অশুভ শক্তি যেন আর ক্ষমতায় আসতে না পারে – প্রধানমন্ত্রী
অশুভ শক্তি বলতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আসলে কি বোঝাতে চেয়েছেন সেটা কি আপনি আমি জানি? সরকার কি কোন ব্যাখ্যা দিয়েছেন? আমি জানি না অর্থাৎ জানা নেই এটা আমার অজ্ঞতা। আমাদের সমাজে তিন ধরণের প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। এক. ধর্মীয় বিশ্বাস ও সংস্কৃতিকে অর্থাৎ যারা ধর্মকে সর্বোচ্চ জীবন ধারণের মাপকাঠি হিসাবে মেনে চলে। সে মুসলিম হোক, হিন্দু হোক বা অন্য যেকোন ধর্মের মানুষ হোক না কেন তারা পরিবার তথা সমাজে ধর্মীয় অনুশাসন জারি রাখার পক্ষে। এই গোষ্টি মনে করে ধর্মীয় সংস্কৃতি সর্বোৎকৃষ্ট জীবন বিধান। দেশের আইন-কানুন রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার অধীন। রাষ্ট্রের সার্ভৌমত্ব কেউ অস্বীকার করে না। এবং রাষ্ট্র সকল নাগরিকের আইনী ব্যবস্থা পাওয়ার ক্ষেত্রে সমতা বাজায় রাখে। পৃথিবীতে শান্তি বজায় রাখার ক্ষেত্রে ধর্মীয় বিশ্বাস সবচেয়ে কার্যকর ভুমিকা রেখেছে। রাষ্ট্রের সংবিধানও ধর্ম পালনের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছে। এর কারণ ধর্মের বিশ্বাসের মূল উপজীব্য হলো পারলৌকিক বিশ্বাস। অর্থাৎ মৃত্যুর পরে জান্নাত ও জাহান্নামের সুখময় শান্তি ও ভয়ঙ্কর শাস্তির ব্যাপারে নিশ্চিত বিশ্বাস। আমরা যারা মুলিসম তারা আল্লাহ সুবহানাতালার একাত্ববাদের উপর অবিচল বিশ্বাস রাখি। এর মানে নিজের বা অতি আপনজনের জীবনের চেয়ে আল্লাহ ও তার রসূল হযরত মুহাম্মদ (স.) এর মর্যাদা অনেক বেশি তা মেনে চলি। প্রত্যেক মুসলিম কুর’আনকে সম্পূর্ণ ও অদ্বিতীয় জীবন বিধান হিসাবে ব্যক্তি ও পারিবারিক জীবনে অবশ্যই মেনে চলে। মুসলমানরা ধর্মীয় রীতি নীতির ক্ষেত্রে কোন আপস করে না। আবার ইসলাম সামাজিক সাম্যকেও অগ্রাহ্য করে না। ইসলাম কোন ধরণের অশলীলতা বরদাস্ত করে না। যেমন – মাদক সেবন, ব্যভিচার, অশালীন পোশাক, ইভ টিজিং, ধর্ষণ, সুদ, ঘুষ, দুর্নীতি, অন্যের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করা, রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপচয় করা, মিথ্যার চর্চাকে কৌশল বলে চালিয়ে দেয়া, গিবতের মাধ্যমে ক্ষমতা আক্রে থাকা ইত্যাদি ইসলামে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। আর এসব যাদের কাছে পাপ হিসাবে গন্য হয় না তাদের জন্য পৃথিবী ও পরকালে কোন মর্যাদা নেই। মুসলিমরা বিশ্বাস করে আল্লাহ যাকে মর্যাদা দেন কে তাকে অমর্যাদা করে আর আল্লাহ যাকে অমর্যাদা করেন কে তাকে মর্যাদা দেয়? প্রত্যেক মুসলামিই জানেন, মুসলিমরাই মুনাফিক হয়। আর মুনাফিকরা হবে চিরস্থায়ী জাহান্নামী। এবং মুনাফিকদের শাস্তি সবচেয়ে নিকৃষ্ট হবে। মুনাফিক কাদের বলে এরা মুখে কালিমা পড়ে, নামজ পড়ে, রোজা করে হজ্জ পালন করে কিন্তু যখন কথা বলে মিথ্যা বলে, অন্যের সম্পদ গ্রাস করে এবং শপথ করে শপথ রক্ষা করে না। মুনাফিকের সবচেয়ে বড় উদাহরণ হিসাবে একজন দুর্নীতিগ্রস্থ পুলিশ কর্মকর্তাকে বিবেচনা করা যেতে পারে। ধরা যাক একজন মধ্যমশ্রেণীর পুলিশ অফিসার তার নাম হাছান। পুলিশ অফিসার হাছান উদ্দেশ্যমূলকভাব একজন নিরাপরাধ ব্যক্তি মান্নানের বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা মামলা করল। যেহেতু মামলাটি মিথ্যা সেহেতু তিনি একটি মিথ্যা চার্জশিট আদলতে দাখিল করলেন এবং বিচারক তাকে সাজা দিয়ে দিল। এখন দেখা যাক পুলিশ অফিসার হাসন কি একজন মুনাফিক? প্রথমতঃ পুলিশ অফিসার হাছন মান্নানের বিষয়ে শতভাগ মিথ্যা বলেছেন, দ্বিতীয়তঃ পুলিশ অফিসাররের দায়িত্ব ছিল মান্নানের জান মালের হেফাজত করা অথচ সে মান্ননের জান মালের ক্ষতি সাধন করেছেন, তৃতীয়ত, হাছান চাকরিতে যোগ দেয়ার পূর্বে শপথ নিয়েছিলেন, যে কোন মূল্যে তিনি শিষ্ঠের পালন দুষ্টের দমন করবেন। কিন্তু তিনি মান্নানের ব্যাপারে সম্পূর্ণরূপে শপথ ভঙ্গ করছেন। তা হলে দেখা গেল পুলিশ অফিসার হাছান মুনাফিক হওয়ার সবগুলো শর্ত চমৎকারভাবে পূরণ করেছেন। কাজেই হাছান একজন নিকৃষ্ট মুনাফিক। এখন বাংলাদেশের শাসন ব্যবস্থার ক্ষেত্রে হাছানকে প্রশ্ন করেলে তিনি নিজের দোষ স্বীকার না করে বলবেন ঊর্ধতন কর্মকার্তার (উপরের) নির্দেশে তিনি এই মিথ্যা মামলা করেছেন। এখন ঊর্ধতন কর্মকর্তার কাছে জানতে চাইলে তিনিও বলবেন বাধ্য হয়েই উপরের নির্দেশে (মানে সরকারের নির্দেশে) তিনি এই জাতীয় নির্দেশ দিতে বাধ্য হয়েছেন। তাহলে একজন মুসলিমের মুনাফিক হওয়ার সুযোগ নেই ইসলাম ধর্মে অর্থাৎ আল্লাহর বিধানে। আর বাংলাদেশে অমুনাফিক মুসলিমের সংখ্যা মোট জনসংখ্যার আনুমানিক ৮০ শতাংশ। এরকম বিপদগ্রস্থ পুলিশ অফিসারকে বলব আপনি একজন ভাল আলেমের সাথে কথা বলুন। যদি অমুনাফিক মুসলিম হিসাবে মৃত্যু বরণ করতে এবং আল্লাহর অনুগ্রহ পেতে চান।