন এর দল। শুরুতে টসে জিতে ৩৯৮ রানের বিশাল লক্ষ্য দেয় ভারত। আর সেই লক্ষ্য তারা করতেই ৩৯ রানেই দুই উইকেট হারিয়ে ফেলে নিউজিল্যান্ড। নিউজিল্যান্ডের দুই ওপেনার রচিন রবীন্দ্র ও ডেভন কনওয়ে দুইজনই ব্যাট হাতে ব্যার্থ ছিলো ভারতের বিপক্ষে। শুরুতেই মোহাম্মদ সামির দুর্দান্ত বোলিংয়ে দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে নিউজিল্যান্ড। এরপর কেন উইলিয়ামসন ও ড্যারিল মিচেল মিলে ১৭৯ রানের পার্টনারশিপ করে। তখন মনে হচ্ছিলো খেলা ধীরে ধীরে নিউজিল্যান্ডের হাতে চলে আসতেছে।
কিন্তু না কেন উইলিয়ামসন এর আউট হওয়ার পর সাথে সাথে আর একটা উইকেট হারায় তারা। মোহাম্মদ সামির প্রথম ৪ উইকেট নেওয়া নিউজিল্যান্ডকে আরো চাপে ফেলে। এরপর ২৯৫ রানে গ্লেন ফিলিপস এর উইকেট হারানোর পর নিউজিল্যান্ডের ইনিংস আরো কঠিন হতে থাকে। কারণ তখন নির্ধারিত ৫০ ওভারের মধ্যে খুব একটা বল বাকি ছিলো না নিউজিল্যান্ডের হাতে। ড্যারিল মিচেল এর ১১৯ বলে ১৩৪ রানে দুর্দান্ত ইনিংস, কেন উইলিয়ামসন এর ৭৩ বলে ৬৯ রান ও গ্লেন ফিলিপস এর ৩৩ বলে ৪১ রানের ইনিংস দিয়েও ৩৯৮ রানের বিশাল লক্ষ্য স্পর্শ করতে পারলো না নিউজিল্যান্ড। ৪৮ ওভার ৫ বলে ৩২৭ রানে সব উইকেট হারিয়ে ফেলে তারা।
আর এইদিকে প্রথমে ব্যাটিং করতে নেমে শুরু থেকেই ভালো অবস্থানে ছিল ভারত। মাত্র চার উইকেট হারিয়ে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৩৯৭ রান করে রোহিত শর্মার দল। ২৯ বলে ৪৭ রান করে আউট হন রোহিত শর্মা।১১৩ বলে ১১৭ রান করে ওডিআই ক্যারিয়ারের ৫০ তম ছেঞ্চুরি তুলে নেয় ভিরাট কোহলি। আর সেই সাথে শচীন টেন্ডুলকার এর ওয়ানডে ইতিহাসকে টপকে এক ধাপ উপরে এখন ভিরাট কোহলি। ৭০ বলে ১০৫ রান করেন শ্রেয়াস আইয়ার, ৬৬ বলে ৮০ রান করেন শুবমন গিল। আর এইদিকে বোলিংয়ে মোহাম্মদ সামির নয় ওভার পাঁচ বলে ৭ উইকেট অর্জনে ভারতের নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৭০ রানের জয়। এক ইনিংসে ৭ উইকেট তুলে নিয়ে ম্যাচ সেরা হন মোহাম্মদ সামি।