Bachelor life

in #bangladeshibachelorlife7 years ago (edited)

সকাল ১১.৫০, নিকি মিনাজের Lookin Ass গাইতে গাইতে অর্নবদার মোবাইল বাজিয়া উঠিলো। ঘুম আক্রান্ত চোখ আবছা মেলিয়া দেখিলো বেলা তাহাকে স্বরণ করিয়াছে।
কণ্ঠে প্রবল মাত্রার ভালোবাসা নিয়া বলিলো "বলো . . . "
জান বলিবার পূর্বে পুরুষ কণ্ঠ শুনিয়া কিঞ্চিত বিচলিত হইয়া পুনরায় দেখিয়া বুঝিল ইহা বেলা নহে ইহা তাহার বাবা।
"কোথায় তুমি পুত্র?"
"বাবা আমি বাসায়"
"তোমার বাসা অমুক জায়গার অমুক নাম্বার রোডের অমুক ভিলা না?"
"জ্বি বাবা। কেনো?"
"আজকে ছুটির দিন ভাবিলাম তোমাকে একবার দেখিয়া যাই। তাই তোমার বাসার দিকে গমন করিয়াছি, তোমার বাসায় পৌঁছাইতে আর ২ মিনিট লাগিবে পুত্র"
মোবাইলে কামড় দিয়া অর্নবদা নিশ্চিত হইলো ইহা বাস্তব নির্মম সত্য। রকেট বেগে উঠিয়া প্রথমে সিগারেটের প্যাকেট আর তাসের প্যাকেট নিরাপদ জায়গায় রাখিয়া রুম গোছানোয় ব্যাস্ত হইয়া পড়িলো। তবে ২ মিনিট খুবই নগন্য সময় একজন ব্যাচেলরের রুমকে শোভনীয় করার। দরজায় টোকা পরা মাত্রই অর্নবদা নিশ্চিত হইয়া গেলো তাহার পিতা চলিয়া আসিয়াছেন। তৃষ্ণার্ত পিতা পানির পাত্রের দিকে চাহিয়া বুঝিলেন পানি চাহিয়া পুত্রকে লজ্জিত করা ঠিক হইবে না।
পিতার দিকে চাহিয়া অর্নবদা নিজেকে বড়ই অপরাধী ভাবিতে লাগিলেন পিতাকে আপ্যায়ন করার মত পানিটুকু দিতে ব্যার্থ সে। তবে অতিথি আপ্যায়ন না করার মত এতটা সংকীর্ণ হৃদয় তাহার নেই। কিন্তু বেনসন লাইট দিয়ে পিতাকে আপ্যায়ন করিতে চাহিলে অর্নবদা অভিশাপ বৈকি কিছুই পাইবেন না সেই সম্পর্কে তিনি যথেষ্ট অবগত আছেন। তাই অতি মাত্রায় চতুরতা না দেখাইয়া পিতার সাথে কুশলাদি আলাপ করিতে লাগিলেন। পড়ালেখার খোঁজ্ খবর শেষে পিতা রুমমেটদের অবস্থান জানিতে চাহিলেন। বন্ধের দিনেও বিশেষ ক্লাস আছে বলিয়া পিতাকে পাশ কাটাইয়া গেলেন, চক্ষু লজ্জার কারণে কহিতে পারিলেন না ছুটির বিশেষ দিনে তাহারা লিটনের ফ্ল্যাটে বিশেষ ক্লাশ করিতেছেন।
পিতা তাহার পুত্রের রুম দেখিয়া বড়ই বিচলিত হইলেন রুমের মেঝেতে বিশাল ধুলোর আস্তর, সিলিংয়ে মাকড়শার জাল দেখিয়া পিতা ঠিক বুঝিতে পারিলেন না তাহার পুত্রের ঘরে কি মাকড়শা, নাকি তাহার পুত্রই মাকড়শার ঘরে বিরক্তিকর প্রানি হিসেবে ঘর বাঁধিয়াছেন? গভীর চিন্তা ভাবনা শেষে পিতা পুত্রকে মনোযোগ আকর্ষণ করিতে বলিলেন।
" পুত্র তোমার থাকার পরিবেশ দেখিয়া আমি সত্যিই আশাহত। তোমার কিছুতেই কোনো শৃঙ্খলা নেই, সবকিছু বড় অগোছালো এই মুহূর্তে এমন কাওকে প্রয়োজন যে তোমার এগুলো গুছিয়ে দিতে পারে।"
মোবাইলে বেলার সাথে চ্যাটে ব্যাস্ত থাকা অমনোযোগী অর্নব শুনিলেন " যে তোমার জীবন গুছিয়ে দিতে পারে" রাত দিন স্বপ্নে বিভোর থাকা অর্নব আর দেরি করিলেন না খুশির খবর সঙ্গে সঙ্গে বেলাকে জানানোর জন্য ব্যাস্ত হইয়া টাইপিং শুরু করিলেন " শুনছো বেলা অবশেষে পিতার মর্জি হইয়াছে ............................................. "
পিতা আর ক্রোধ সংবরন করিতে পারিলেন না উচ্চ স্বরে বলিয়া উঠিলেন
" বেত্তমিজ আমি বুয়ার কথা বলিতেছি বউ এর কথা না।""
আবারো বাঁশ খাওয়া হৃদয় নিয়া অর্নবদা মোবাইলের দিকে চাহিয়া রইলেন কারন ততক্ষনে মোবাইলের সেন্ড বাটনে চাপ দেওয়া হইয়া গিয়াছে। প্রশস্ত একটি শ্বাস নিয়া অর্নবদা সামনের বিশাল চাপ গুলা মোকাবিলার জন্য মানসিক ভাবে প্রস্তুতি নিতে লাগিলেন।
এরকম বাঁশের মধ্যে থেকেই মানবেতর জীবনযাপন করি আমরা ব্যাচেলরেরা। অনেক কিছু না পাওয়ার পরেও যে জিনিসটি সবচেয়ে বেশি উপভোগ করি তা হল নির্মল স্বাধীনতা। জীবনটাকে উপভোগ করার জন্য সবচেয়ে মোক্ষম সময় এটিই। আপনার ইচ্ছামতো আপনি সব ই করতে পারবেন, এখানে বাধা দেওয়ার মত কেউ নেই। তার পরেও আমার বাবা মায়ের মত অতি চিন্তিত যাদের পিতা মাতা তাদের কে একটু ম্যানেজ করতে হয় মাঝে মাঝে। তবে আমি সবসময় ই চেষ্টা করি বাবা মাকে না জানিয়ে এমন কিছু না করতে যাতে বাবা মা কষ্ট পায়। আমার মায়ের ভাষ্য অনুযায়ী " জীবনে একটু কষ্ট করো পরে অনেক সময় পাবে" কিন্তু পরিস্থিতি অনুযায়ী যা অনুধাবন করতে পারলাম তা হল, আমি এখন যা করতে পারি তার অনেক কিছুই আমার বাবা করতে পারে না কারন বাবার সে বয়সটা নেই । বাবা ইচ্ছা করলেই এখন আমার মত পাবলিক প্লেসে মুরসালাত কে নিয়ে গান বানাতে পারবে না, কিংবা বন্ধুদের নিয়ে বিচিত্র সব প্লেসে হাস্যকর সব ছবি তুলতে পারবে না, আরো অনেক কাজ আছে যা ভদ্রতার ট্যাগ ধরে রাখার জন্য বললাম না। অর্নবদার বর্তমান দর্শন অনুযায়ী জীবনটা উপভোগ করার জন্য ব্যাচেলর থাকাই বুদ্ধিমানের কাজ। ব্যাচেলর লাইফ আসলেই খারাপ না।


বন্ধু তাঞ্জীমের ফেবু টাইমলাইন থেকে সংগৃহীত...


Sort:  

Hi. I am a volunteer bot for @resteembot that upvoted you.
Your post was chosen at random, as part of the advertisment campaign for @resteembot.
@resteembot is meant to help minnows get noticed by re-steeming their posts


To use the bot, one must follow it for at least 3 hours, and then make a transaction where the memo is the url of the post.
If you want to learn more - read the introduction post of @resteembot.
If you want help spread the word - read the advertisment program post.


Steem ON!